জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিষেবা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আলেমদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করতে হবে। তাদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি হলে উভয় দেশেই সুসন্তান তৈরি হবে। ভারতেও হবে বাংলাদেশেও হবে। কারণ প্রকৃত আলেম কোনো দিন দেশদ্রোহী হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্মের নামে যারা সহিংসতা ছড়ায় বা যারা মানব বোমায় নিজেকে খতম করে, অন্য সাধারণ মানুষের প্রতি অবিচার করে, দেওবন্দের ভাষায় এসব কাজ ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।
সোমবার দুপুরে ঢাকার উত্তরায় আলমি শূরার (মাওলানা যোবায়েরপন্থি) বিশ্ব ইজতেমা পরবর্তী সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় পশ্চিম বঙ্গের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিসেবা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিব হাসান, তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি নাদিম হাসান, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, আব্দুল কুদ্দুস, বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, তাফাজ্জল হক আজিজ, নাজমুল হোসেন, লোকমান মাজহারী, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, জয়নাল আবেদীন, মুফতি মাসউদুল করীম, মতিউর রহমান গাজীপুরী, জাবের কাসেমী, মুফতি জহির ইবনে মুসলিম প্রমুখ।
মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ আরও বলেন, আমার জানামতে ইজতেমা ময়দানের জায়গাটুকু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়ে গেছেন। তিনি জায়গাটি দিয়ে একটি সদকায়ে জারিয়ার কাজ করে গেছেন। আমরা চাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার স্বপ্ন পূরণে এ দেশের আলেমদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। ইজতেমা ময়দানের দলিল, রেকর্ড, ম্যাপ হয়ে গেলে ওই ময়দানটা হাত ছাড়া হবে না। ময়দানের পাকাপোক্ত কাগজপত্র, সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেলে জায়গাটা কেউ দখল করতে পারবে না।
তিনি বলেন, তাবলিগ জামাতের যে শৃঙ্খলা, এটা সারা পৃথিবীর কাছে একটা মডেল। কেউ স্বীকার করবেন, কেউ করবেন না সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। ইসলাম ধর্মের শিক্ষা ও বুজর্গদের দ্বীনের নীতি আদর্শ হলো তাদের পাথেয়।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখানকার সরকারে যারা আছেন ইজতেমার ব্যাপারে তারা খুবই আন্তরিক। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হলো এটাও উল্লেখযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, আমি একজন ভারতীয় নাগরিক। আমরা ভারতবর্ষে সম্মিলিত জাতীয়তাবাদের পক্ষে। ভারতবর্ষ একটি সেক্যুলার স্টেট, ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ভারতের সংবিধান পৃথিবীর বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সব জায়গায়ই দুর্বৃত্তপরায়ন মানুষ থাকে, তারা গোলমাল পাকাবার চেষ্টা করে। এদের সংখ্যা খুবই কম। সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি।
তিনি বলেন, সম্মিলিত জাতীয়তাবাদের কারণে ভারতবর্ষ প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের দেশ। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১০ কোটি মানুষ বসবাস করেন।
তিনি আরও বলেন, ইজতেমার খিমায় (তাঁবুতে) বাংলাদেশের অনেক ভাই আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ভূয়সী প্রশংসা করলেন; যা আমি ভাবিওনি, কেউ কিছু বলবে। কিন্তু আমি অনুভব করেছি। মমতা ব্যানার্জী অত্যন্ত কর্মঠ এবং খুব দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী।
সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশে আসিনি, জামাতে এসেছি। আলেম ভাইদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমরা চাইব দুই দেশের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হোক। আমরা অনুভব করেছি বাংলাদেশের খাবার, পোশাক ও পরিবেশ পশ্চিম বাংলার মতোই। ভাগ্যের পরিহাসে আমরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছি।
তিনি আরও বলেন, তাবলীগ জামাতের খাতিরে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ যেমন পরিচিত, তেমনি সরকারও পরিচিত। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানাব- ইজতেমার জায়গাটা দখলমুক্ত করে তাবলিগওয়ালাদের কাছে দেশের নিয়ম অনুযায়ী হস্তান্তর করা হোক। তিনি তার বাবার দেওয়া ইজতেমা ময়দানের অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।