বাজেটের মধ্যে প্রিমিয়াম ফিল দেওয়া স্মার্টফোন খুঁজছেন? হঠাৎ করে চোখে পড়ল বন্ধুর নতুন ফোনের বিশাল ডিসপ্লে আর উজ্জ্বল রঙে ভরা ছবি। জিজ্ঞাসা করতেই জানলেন, এটি ইনফিনিক্সের নতুন স্মার্ট ১০ প্লাস। দাম শুনে অবাক! এত কম দামে এমন ডিসপ্লে বা ব্যাটারি পাওয়া যাবে? বাংলাদেশ ও ভারতের লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের কাছে বাজেট সেগমেন্টে আলোচিত নাম এখন Infinix Smart 10 Plus। ১৩,৯৯৯ টাকা থেকে ১৬,৯৯৯ টাকার মধ্যে পাওয়া এই ডিভাইসটি কী দিয়ে ভরপুর? দামের তুলনায় পারফরম্যান্স কেমন? প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে কতটা এগিয়ে? চলুন, ইনফিনিক্স স্মার্ট ১০ প্লাসের দাম, স্পেসিফিকেশন, এবং বাস্তব ব্যবহারের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিস্তারিত জানা যাক।
Infinix Smart 10 Plus বাংলাদেশে দাম ও বাজার বিশ্লেষণ
বাংলাদেশে Infinix Smart 10 Plus-এর দাম নির্ভর করে স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের উপর। আনুষ্ঠানিকভাবে, ডিভাইসটি এখানে নিম্নলিখিত দামে পাওয়া যাচ্ছে:
- ৪জিবি র্যাম + ৬৪জিবি স্টোরেজ: ১৩,৯৯৯ টাকা (প্রস্তাবিত খুচরা মূল্য)
- ৪জিবি র্যাম + ১২৮জিবি স্টোরেজ: ১৫,৯৯৯ টাকা (প্রস্তাবিত খুচরা মূল্য)
তবে, বাজারের গতিশীলতা, দোকানভেদে অফার, এবং অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের ডিসকাউন্টের কারণে দাম কিছুটা কমবেশি হতে পারে। গত মাসের (জুন ২০২৪) তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষস্থানীয় অনলাইন রিটেইলার যেমন দারাজ, প্রাইসবিডি, এবং পিকাবু-তে ডিভাইসটি ১৩,৫০০ টাকা থেকে ১৪,৮০০ টাকা (৬৪জিবি মডেল) এবং ১৫,২০০ টাকা থেকে ১৬,২০০ টাকা (১২৮জিবি মডেল) এর মধ্যে দেখা গেছে। গ্রে মার্কেট বা আনঅফিশিয়াল চ্যানেলে দাম আরও কিছুটা কম হতে পারে (প্রায় ৫০০-১০০০ টাকা), কিন্তু এখানে ওয়ারেন্টি, গ্যারান্টি, এবং জালিয়াতির ঝুঁকি থাকে।
বাংলাদেশের বাজারে এই দাম গঠনে প্রভাব ফেলেছে বেশ কিছু ফ্যাক্টর:
- আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট: বাংলাদেশে স্মার্টফোন আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ক, কর, এবং ভ্যাট দামের একটি বড় অংশ নির্ধারণ করে। সরকারি নীতিমালা জানতে বাংলাদেশ সরকারের অফিসিয়াল পোর্টালে www.bangladesh.gov.bd ভিজিট করুন।
- ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল: ইনফিনিক্সের নিজস্ব ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক এবং অথরাইজড পার্টনারদের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়, যা দামের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- প্রতিযোগিতামূলক চাপ: এই সেক্টরে রিয়েলমি, শাওমি (রেডমি), টেকনো, এবং স্যামসাংয়ের তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে ইনফিনিক্সকে দাম আকর্ষণীয় রাখতে বাধ্য হয়।
- মুদ্রাস্ফীতি: সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব সরাসরি ইলেকট্রনিকস পণ্যের দামেও পড়েছে।
