ব্রাউজারের ইনকগনিটো মোড বা সিক্রেট মোডের সঙ্গে আমরা সবাই খুব ভালোভাবেই পরিচিত। এখনকার মডার্ন সব ডেক্সটপ ব্রাউজার এবং স্মার্টফোন ব্রাউজারেই ইনকগনিটো মোড থাকে। যখন ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্যে কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করি বা এমন কোনো সংবেদনশীল বিষয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করি, আমরা চাই সেটি যেন দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি দেখতে না পায়। আর সে উদ্দেশ্যেই ব্রাউজারের ইনকগনিটো মোড বা ইনকগনিটো ট্যাব ওপেন করি।
ইনকগনিটো মোড বা প্রাইভেট ব্রাউজিং হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যা এনাবল করে আপনি যদি ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেন। তাহলে আপনার ব্রাউজিং হিস্টরি, ক্যাশ, সেশন, কুকিজ ইত্যাদি ব্রাউজার সেভ করে রাখবে না। আপনি যখনই ব্রাউজিং শেষ করে ব্রাউজার থেকে বের হয়ে যাবেন তখনই তা অটোমেটিক রিমুভ হয়ে যাবে। এতে ব্যক্তিগত তথ্য লুকিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন যেভাবে
ইনকগনিটো মোড যেভাবে কাজ করে
যখন ব্রাউজারের ইনকগনিটো উইন্ডো বা ট্যাব ওপেন করা হয়, তখন আপনার ব্রাউজার একটি নতুন ব্রাউজিং সেশন তৈরি করে, যেখানে ব্রাউজারে আগে থেকে সেভ করা কোনো ব্রাউজিং ক্যাশ, হিস্টরি বা কোনো কুকিজ আলাদা করে রাখা হয়। আর এই নতুন সেশনে আপনি যা যা ব্রাউজ করেন, তা থেকে জেনারেট হওয়া ক্যাশ এবং কুকিজ অস্থায়ীভাবে এই নতুন ব্রাউজিং সেশনে সেভ করা হয়। আপনি যেই মুহূর্তে ইনকগনিটো মোড বা ইনকগনিটো ট্যাবটি ক্লোজ করে দেন, তখনই এই নতুন ব্রাউজিং সেশনটি শেষ হয়ে যায় এবং এই সেশনে জেনারেট হওয়া সব ক্যাশ, কুকিজ এবং হিস্টরি—সব কিছু ডিলিট করে দেওয়া হয়, যাতে এরপর অন্য কেউ এই ব্রাউজারটি ব্যবহার করলে তাঁর কাছে ইনকগনিটো মোডে ব্রাউজ করা কনটেন্টগুলোর কোনো ডাটার কোনো হদিস না থাকে।
ইনকগনিটো মোডে ইন্টারনেট ব্রাউজ করার সময় হয়তো খেয়াল করেছেন যে ইনকগনিটো ব্রাউজিং সেশন শুরু করার আগেই প্রায় সব ব্রাউজারে একটি ওয়ার্নিং মেসেজ দেওয়া হয়, যদিও ইনকগনিটো মোড আপনার মূল ব্রাউজিং সেশনের কোনো ক্যাশ বা কোনো কুকিজ বা কোনো ডাটা অ্যাকসেস করে না, তবে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার বা আপনার নেটওয়ার্ক প্রভাইডার, আপনার এমপ্লয়ার নেটওয়ার্ক অ্যাডমিন এবং আপনি ইনকগনিটো মোডে যে ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন, সেই ওয়েবসাইটটির সার্ভার চাইলেই আপনাকে ট্র্যাক করতে পারবে। অর্থাৎ ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করলেও আপনার কার্যক্রম এদের কাছ থেকে লুকায়িত থাকবে না।
এর কারণ হচ্ছে, ইনকগনিটো মোড শুধু সেই সব ব্রাউজিং ডাটা ট্র্যাক না করার নিশ্চয়তা দেয়, যেগুলো আপনার ডিভাইসে লোকালি স্টোর হচ্ছে। অর্থাৎ কোনো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় আপনার ব্রাউজিং অভ্যাস সম্পর্কে যেসব ডাটা আপনার নিজের ডিভাইসে স্টোর হচ্ছে, ইনকগনিটো মোড শুধু সেই ডাটাগুলোকে ট্র্যাক না করার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে।
কিন্তু ইনকগনিটো মোডে ব্রাউজ করার সময়ও আপনি আপনার ভিজিট করা ওয়েবসাইটগুলোর সার্ভারের কাছে যে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন বা সার্ভার থেকে যেসব রিকোয়েস্ট রিসিভ করছেন, এসব ট্র্যাফিক কিন্তু রাউট হচ্ছে আপনার আইএসপি কিংবা আপনার নেটওয়ার্ক প্রভাইডারের সার্ভার থেকেই। সাধারণভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজ করলে আপনার রিকোয়েস্টগুলো সার্ভারের কাছে যেভাবে যেত, ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করলেও আপনার রিকোয়েস্টগুলো সার্ভারের কাছে অবিকল সেভাবেই যাচ্ছে। সুতরাং ইনকগনিটো মোড বা সিক্রেট মোড ব্যবহারের ফলে এখানে বাড়তি কোনো ধরনের এনক্রিপশন বা বাড়তি কোনো নিরাপত্তা যোগ হয় না। ওয়েবসাইটের যেসব ফিচার ইনকগনিটো মোডে কাজ করতে পারে, যেমন—অ্যালাউ করা ব্রাউজার এক্সটেনশন, অ্যাডোবি ফ্ল্যাশ প্লেয়ার ইত্যাদি টুল আপনার ইনকগনিটো মোডে ব্রাউজ করা ডাটা অ্যাকসেস করতে পারে এবং ট্রেস করার ক্ষমতা রাখে। তাই সব সময় খেয়াল রাখবেন যে ইনকগনিটো মোডে কী কী ব্রাউজার এক্সটেনশন এবং ফিচার ইনেবল করে রেখেছেন। যদি প্রাইভেসি নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত হন, তাহলে অপ্রয়োজনীয় সব ফিচার এবং এক্সটেনশন ইনকগনিটো মোডে ডিস-এবল করে রাখতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।