ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড আপাতত কার্যকর করছে না ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ। এক ইয়েমেনি ব্যবসায়ীকে ২০১৭ সালে হত্যার দায়ে নিমিশা প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় দেশটির আদালত।
দুটি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এবং দেশটির আরও দুটি জাতীয় দৈনিক এই খবর দিয়েছে। বুধবার তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা ছিল।
সূত্র উদ্ধৃত করে ওই দুটি সংবাদ সংস্থা– পিটিআই এবং এএনআই জানাচ্ছে, ভারত সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টার পরেই ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ মিজ প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দিন আপাতত পিছিয়ে দিয়েছে।
সরকারি সূত্রগুলি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে, শাস্তি পিছিয়ে যাওয়ার ফলে নিমিশা প্রিয়ার পরিবার হাতে আরও কিছুটা সময় পেল যাতে খুন হওয়া ইয়েমেনি ব্যবসায়ীর পরিবারের সঙ্গে তারা এমন একটি সমাধানের পৌঁছতে পারে, যা দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।
তালাল আব্দো মাহদি নামে নিহত ওই ব্যক্তি নিমিশা প্রিয়ার ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। ইয়েমেনে কোনও ব্যবসা করতে হলে সে দেশের কোনও নাগরিককে সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক, তাই ওই ব্যক্তির সঙ্গে মিলে নিমিশা প্রিয়া তার ক্লিনিক চালু করেছিলেন।
২০১৭ সালে তালাল আব্দো মাহদির টুকরো টুকরো করা দেহ একটি পানির ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপরই সেই হত্যার অভিযোগে নিমিশা প্রিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সে দেশের আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
ভারতীয় কর্মকর্তারা ইয়েমেনের জেল কর্তৃপক্ষ এবং প্রসিকিউটরের দফতরের সঙ্গে নিয়মিত কূটনৈতিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
নিমিশাকে বাঁচানোর একমাত্র রাস্তা হলো যদি ওই নিহত ব্যক্তির পরিবার ‘দিয়াহ’ বা ‘ব্লাড মানি’-র বিনিময়ে ওই নার্সের প্রাণভিক্ষা দিতে রাজি হয়!
নিমিশা প্রিয়ার আত্মীয়স্বজন ও সমর্থকরা ইতোমধ্যেই মাহদির পরিবারকে ‘ব্লাড মানি’ দিতে ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছেন এবং পরিবারকে সেটা ‘অফার’ও করা হয়েছে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলায় অবশ্য সোমবারই ভারত সরকারের আইনজীবী জানিয়েছিলেন যে, নিহতের পরিবারের কাছ থেকে এখনও কোনও আশার আলো পাওয়া যায়নি।
সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, নিমিশা প্রিয়াকে বাঁচানোর চেষ্টায় সরকার সব রকম চেষ্টা চালালেও “ভারত এক্ষেত্রে আসলে কতদূর কী করতে পারে, তার একটা সীমা আছে– আর আমরা সেই সীমায় পৌঁছে গেছি!”
অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি সোমবার কার্যত মেনেই নিয়েছিলেন, দক্ষিণ ভারতের কেরালার ওই নার্সের জীবন আদৌ বাঁচানো যাবে কি না, সেটা এখন ভারত সরকারের ওপর আর নির্ভর করছে না।
“যত রকম চ্যানেলে চেষ্টা চালানো যায় আমরা তার সবই চেষ্টা করেছি। ইয়েমেনের একজন ‘প্রভাবশালী শেখে’র মাধ্যমেও চেষ্টা চালানো হয়েছে, আরও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি”, শীর্ষ আদালতকে সোমবার জানিয়েছিলেন তিনি।
এরপরেই মঙ্গলবার জানা গেল যে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দিন আপাতত পিছিয়ে দিয়েছে।i
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।