বিশেষজ্ঞের মতামত: প্রযুক্তি বিশ্লেষক আরিফুল ইসলাম বলেন, “১৫,০০০ টাকার নিচে ফুল-ভিউ ডিসপ্লে, ৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারি এবং ডিসেন্ট ক্যামেরা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইনফিনিক্স স্মার্ট ১০ প্লাস একটি দুর্দান্ত প্যাকেজ। বাংলাদেশের মতো বাজারে, যেখানে ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং বড় স্ক্রিন অগ্রাধিকার পায়, এই ফোনটি সঠিক জায়গায় আঘাত করেছে। তবে, পারফরম্যান্সে হালকা কম্প্রোমাইজ থাকতে পারে, যা এই প্রাইস পয়েন্টে স্বাভাবিক।”
বাংলাদেশে ফোনটির সহজলভ্যতা বেশ ভালো। আনুষ্ঠানিক ইনফিনিক্স স্টোর, বড় ইলেকট্রনিক্স শপ (গ্যাজেট গ্যালারি, স্ট্যাফ ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি), এবং উল্লিখিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে এটি সহজেই পাওয়া যায়।
Infinix Smart 10 Plus ভারতে দাম
ভারতে Infinix Smart 10 Plus আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছিল ৯,৯৯৯ ভারতীয় রুপি (৪জিবি র্যাম + ৬৪জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের জন্য) মূল্য ট্যাগে। বর্তমানে (জুলাই ২০২৪), ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন ইন্ডিয়া এবং রিলায়েন্স ডিজিটালের মতো প্রধান ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে দাম দেখা যাচ্ছে:
- ফ্লিপকার্ট: ৯,৪৯৯ – ৯,৯৯৯ রুপি (বিভিন্ন ব্যাংক অফার ও এক্সচেঞ্জ অফারের সাথে)
- অ্যামাজন ইন্ডিয়া: ৯,২৯৯ – ৯,৭৯৯ রুপি (প্রাইম ডিল ও কুপন প্রযোজ্য)
- অফলাইন স্টোর: আনুমানিক ৯,৫০০ – ১০,৫০০ রুপি (রিজিওন ও ডিলার ভেদে)
বাংলাদেশের দামের সাথে তুলনা করলে (বিনিময় হার আনুমানিক ১ ভারতীয় রুপি = ১.৩৫ বাংলাদেশি টাকা), ৯,৯৯৯ রুপি প্রায় ১৩,৪৯৮ বাংলাদেশি টাকার সমান। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক দাম ১৩,৯৯৯ টাকা হওয়ার পেছনে আমদানি শুল্ক, স্থানীয় কর এবং অপারেটিং খরচ দায়ী।
গ্লোবাল মার্কেটে Infinix Smart 10 Plus দাম
ইনফিনিক্স স্মার্ট ১০ প্লাস মূলত এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের নির্বাচিত বাজারে পাওয়া যায়। কিছু গ্লোবাল দাম (৪/৬৪জিবি ভ্যারিয়েন্ট):
- পাকিস্তান: আনুমানিক ৩০,০০০ পাকিস্তানি রুপি (প্রায় ১০,০০০ বাংলাদেশি টাকা)
- নাইজেরিয়া: আনুমানিক ১,২৫,০০০ – ১,৪০,০০০ নাইজেরিয়ান নায়রা (প্রায় ১২,৫০০ – ১৪,০০০ বাংলাদেশি টাকা)
- মিশর: আনুমানিক ৫,০০০ – ৫,৫০০ মিশরীয় পাউন্ড (প্রায় ১৪,০০০ – ১৫,৪০০ বাংলাদেশি টাকা)
- ইন্দোনেশিয়া: আনুমানিক ১,৯৯৯,০০০ – ২,১৯৯,০০০ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়াহ (প্রায় ১২,০০০ – ১৩,২০০ বাংলাদেশি টাকা)
বাংলাদেশ ও ভারতের দাম গ্লোবাল গড়ের সাথে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ, স্থানীয় কর ও শুল্ক কাঠামোর পার্থক্যের কারণে হেরফের হয়। মূল লঞ্চের পর থেকে দাম স্থিতিশীল, যদিও ঈদ, ডুয়ালি বা ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলের সময় উল্লেখযোগ্য ডিসকাউন্ট (৫০০-১০০০ টাকা/রুপি) পাওয়া যায়।
Infinix Smart 10 Plus ফুল স্পেসিফিকেশন ও ফিচার বিশ্লেষণ
এই প্রাইস পয়েন্টে স্মার্ট ১০ প্লাস যা অফার করে তা বিস্ময়কর:
ডিসপ্লে ও ডিজাইন:
- ৬.৮২-ইঞ্চ HD+ IPS LCD পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে: বিশাল স্ক্রিন ইমারসিভ মুভি ও গেমিং অভিজ্ঞতা দেয়। ৯০Hz রিফ্রেশ রেট স্ক্রোলিংকে মসৃণ করে তোলে, যা এই দামে বিরল।
