জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে অসংখ্য মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী (পাগল)। বিশেষ করে তেঁতুলিয়া উপজেলায় এসব মানসিক রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। নাম-ঠিকানা ও পরিচয়হীন এসব পাগলের শরীর থেকে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। তারা চলাফেরা করছে হাটবাজারের অলি-গলিতে। ভাষা, চেহারা ও দৈহিক গঠন দেখে অনেকেই তাদের ভারতীয় বলে দাবি করছেন।
Table of Contents
স্থানীয়দের সন্দেহ: বিএসএফ কি কৌশলে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে পাগল?
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কৌশলে এসব মানসিক রোগীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। পরিচয়হীন এসব মানসিক রোগীর মাধ্যমে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।
কেন তেঁতুলিয়া উপজেলায় এসব রোগী বেশি?
একেবারে সীমান্তঘেঁষা তেঁতুলিয়া উপজেলার তিনদিকেই ভারত। ফলে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া সহজ। সীমান্তঘেঁষা এই উপজেলায় রয়েছে দেশের একমাত্র চতুর্দশীয় স্থলবন্দর, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এই বন্দরের রাস্তায় এবং বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেশ কিছু মানসিক রোগী।
অস্বাভাবিক বেশভূষা ও আচরণে চিনে ফেলা যাচ্ছে
বাজারের দোকান অথবা রাস্তার পাশে বসে, দাঁড়িয়ে কিংবা ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। পরনে পুরোনো, ছেঁড়া ও ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত কাপড়। শরীরে ময়লার আস্তরণ। জটধরা উস্কোখুস্কো চুল। অধিকাংশই কথা বলে না, কেউ কেউ দুর্বোধ্য ভাষায় কথা বলছে। কেউ আবার হিন্দি বা ইংরেজিতে কথা বলে। স্থানীয় মানুষজনই তাদের খাবার সরবরাহ করছেন।
প্রায় সব হাটবাজারে একই চিত্র
এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে সীমান্তঘেঁষা প্রায় সব হাটবাজারে। স্থানীয়রা বলছেন, এসব অপরিচিত মানুষ ভারত থেকে আসছে। ভাষা ও চেহারা দেখে তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি নয় বলে মনে হচ্ছে। বিএসএফ কৌশলে এসব মানসিক রোগীকে বাংলাদেশে পুশইন করছে। এতে করে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ট্রাভেল-ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা
স্থলবন্দরের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা জানান, এখন পর্যন্ত অন্তত আট থেকে দশজন অপরিচিত মানসিক রোগীকে দেখা গেছে বাজারে বা রাস্তায়। তারা দু-একদিন এক জায়গায় থাকার পর কোথায় যেন হারিয়ে যায়। আবার নতুন কেউ আসে। হীপাড়া বাজার, তীরনইহাট বাজার, শালবাহান হাট, তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরসহ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এসব মানসিক রোগী বেশি দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে
স্থলবন্দরের ট্রাভেল ট্যুরিজম ব্যবসায়ী মামুন হোসেন বলেন, নানা বয়সী এসব মানসিক রোগী পরিচয়হীন। তাদের বেশভূষা দেখে ভারতীয় বলেই মনে হয়। বিষয়টি অমানবিক। স্থানীয় লোকজনই তাদের খাবার দেয়। দোকানের বারান্দায় বা রাস্তায় তারা রাত কাটায়। তবে এতে আমরা আতঙ্কে আছি, কারণ এদের দ্বারা নানা ধরনের ভয়ংকর রোগজীবাণু ছড়াতে পারে।
পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি
স্থানীয় পরিবেশকর্মীরাও বলছেন এসব মানসিক রোগীর অধিকাংশই ভারতীয় এবং তারা জীবাণুবাহী হতে পারে, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় জেলার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের বলেন, নাম-পরিচয়হীন মানসিক রোগীরা জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি অমানবিক। ভাষা, চেহারা ও আচরণ দেখে বোঝা যায়, তারা ভারতীয়। তারা যেই দেশেরই হোক, তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। এতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।