আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে হেট স্পিচ বা ঘৃণামূলক বক্তব্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে, যা একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে। ভারতের অত্যন্ত পরিচিত “ইন্ডিয়া হেট ল্যাব” একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত এপ্রিলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মোট ৬৪টি হেট স্পিচ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহারাষ্ট্রে সর্বাধিক সংখক এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যা হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রে হেট স্পিচের ঘটনায় বাড়ছে সহিংসতার শঙ্কা
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে মহারাষ্ট্রে ১৭টি হেট স্পিচের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা শুরু হয়েছিল পহলগাম হামলার পর থেকে। মুসলিমদের উদ্দেশ্যে হিংসার এবং ঘৃণা ছড়ানোর একটি উদ্দেশ্য নিয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া, উত্তর প্রদেশে ১৩টি, উত্তরাখণ্ডে ৬টি এবং হরিয়ানায় ৬টি হেট স্পিচের ঘটনা ঘটেছে।
ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের মতে, এই গোষ্ঠীগুলি ধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরির জন্য হিংসার প্রস্তাব রাখছে। এর বক্তব্যে মুসলিমদের “সবুজ সাপ”, “কীড়ে”, এবং “পাগলা কুকুর” বলে অপমান করা হয়েছে। বক্তারা মুসলিমদের সেখানকার এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন এবং তাদের ওপর হিংসার আহ্বান জানিয়েছেন।
হেট স্পিচের প্রভাব: মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি
ইন্ডিয়া হেট ল্যাব গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, এই ধরনের হেট স্পিচের ভিডিও এবং বক্তব্য ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ এদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে অনলাইন এই ঘৃণা এবং অফলাইন সহিংসতার সঙ্গে যোগসূত্র তৈরির সম্ভাবনা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতি বিশেষত জম্মু ও কাশ্মীরে বসবাসরত মুসলিমদের জন্য আরো ঝুঁকিপূর্ণ। হরিয়ানায় মুসলিম ভেন্ডারদের ওপর হামলা, কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ওপর আক্রমণ এবং উত্তরাখণ্ডে মুসলিম বাইকারদের উপর নির্দয় নির্যাতনের মত ঘটনা সমাজে বিভেদ এবং সহিংসতাকে উসকে দিচ্ছে।
সরকার এবং সামাজিক মাধ্যমের সাড়া
এই প্রসঙ্গে ভারত সরকার এবং সামাজিক মাধ্যমগুলোকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের বিষয়গুলো তৎক্ষণাৎ ছড়িয়ে পড়ছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অথচ, ভারতে অসংখ্য মানুষের সামাজিক মাধ্যমের প্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলির ওপর বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন।
FAQs Section:
কতগুলো হেট স্পিচ ইভেন্ট সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছে?
ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে হেট স্পিচের সংখ্যা ৬৪।
কোন রাজ্যে সর্বাধিক হেট স্পিচের ঘটনা ঘটেছে?
মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি হেট স্পিচের ঘটনা ঘটেছে।
হেট স্পিচের সাথে মুসলিমদের কোন সম্পর্ক রয়েছে?
হেট স্পিচের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয় ও ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই ইভেন্টগুলো কীভাবে প্রচারিত হচ্ছে?
এই ইভেন্টগুলো সাধারণত সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।
কেন হেট স্পিচ একটি বিপজ্জনক প্রবণতা?
হেট স্পিচ সমাজে বিভেদ এবং সহিংসতা সৃষ্টি করে, যা সামাজিক স্থিতি নষ্ট করে।
চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী ইসরাতকে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা
ভারত সরকারের কি করণীয় রয়েছে এই বিষয়ে?
সরকারের উচিত তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেয়া এবং সামাজিক মাধ্যমের ওপর নজরদারি বাড়ানো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।