বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : মোবাইল রিচার্জের সর্বনিম্ন মূল্য এখন ২০ টাকা। ২০ টাকার নিচে কোনও অপারেটরের নেটওয়ার্কে মোবাইল রিচার্জ করা যায় না। যদিও এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনও নির্দেশনা নেই। ফলে মোবাইল ফোন অপারেটরেরা ইচ্ছে মতো মোবাইল রিচার্জ মূল্য (সর্বনিম্ন) নির্ধারণ করে আসছে। এবার সেই ইচ্ছেতে কাঁচি পড়তে যাচ্ছে। মোবাইল ‘রিচার্জে সর্বনিম্ন মূল্য’ বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বুধবার (১০ জানুয়ারি) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রিচার্জে সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। কোনও ধরনের নির্দেশনা না থাকায় সর্বনিম্ন রিচার্জের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছিল। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় এটা হওয়া উচিত নয়।’
বিটিআরসির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) আমরা জানতে পারি— গ্রামীণফোন সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করছে। বিষয়টি গ্রাহকদের জন্য কষ্টকর হতো। আমরা গ্রামীণফোনকে চিঠি লিখে বিষয়টিতে আপত্তির কথা জানাই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণফোন রিচার্জের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের জানায়নি। অনুমোদন নেওয়ার বিষয় না থাকলেও বিষয়টি জানানো যেত।’
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সব অপারেটরকে ডাকা হবে। অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা (ডিরেক্টিভস) তৈরি করা হবে। এছাড়া একটি কমিটিও গঠন করে দেওয়া হবে। সেই কমিটির রিপোর্টও নির্দেশিকা প্রণয়নে গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘মোবাইল সবাই ব্যবহার করে। শুধু ধনীদের কথা চিন্তা করে রিচার্জ মূল্য নির্ধারণ করা যাবে না। সমাজের প্রান্তিক ও অন্তজ ব্যবহারকারীর কথা ভাবতে হবে। এজন্য আমরা সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য বেঁধে দেওয়ার কথা ভাবছি। ’
প্রসঙ্গত, মোবাইল রিচার্জে সর্বনিম্ন টাকার পরিমাণ আগে ছিল ১০ টাকা। ২০২২ সালের জুলাই মাসে তা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়। সর্বশেষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন সর্বনিম্ন মোবাইল রিচার্জ ৩০ টাকা বেঁধে দিয়ে তা চালু করতে যাচ্ছিল। বিটিআরসির দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের কারণে গ্রামীণফোন পিছিয়ে এসেছে। গ্রামীণফোন তাদের গ্রাহকদের এসএমএস পাঠিয়ে, মাইজিপি অ্যাপে নোটিফিকেশন পাঠিয়ে মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি জানায়।
গ্রামীণফোনের এই উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এটা এখনও বাস্তবায়ন করছি না। এ বিষয়ে বিটিআরসির সঙ্গে অলোচনা হবে। সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। এখানে উল্লেখ্য যে, সর্বনিম্ন ব্যালেন্স রিচার্জ ৩০ টাকা করার যে বিষয়টি আমরা বিবেচনা করেছিলাম সেটা চালু হচ্ছে না।’
জানা গেছে, মোবাইল অপারেটররা বলছেন, তাদের আরপু (এআরপিইউ)-অ্যাভারেজ রেভিউন্যু পার ইউজার ঠিক রাখতে সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে যে পরিমাণ মূল্য নির্ধারণ করা আছে, সেটা না বাড়ালে আরপু ঠিক থাকবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অপারেটরের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এই টাকার পরিমাণ ৫০ টাকা হলে সব ঠিক থাকে।
যদিও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিচার্জের সর্বনিম্ন মূল্য ১০ টাকা থাকলে সবচেয়ে ভালো হতো। গ্রামের একজন মানুষ মোবাইলে ১০ টাকা রিচার্জ করে দূর-দূরান্তে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে একটুক্ষণ হলেও কথা বলতে পারতো, মিসকল দিতে পারতো। সেটা বাড়ানোতে (২০ টাকা করায়) দরিদ্র, প্রান্তিক মানুষের কষ্ট বেড়েছে। সেই পরিমাণ আরও বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।