জুমবাংলা ডেস্ক : উপন্যাস থেকে নির্মিত ভারতীয় ওয়েব সিরিজ ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে দুই বাংলার দর্শকদের মাঝে। তবে এবার বাস্তবেই দেখা মিলেছে ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। উত্তরের জেলা পাবনায় গত ১৯ মে চালু হয়েছে হোটেলটি। আর চালুর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই হৈচৈ ফেলে দিয়েছে ভোজনপ্রিয় মানুষের মাঝে।
প্রতিদিনই হোটেলটি দেখতে ও খাবারের স্বাদ নিতে সেখানে ছুটছে নানা বয়সী অসংখ্য নারী-পুরুষ। ঘরোয়া পরিবেশে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার পরিবেশন এবং খাবারের মান নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে তারা।
পাবনা সদর উপজেলার জালালপুর নামক স্থানে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। হোটেলে প্রবেশমুখেই রয়েছে নামের সাইনবোর্ড, যেখানে রয়েছে সকালের নাশতা, দুপুরের খাবারের মেন্যু এবং মূল্যতালিকা।
উদ্যোক্তা জানান, নতুন প্রজন্মের মাঝে পুরনো দিনের খাবারের স্বাদরে সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চালু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল এই ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। ঘরোয়া পরিবেশে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরে নারীদের খাবার পরিবেশনে রয়েছে ভিন্নতা। কলাপাতায় খাবার পরিবেশনে বাঙালিয়ানার স্বাদ মিলছে যেখানে।
ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের নাম শুনে একনজর দেখতে ও খাবারের স্বাদ নিতে প্রতিদিনই ভিড় করছে নানা বয়সী অসংখ্য নারী-পুরুষ। সাশ্রয়ী মূল্যে হারিয়ে যাওয়া নানা পদের খাবারে মুগ্ধ ভোজনরসিকরা।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহিন মুনজারিন ও তানজিলা রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ এবং দামে অন্যান্য জায়গার চেয়ে তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় আমরা প্রায়ই খেতে যাই এখানে। খাবারের মানও ভালো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা জহুরুল হক প্রিন্স বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই ফেসবুকে ও সবার মুখে ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের নাম শুনে খেতে আসলাম।
খাবার পরিবেশন, পরিবেশ, খাবারের মান―সব কিছুই ভালো লেগেছে। ঘরোয়া পরিবেশে বাঙালিয়ানার স্বাদে তৃপ্তি পেলাম।’
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলী বলেন, “ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখছিলাম। ভাবছিলাম ওয়েব সিরিজ ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ পাবনায় কী করে এলো! আমার বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পেরে খেতে এলাম। সব কিছু মিলিয়ে ভালো লেগেছে। এটি পাবনার জন্য চমৎকার উদ্যোগ।”
হোটেলটির উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী সোহানী হোসেন জানান, উপন্যাস ও ভারতীয় ওয়েব সিরিজ দেখে সেখান থেকে ইন্দুবালা ভাতের হোটেল প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ হয়েছি। পুরনো দিনের হারিয়ে যাওয়া খাবার, যেমন―নারকেল দিয়ে কচু বাটা, কুমড়োর ছককা, সোনামুগের ডাল, আম দিয়ে পাবদা মাছের ঝোল, কচু ঘণ্ট, চিংড়ি ভর্তা, আম দিয়ে ডালসহ হরেক রকম খাবার নিজে রান্না করে খেয়ে দেখলাম ভালোই লাগছে। ভাবলাম ভোক্তাদেরও ভালো লাগবে। এখন মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।’
সোহানী হোসেন বলেন, ‘এখনকার ছেলেমেয়েরা বার্গার, পিৎজাসহ অন্যান্য খাবারে বুঁদ হয়ে আছে। সে জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বাঙালি খাবারের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচয় করিয়ে দিতে চাচ্ছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েরা হোটেলে থাকে, তাদের বাজেট কম থাকে; তারাও এখানে কম দামে ঘরোয়া পরিবেশে সুস্বাদু খাবার খেতে পারছে।’ ইতিমধ্যে পাবনার এই ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের নাম ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। বিভিন্ন জেলা থেকে ফোন করে দেখতে আসার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন অনেকেই।
রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবে উল্লুর এই ওয়েব সিরিজ, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না
সম্প্রতি দর্শকদের মন কেড়েছে কল্লোল লাহিড়ী রচিত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ নামের একটি ভারতীয় ওয়েব সিরিজ। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে একজন নারীর জীবনসংগ্রামের পাশাপাশি পুরনো দিনের অনেক সুস্বাদু বাঙালি খাবারের নাম। যার নাম জানে না এ প্রজন্মের অনেকেই। আবার সেসব খাবারও সচরাচর এখন আর দেখা যায় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।