- ডিজাইন: পলিকার্বোনেট বিল্ড (প্লাস্টিক) কিন্তু ফিনিশ ভালো। স্টারলাইট ব্ল্যাক, মিডনাইট ব্ল্যাক, পিসেফুল ব্লু, ফরেস্ট গ্রিন কালার অপশন। পিছনে ইউনিক্যাম ডিজাইন (বড় ক্যামেরা মডিউল) সহ ম্যাট ফিনিশ।
পারফরম্যান্স:
- প্রসেসর: ইউনিসক টি৬১০ (১২nm প্রসেস, অক্টা-কোর: 2×1.8 GHz Cortex-A75 & 6×1.8 GHz Cortex-A55)। এন্ট্রি-লেভেল পারফরম্যান্স, দৈনন্দিন কাজ (সোশ্যাল মিডিয়া, ব্রাউজিং, লাইট গেমিং) মসৃণভাবে চালাবে।
- র্যাম ও স্টোরেজ: ৪জিবি LPDDR4X র্যাম (ভার্চুয়াল র্যাম সাপোর্টে ৭জিবি পর্যন্ত) + ৬৪জিবি/১২৮জিবি eMMC 5.1 স্টোরেজ। মাইক্রোএসডি কার্ড সাপোর্টে স্টোরেজ ২৫৬জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যায়।
ব্যাটারি ও চার্জিং:
- ৬০০০ এমএএইচ বিশাল ব্যাটারি এই ফোনের সবচেয়ে বড় হাইলাইট। ১৮W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট (বক্সে ১০W অ্যাডাপ্টার দেওয়া হয়)। ব্যবহারভেদে ২-৩ দিন সহজে ব্যাকআপ দেয়।
অপারেটিং সিস্টেম ও ইউআই:
- অ্যান্ড্রয়েড ১৩ (গো এডিশন): হালকা ও অপটিমাইজড ভার্সন।
- ইনফিনিক্স এক্সওএস ১৩: কাস্টমাইজেশন অপশন সমৃদ্ধ, তবে কিছু ব্লোটওয়্যার (প্রি-ইনস্টল অ্যাপ) থাকে।
ক্যামেরা সিস্টেম:
- রিয়ার: ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর (f/1.6 অ্যাপারচার) + AI লেন্স + কোয়াড-এলইডি ফ্ল্যাশ। ডেসেন্ট ডেটেইল ও রং দিনের আলোতে। লো-লাইট পারফরম্যান্স এভারেজ।
- ফ্রন্ট: ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা (f/2.0)। ভিডিও কল ও সোশ্যাল মিডিয়া সেলফির জন্য যথেষ্ট।
- ভিডিও: ১০৮০পি @ 30fps রিয়ার ও ফ্রন্ট উভয় থেকেই।
কানেক্টিভিটি:
- ডুয়াল ৪জি ভিওএলটিই, ওয়াই-ফাই ৫, ব্লুটুথ ৫.০, জিপিএস, ৩.৫মিমি হেডফোন জ্যাক, ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট।
- অন্যান্য ফিচার:
- সাইড-মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর (দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য)।
- ফেস আনলক।
- ডেডিকেটেড মাইক্রোএসডি স্লট (ডুয়াল সিম ইউজারদের জন্য সুবিধাজনক)।
- বক্সে কভার দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞের মূল্যায়ন (প্রযুক্তি সাংবাদিক সুমাইয়া আহমেদ): “৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারি এবং ৬.৮২-ইঞ্চি ৯০Hz ডিসপ্লে স্মার্ট ১০ প্লাসকে ১৫ হাজার টাকার নিচের মার্কেটে অনন্য করে তুলেছে। ইউনিসক টি৬১০ দৈনন্দিন টাস্কের জন্য যথেষ্ট, তবে হার্ডকোর ইউজার বা হেভি গেমারদের জন্য নয়। ক্যামেরা ভালো আলোতে সন্তোষজনক। মূল আকর্ষণ হলো স্ক্রিন সাইজ আর ব্যাটারি লাইফের কম্বিনেশন, যা বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রামীণ ও শহুরে উভয় ব্যবহারকারীর জন্যই আদর্শ।”
একই দামের অন্যান্য ডিভাইসের সঙ্গে তুলনা
১. রিয়েলমি C35 (বাংলাদেশে দাম: ~১৪,৫০০ টাকা):
রিয়েলমি C35-এর প্রধান শক্তি ইউনিসক টি৬১২ প্রসেসর (স্মার্ট ১০ প্লাসের টি৬১০ থেকে সামান্য উন্নত) এবং ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। তবে, এর স্ক্রিন ছোট (৬.৬-ইঞ্চি) এবং রিফ্রেশ রেট মাত্র ৬০Hz। ক্যামেরা পারফরম্যান্স (৫০MP+ ) এবং বিল্ড কোয়ালিটি সমপর্যায়ের। ইনফিনিক্সের বড় স্ক্রিন ও বড় ব্যাটারির তুলনায় রিয়েলমির পারফরম্যান্সে সামান্য এজ আছে।
২. রেডমি 10A (বাংলাদেশে দাম: ~১২,৯৯৯ টাকা):
