জুমবাংলা ডেস্ক : শুধু তিস্তাই নয়, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে ধরলা নদীর পানিও প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে ভারত। গবেষকদের মতে, এতে উত্তরের ৫০টির বেশি শাখা ও উপনদী পানিশূন্য হয়ে পড়বে। এটি সরাসরি কৃষি ও জীববৈচিত্র্যে প্রভাব ফেলবে।
আর অধিকার কর্মীরা বলছেন, বাংলাদেশে উত্তরের বিশাল জনগোষ্ঠীকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষায় মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। একই সঙ্গে পানির অধিকার নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক তৎপরতাও বাড়াতে হবে।
২০১১ সালে ভারত-বাংলাদেশ অববাহিকাভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা এগ্রিমেন্টের কোন ধারাই মানছে না উজানের দেশ ভারত। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তিও আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৪ সাল থেকে তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করছে দেশটি।
একদিকে পানির ক্ষেত্রে ভারতের আগ্রাসী নীতি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে উজানে খাল খনন ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু তিস্তাই নয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ধরলার পানিও সরানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
এক নদী গবেষকের মতে, তিস্তা ও ধরলার পানি প্রত্যাহার করা হলে উত্তরের অন্তত অর্ধশতাধিক নদী পানিশূন্য হয়ে পড়বে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর।
রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমরা যে তিস্তা নিয়ে কথা বলছি, এখানেই থেমে থাকলে হবে না। ধরলার পানিও প্রত্যাহার করছে, এ বিষয়েও কথা বলতে হবে। এতে ধরলা ও তিস্তার মধ্যবর্তী আরও অনেক নদী ক্ষতিগ্রস্ত হবে; আর এ দায় ভারত সরকারকে নিতে হবে।’
বর্ষায় গজলডোবার সব কপাট খুলে দেয়ায় মৌসুমি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উত্তরের বিস্তীর্ণ জনপদ ভাঙছে। বাড়ছে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা। প্রতিবছর তিস্তার ভাঙনে অন্তত ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। আর তিস্তা সংস্কার না করায় বর্ষার পানির মাত্র ৮ শতাংশ ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘৪টি কালভার্ট ছিল, এগুলো বন্ধ করায় আমাদের বাড়িঘর ভেসে যাচ্ছে, পানিতে ভেসে যাচ্ছে ফসলি জমি ভেসে গেছে। আমাদের গাছপালাও সব শেষ; থাকার কোনও জায়গা নেই।’
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে শাখা-প্রশাখাসহ উপ-নদীগুলো সচল হবে। আর বর্ষার পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা সম্ভব হবে।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত ও চীন সফরকে ঘিরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে যে ভূরাজনৈতিক সমীকরণ চলছে, সেই প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে হলেও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি বলছেন সংশ্লিষ্টরা ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।