আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ১০৭ জন নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নারী। আজ মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের হাথরাস জেলায় ওই অনুষ্ঠানে ভক্তদের উদ্দেশে ধর্মীয় বক্তব্য দিচ্ছিলেন এক গুরু। ওই সময় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, হাথরসের মুঘলাগড়ি গ্রামে একটি সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল স্থানীয় উদ্যোগে। সেই সভায় হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। এক গুরুর সৎসঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কে এই গুরু? জানা গেছে, ওই গুরুর নাম নারায়ণ শঙ্কর হরি। প্রায় ১৮ বছর ধরে তিনি উত্তরপ্রদেশ পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তবে তিনি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরের চাকরি ছেড়ে ধর্মীয় গুরু হয়ে যান। এরপর তিনি ভক্তদের প্রবচন দিতে শুরু করেন।
আলিয়াগড় রেঞ্জের আইজি শলভ মাথুর জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে খুব ছোট জায়গায় এই সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল। অল্প জায়গায় বহু মানুষের ভিড়ে দমবন্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মনে করা হচ্ছে তাতেই হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল পুণ্যার্থীদের মধ্যে।
তবে কী ভাবে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল এবং এই পদপিষ্টের ঘটনা শুরু হল তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই সৎসঙ্গ ঘিরে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। বহু মানুষ একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন। হঠাৎই হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল। যেখানে এই সভা চলছিল, সেই রাস্তা সোমবার রাত থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার রাস্তা খুলে দেওয়ার পরই হুড়মুড়িয়ে লোকজন বেরোনোর চেষ্টা করেন। তখনই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মৃতদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। বেশ কয়েকটি শিশুরও মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।
আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় মানুষজনই হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছিলেন না। ফলে সময়মতো চিকিৎসাও করানো যায়নি আহতদের।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাটির খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি ইতিধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আয়োজকদের দিকে। কী ভাবে এত লোককে এক জায়গায় জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হল। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।