রেডমি ১০এ-র দাম কিছুটা কম। এটি হেলিও জি২৫ প্রসেসর এবং ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি অফার করে। ক্যামেরা (১৩MP রিয়ার) ও ডিসপ্লে (৬.৫৩-ইঞ্চি ৬০Hz) স্পেসিফিকেশনে ইনফিনিক্স স্মার্ট ১০ প্লাসের চেয়ে পিছিয়ে। তবে, রেডমির ব্র্যান্ড ট্রাস্ট ও সফটওয়্যার আপডেট সাপোর্ট ভালো। যারা স্ক্রিন সাইজ ও ব্যাটারির চেয়ে ব্র্যান্ড ও বেসিক পারফরম্যান্সকে প্রাধান্য দেন, তাদের জন্য অপশন।
সিদ্ধান্ত: ইনফিনিক্স স্মার্ট ১০ প্লাসের বিশাল ৯০Hz ডিসপ্লে এবং ৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারি একে একই দামের প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে। পারফরম্যান্সে রিয়েলমি C35 সামান্য এগিয়ে থাকলেও স্ক্রিন ও ব্যাটারিতে ইনফিনিক্সের জয়। রেডমি ১০এ দামে সস্তা হলেও ফিচারে পিছিয়ে।
কেন এই ডিভাইসটি কিনবেন?
Infinix Smart 10 Plus আপনার জন্য আদর্শ হতে পারে যদি:
- দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি চান: ৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারি মানে চার্জের চিন্তা থেকে মুক্তি। স্টুডেন্ট, ভ্রমণকারী বা কম চার্জিং পয়েন্টে কাজ করা ব্যবহারকারীদের জন্য পারফেক্ট।
- বড় স্ক্রিনে অভিজ্ঞতা নিতে চান: মুভি, ইউটিউব, বা গেমিং – ৬.৮২-ইঞ্চি ডিসপ্লে সবকিছুতেই ইমারসিভ ফিল দেবে। বয়স্ক ব্যবহারকারীদের জন্যও পড়া সহজ।
- টাইট বাজেটে ফুল ফিচার ফোন চান: দামের তুলনায় অফার করা ফিচার সেট (বড় স্ক্রিন, বড় ব্যাটারি, ৫০MP ক্যামেরা, ফিঙ্গারপ্রিন্ট) অসাধারণ।
- প্রাথমিক ব্যবহারকারী হন: সোশ্যাল মিডিয়া, ব্রাউজিং, কলে কথা বলা, লাইট গেমিং – দৈনন্দিন সব কাজ মসৃণভাবে হবে।
- ডুয়াল সিম ও ডেডিকেটেড মেমরি কার্ড স্লট দরকার: বিজনেস ইউজার বা পরিবারের কেন্দ্রীয় ফোন হিসেবে ব্যবহারের সুবিধা।
ব্যবহারকারীদের মতামত ও স্টার রেটিং
বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সংগৃহীত রিভিউ (গড় রেটিং: ৪.১/৫):
রাকিব হাসান (ঢাকা): ★★★★☆
“৩ দিন আগে কিনলাম। ব্যাটারি সত্যিই অসাধারণ! একবার ফুল চার্জে আমার প্রায় ২ দিন ১০ ঘণ্টা চলে। ইউটিউব, ফেসবুক, হালকা গেম খেলেও চার্জ কমে না। স্ক্রিনটা বড় ও উজ্জ্বল, দাদুরাও সহজে দেখতে পান। পারফরম্যান্স সাধারণ কাজে ভালো, তবে ভারী গেম একটু ল্যাগ করে। ক্যামেরা দিনে ভালো, রাতে এভরেজ। দামের জন্য ভ্যালু ফর মানি।”সুমনা আক্তার (চট্টগ্রাম): ★★★★
“সেলফি তোলা আর রিলস বানানোর জন্য কিনেছি। ফ্রন্ট ক্যামেরা ঠিক আছে, ফিল্টারগুলো মজার। ফোনটা হাতে হালকা, ডিজাইনও সুন্দর। স্ক্রিনের ৯০Hz অপশন চালু করলে সত্যিই স্মুথ লাগে। কিন্তু ইনবিল্ট অ্যাপ (ব্লোটওয়্যার) একটু বেশি, কিছু ডিলিট করতে হয়েছে। ব্যাটারি লাইফের জন্য ৪ স্টার।”- আরিফুল ইসলাম (রাজশাহী): ★★★☆☆
“প্রাইস ভালো, ফিচারও ভালো। কিন্তু গেম খেলতে গেলে (ক্যাল অফ ডিউটি) ফোন গরম হয় এবং কখনো কখনো হ্যাং করে। ক্যামেরা রাতে তেমন ভালো না। তবে ফোন কভার দেয়, ব্যাটারি দারুণ। যারা হেভি ইউজ নয়, তাদের জন্য ভালো অপশন।”
সাধারণ ফিডব্যাক: বেশিরভাগ ব্যবহারকারী ব্যাটারি লাইফ, ডিসপ্লে সাইজ, এবং মূল্যের জন্য ইতিবাচক। পারফরম্যান্স (বিশেষ করে গেমিং-এ) এবং লো-লাইট ক্যামেরা কিছুটা সমালোচনার মুখে।
বাংলাদেশে Infinix Smart 10 Plus দাম কত?
