মাকসুদুর রহমান : অপেক্ষার পালা প্রায় শেষ। ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় র্যাব ও পুলিশের সাড়ে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উত্তর ও দক্ষিণ থানার কাজই হচ্ছে সেতুর নিরাপত্তা রক্ষা। থানাগুলোতে সাধারণ জনগণ সহজে সেবা পাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের গুজব যেন ছড়াতে না পারে, সেজন্য সার্বক্ষণিক সাইবার মনিটরিং করা হচ্ছে। পদ্মার দুই পাড়ে র্যাব ও পুলিশের ৫ পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য ইউনিফর্মে মোতায়েন থাকবেন। সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও তৎপর থাকবেন।
পদ্মা সেতু ও এর আশাপাশে সার্বিক নিরাপত্তায় দুটি থানা উদ্বোধন করা হয়েছে। নৌপথে নিয়োজিত থাকবে নৌ পুলিশ। মাদারীপুর, শরিয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের চাহিদা মোতাবেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও সদস্য মোতায়েন করা হবে। কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশও। আকাশ পথে টহল দেবে র্যাবের এয়ার উইং।
এক প্রশ্নের জবাবে মো. কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে যেকোনো ধরনের নাশকতা, গুজব ও অপপ্রচার ঠেকাতে আমাদের সাইবার পুলিশ, সিটিটিসি, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা মনিটরিং করছেন। উদ্বোধনের পরও কয়েক দিন তা অব্যাহত থাকবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে বুধবার (২২ জুন) শরীয়তপুরে গেছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের হামলা বা নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত আছি আমরা। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে র্যাব বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা বা হামলা মোকাবিলায় সেতুর দুই প্রান্তেই কমান্ডো টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে র্যাবের এয়ার উইংয়ের হেলিকপ্টার। তারা আকাশ পথে টহল দেবে। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ও অপপ্রচার রোধে গ্রহণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ নজরদারির ব্যবস্থা। এজন্য র্যাবের চৌকস দল সার্বক্ষণিক মনিটরিং অব্যাহত রেখেছে।’
পুলিশ বলছে, একটি মহল নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কিছু ঘটিয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে। সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় শুধু পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরেই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশের প্রতিটি থানায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ পাঠিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, সমাবেশস্থল, টোল প্লাজা, নামফলক ও হেলিপ্যাড এলাকার নিরাপত্তায় টহল দেওয়া হবে। অনুষ্ঠান চলাকালে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, পেট্রোল, মোটরসাইকেল পেট্রোল, ফুট পেট্রোল, বোট পেট্রোল, অবজার্ভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। সেতুর দুই প্রান্ত, সমাবেশ স্থলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সেতুর দুই প্রান্তে র্যাবের মেডিক্যাল টিম থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করবে। র্যাব সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুম (হটলাইন নাম্বার: ০১৭৭৭৭২০০২৯) ও অনুষ্ঠান স্থলে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমের (হটলাইন নাম্বার: ০১৭৭৭৭২০০৪৯) মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে।
র্যাব আরও জানিয়েছে, পদ্মা সেতুর প্রবেশ স্থান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র্যাবের চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হবে। সূত্র : রাইজিংবিডি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।