জুমবাংলা ডেস্ক : গত ১৩ জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৩ জুলাই ‘গ্রস’ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এই দুই হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের রিজার্ভ কমেছে ১২ কোটি ডলার।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ার পরও বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বাড়ছে না, উল্টো কমছে। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে রিজার্ভ বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। তবে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবের রিজার্ভ। বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে রেমিট্যান্স। এ রেমিট্যান্স বাড়ায় ঈদের আগে রিজার্ভ বেড়ে ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। কিন্তু চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মে-জুন মেয়াদের ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। তবে ঈদের পরও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি জুলাই মাসের ২১ দিনেই ১৪২ কোটি ৬১ লাখ (১.৪৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
গত ১৩ জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৩ জুলাই ‘গ্রস’ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এই দুই হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের রিজার্ভ কমেছে ১২ কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়। গত মে মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ২৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কম সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
দীর্ঘদিন ধরে আইএমএফ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিপিএম৬ (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণ করে রিজার্ভের হিসাব করতে বাংলাদেশ সরকার তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরামর্শ দিয়ে আসছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সে বিষয়টি আমলে নেয়নি।
আমদানি দায় পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের ব্যালান্স অফ পেমেন্টে ঘাটতি দেখা দেয়। সেই ঘাটতি সামাল দিতে গত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণ পেতে সমঝোতা করে বাংলাদেশ। ঋণ সমঝোতার পর আন্তর্জাতিক এ সংস্থার পরামর্শ আসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের সেই শর্ত বা পরামর্শ মেনেই এখন রিজার্ভের দুই ধরনের তথ্যই প্রকাশ করছে।
২১ দিনেই ১৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
কোরবানির ঈদের পরও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন লক্ষ করা যাচ্ছে। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের ২১ দিনেই ১৪২ কোটি ৬১ লাখ (১.৪৩ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের জন্য এখন ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। সে হিসাবে এই তিন সপ্তাহে দিনে ১৫ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
প্রতিবারের মতো দুই ঈদের পর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সপ্রবাহে ধীরগতি লক্ষ করা যায়। কিন্তু এবার তার উল্টোটা দেখা যাচ্ছে। ২১ দিনে দেশে যে রেমিট্যান্স এসেছে, মাসের বাকি ১০ দিনে সেই হারে এলে জুনের মতো জুলাই মাসেও রেমিট্যান্সের অঙ্ক ২২০ কোটি (২.২ বিলিয়ন) ডলারে গিয়ে পৌঁছবে বলে হিসাব বলছে। ঈদের মাস জুনে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ (প্রায় ২.২০ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল, টাকার অঙ্কে যা ছিল ২৩ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ মাস জুনের রেমিট্যান্স ছিল একক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স, যা ছিল তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিট্যান্সপ্রবাহের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি জুলাই মাসের ২১ দিন (১ থেকে ২১ জুলাই) ১৪২ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ডলারের যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ১৪ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১৯ কোটি ডলার। আর ৯টি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি (২১.৬১ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার এসেছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।