বাংলাদেশে Infinix Smart 10 Plus-এর আনুষ্ঠানিক দাম ৪জিবি র্যাম + ৬৪জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের জন্য ১৩,৯৯৯ টাকা এবং ৪জিবি র্যাম + ১২৮জিবি স্টোরেজের জন্য ১৫,৯৯৯ টাকা। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ডিসকাউন্টে ১৩,৫০০ টাকা থেকে ১৬,২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
ডিভাইসটির পারফরম্যান্স কেমন?
ইউনিসক টি৬১০ প্রসেসর এবং ৪জিবি র্যামের কম্বিনেশন দৈনন্দিন কাজকর্ম (ব্রাউজিং, সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও স্ট্রিমিং, লাইট গেমিং) মসৃণভাবে চালাতে সক্ষম। তবে, হার্ডকোর গেমিং বা একসাথে অনেক হেভি অ্যাপ চালালে পারফরম্যান্সে ধীরগতি বা হালকা ল্যাগ দেখা দিতে পারে। ভার্চুয়াল র্যাম (+৩জিবি) কিছুটা সাহায্য করে।
Infinix Smart 10 Plus কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে?
ফোনটি বাংলাদেশে সহজলভ্য। আনুষ্ঠানিক ইনফিনিক্স ব্র্যান্ড শপ, গ্যাজেট গ্যালারি, স্ট্যাফ ইলেকট্রনিক্সের মতো বড় ইলেকট্রনিক্স রিটেইলার, এবং দারাজ, প্রাইসবিডি, পিকাবু, ইভ্যালির মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেসে এটি কিনতে পাওয়া যাবে।
এই দামের মধ্যে অন্য কোন ব্র্যান্ডের ভালো ফোন আছে কি?
হ্যাঁ, এই দামের রেঞ্জে রিয়েলমি C35 (সামান্য ভালো পারফরম্যান্স, ছোট ব্যাটারি), রেডমি 10A (দামে সস্তা, কম ফিচার), টেকনো স্পার্ক গো ২০২৪ (সিমিলার টার্গেট গ্রুপ) এবং ওয়ালটন প্রাইমা H12+ (লোকাল ব্র্যান্ড) ভালো অপশন হতে পারে। ইনফিনিক্সের বড় স্ক্রিন ও ব্যাটারিই মূল ডিফারেন্সিয়েটর।
ডিভাইসটি কতদিন ভালোভাবে চলবে?
সাধারণ ব্যবহার ও যত্ন নিলে ইনফিনিক্স স্মার্ট ১০ প্লাস ২-৩ বছর ভালোভাবে চলার কথা। সফটওয়্যার আপডেট (সাধারণত ১-২ মেজর অ্যান্ড্রয়েড আপডেট ও ২-৩ বছর সিকিউরিটি প্যাচ) এবং ব্যাটারি হেলথ (বড় ব্যাটারির সুবিধা) এর আয়ু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। হেভি গেমিং বা রেগুলার হার্ড ইউজ কমাতে পারে আয়ু।
ব্যাটারি ব্যাকআপ কেমন?
৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারি এই ফোনের সবচেয়ে বড় স্ট্রেন্থ। স্ক্রিন অন টাইম (SOT) সাধারণত ১২-১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে, যা হালকা থেকে মাঝারি ব্যবহারে সহজে ২-৩ দিন ব্যাকআপ দেয়। ব্যবহারের ধরন (ব্রাইটনেস, ওয়াই-ফাই/ডেটা, গেমিং) ব্যাকআপ সরাসরি প্রভাবিত করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
