বিনোদন ডেস্ক : কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইন্দ্রানী হালদার। চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন ১৯৯০ সালে। বহু দশর্কপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন, হয়েছেন প্রশংসিত। বর্তমানে তিনি ছোটপর্দার সিরিয়ালের নিয়মিত এবং পরিচিত মুখ। এখানেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন অভিনেত্রী।
কিন্তু জানেন কি, অধিক খ্যাতির আশায় বাঙালি ইন্দ্রানীও একসময় গিয়েছিলেন বলিউডের হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করতে। সেখানে কাস্টিং কাউচের শিকার হয়েছিলেন ছোটপর্দার ‘শ্রীময়ী’। একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে জীবনের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতাই শেয়ার করেন অভিনেত্রী।
বর্তমানে কাস্টিং কাউট, মি টু এই শব্দগুলোর সঙ্গে সবাই পরিচিত। ২০১৮ সাল থেকে সারা বিশ্ব জুড়ে শুরু হয় মিটু মুভমেন্ট। তারই অংশ হিসেবে ইন্দ্রানী জানান, প্রায় তিন দশক আগে এক প্রযোজকের কুনজর পড়েছিল তার উপর। তখন তার বয়স ২০ বছর। ভাগ্যের জোরে সে যাত্রায় বেঁচে যান তিনি।
‘উন্মেষ’ নামে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে ইন্দ্রানী বলেন, ‘তখন আমার ২০ বছর। মুম্বাই গিয়েছিলাম একটা ছবি করতে। একদম জীবনের প্রথমদিকের ছবি। সেই সময় আমি এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই।’
অভিনেত্রী জানান, তাকে সকালের ফ্লাইটে মুম্বাইয়ে ডাকা হয়। অভিনেত্রীর বাবার টিকিট কাটা হয় বিকালের। কোনো দামি হোটেলে না রেখে লিঙ্কিং রোডের এক সাধারণ হোটেলের রুম দেওয়া হয়েছিল তাকে। শুরুতেই খটকা লাগে।
এরপর প্রযোজক আচমকা ফোন করে জানান, তিনি দেখা করতে আসবেন। ঘাবড়ে গিয়েছিলেন অল্পবয়সি ইন্দ্রানী। রুমে এসে সেই প্রযোজক সুযোগ বুঝে কুপ্রস্তাব দেন অভিনেত্রীকে। রীতিমত শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন।
ইন্দ্রানী জানান, ‘আমি বারবার বলেছিলাম, এটা করবেন না প্লিজ। আমি এভাবে কখনো কাজ পাইনি, পেতেও চাই না।’ প্রযোজক পাল্টা বলেন, ‘তুম বাঙালি লাড়কি, তুমকো হাম বাড়া হিরোইন বানাগেয়া, বাড়া বাড়া হিরোইন হামারে কদমোমে রেহতা হ্যায়।’
অর্থাৎ, তুমি বাঙালি হিরোইন,তোমাকে আমি অনেক বড় অভিনেত্রী তৈরি করব বলিউডের, অনেক নামিদামি হিরোইনরা আমার পায়ের তলায় থাকে।’
দৃঢ় কণ্ঠে সে সময় নায়িকা নাকি বলেন, ‘হতে পারে বড় বড় হিরোইন আপনার পায়ের তলায়। কিন্তু আমি এভাবে কাজ করিনি, আমাকে কলকাতা থেকে ডেকে এনে কাজ দিয়েছেন। কোনো সমঝোতা বা কম্প্রোমাইজ আমি করব না।’
এরপর মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকতে থাকেন ইন্দ্রানী। বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা, আজ কি আমি ধর্ষণের শিকার হবো!’ প্রযোজক তখন নিজের জামাকাপড় খুলতে শুরু করেছেন, ওমনি তার ফোন বেজে উঠে। ফোনটি করেছিলেন প্রযোজকের স্ত্রী। ইশারায় ইন্দ্রানীকে চুপ থাকতে বলছিলেন প্রযোজক।
এই ফাঁকে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেন ইন্দ্রানী। জোরে জোরে কাশতে শুরু করেন। কাশির আওয়াজ ফোনের ওপারে পৌঁছেছিল। স্ত্রীকে নিজের সঠিক অবস্থান জানাতে একপ্রকার বাধ্যই হন প্রযোজক। এরপর হোটেল রুম থেকে চলে যান প্রযোজক, শুধু বলে যান- ‘তুমহারা কুছ নেহি হোগা, তুম বেকার হো একদম।’
ইন্দ্রানী জানান, ‘সেদিন উনি আমার কনফিডেন্সটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমি কোনোদিন কম্প্রোমাইজ করে হিরোইন হতে ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি।’
এও বলেন, ‘ওই প্রযোজকের নামটা নিলাম না। কারণ উনি আর বেঁচে নেই। তবে পরবর্তীতে যখনই ওনার মুখোমুখি হয়েছি, উনি কোনোদিন চোখ তুলে আমার দিকে তাকাতে পারেননি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।