জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা জেলার বাসিন্দা আলমগীর খান। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে পায়ে হেঁটে রওনা হন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।
বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ১০ ফেব্রুয়ারি। এরপর ঢাকায় এসে পৌঁছান আজ সোমবার। ঢাকায় এসে সরাসরি চলে আসেন অমর একুশে বইমেলায়।
আগামীকাল ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহিদ মিনারে পৌঁছে শেষ করবেন এ পদযাত্রা। তার এ পদযাত্রার স্লোগান ছিল- ‘থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বিশ্ব, বাড়ি বাড়ি রক্তদাতা’।
বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য কেন এই ফেব্রুয়ারি মাসকে বেছে নিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে আলমগীর বলেন, আমি ভারতের নাগরিক হলেও আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা।
বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন সেসব ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে শহিদ মিনারে আসার ইচ্ছা ছিল, ইচ্ছা ছিল অমর একুশে বইমেলায় আসার। এ জন্য এই মাসকেই বেছে নেই আমি।
পায়ে হেঁটে এতটা পথ আসতে গিয়ে কেমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পথে পথে বিচিত্র এক অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার।
নানা জনপদ, নানা পথ ঘুরে নানা রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। ওপার বাংলার সৌন্দর্য এতদিন দেখেছি। এবার পদব্রজে ভ্রমণের সুযোগে এপার বাংলার সৌন্দর্যটাও উপভোগ করার সুযোগ হলো।
বাংলাদেশের মানুষের আতিথিয়েতায় বিমুগ্ধ হয়ে আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকে কখনোই আমার মনে হয়নি, আমি কোনো ভিনদেশে ঘুরতে এসেছি। মনে হচ্ছে আমি যেন আমার চিরচেনা ভূমিতেই ঘুরে বেড়াচ্ছি।
বাংলাদেশের মানুষ নাকি অতিথিপরায়ণ এমন কথা অনেক শুনেছি, কিন্তু যতটা শুনেছি তার থেকেও অনেক বেশি অতিথিপরায়ণ এদেশের মানুষ। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে গেছি। এককথায় বলবো- বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় মাতৃভূমি।
বাংলা ভাষা দুই বাংলার মানুষকে এক সুতোয় বাঁধতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, জাতিসত্তা সবই এক। কিন্তু সীমান্তে কাঁটাতারের ঐ
বেড়াটার জন্য কেবল এদেশে আসতে আমাদের পাসপোর্ট-ভিসা করতে হয়। সবকিছু এক রকম হয়েও আমরা দুই দেশে বিভক্ত। কিন্তু তাতে কী? বাংলা ভাষা আমাদের সীমান্তের কাঁটাতার ভেদ করে একই সুতোয় গেঁথেছে।
আলমগীর খান জড়িত রয়েছেন নানা সামাজিক কার্যক্রমে। নিজ এলাকা পশ্চিমবঙ্গের মালদাতে রক্তদানসহ নানা রকম মানবহিতৈষী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তিনি।
সামাজিক সংগঠন ‘নতুম আলো’ ও ‘মালদা ব্লাড আর্মি’ এর প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ভবিষ্যতে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত পৃথিবী দেখার প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করে যেতে চান আলমগীর খান নামক এই যুবক।
আলমগীর এর আগে ২০২২ সালে মালদা থেকে দিল্লী ১৪৮০ কিলোমিটার এবং মালদা থেকে কলকাতা ৩৩০ কিলোমিটার পথ পদব্রজে ভ্রমণ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।