বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ছবি শেয়ার করার জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ইন্সটাগ্রামের বিকল্প একটি অ্যাপ ‘ফ্ল্যাশেস’ এর আগমন ঘটেছে প্রযুক্তি জগতে। জার্মানির বার্লিন-ভিত্তিক ডেভেলপার সেবাস্টিয়ান ভোগলসাং-এর তৈরি অ্যাপটি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অ্যাপ স্টোরে যাত্রা শুরু করে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যেই প্রায় ৩০ হাজার বার ডাউনলোড করা হয়। ‘ফ্ল্যাশেস’ ব্যবহার করে একসাথে সর্বোচ্চ ৪টি ছবি ও সর্বোচ্চ ১ মিনিটের ভিডিও আপলোড করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।
ফ্যাশেস অ্যাপটি আলোচিত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্লুস্কাই-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি। অর্থাৎ, ব্লুস্কাই তৈরিতে যে প্রোটোকল (এটি প্রোটোকল) ব্যবহার করা হয়েছে ফ্ল্যাশেস অ্যাপ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়েছে একই ওপেন সোর্স প্রোটোকল বা ফ্রেমওয়ার্ক। ওপেন সোর্স বা উন্মুক্ত উৎসের হওয়ায় এই প্রোটোকল ব্যবহার করে নিত্যনতুন অ্যাপ তৈরি করতে পারেন ডেভেলপাররা। সেবাস্টিয়ান ভোগলসাং-ও একইভাবে তৈরি করেছেন ফ্ল্যাশেস অ্যাপটি, যাতে ইন্সটাগ্রামের বিভিন্ন ফিচার যুক্ত করেছেন তিনি।
এক কথায়, ফ্ল্যাশেস অ্যাপটি হলো, ব্লুস্কাই-ভিত্তিক ইন্সটাগ্রামের বিকল্প। ফলে ব্লুস্কাই ও ইন্সটাগ্রাম- উভয় প্ল্যাটফর্মের ফিচার দিয়েই সাজানো হয়েছে নতুন এই অ্যাপটিকে। ক্ল্যাসিক ইন্সটাগ্রামের বিভিন্ন ফিচারের পাশাপাশি ব্লুস্কাইয়ের কাস্টম ফিড ব্যবহারের সুযোগ পাবেন ব্যবহারকারীরা। অ্যাপ স্টোরে আসার পর ইতোমধ্যেই বেশ কিছু আপডেট এসেছে অ্যাপটিতে। ফলে আরও বেশি কার্যকর ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে ফ্ল্যাশেস।
ফ্ল্যাশেস অ্যাপটির ফিচারসমূহ:
১। ক্ল্যাসিক ইন্সটাগ্রামের অভিজ্ঞতা অফার করবে ফ্ল্যাশেস। একসাথে সর্বাধিক ৪টি ছবি ও ১ মিনিট দৈর্ঘ্যের ভিডিও আপলোড করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।
২। ব্লুস্কাই-ভিত্তিক হওয়ায় ফ্ল্যাশেস অ্যাপে করা প্রতিটি পোস্ট ব্লুস্কাই প্ল্যাটফর্মের ৩২ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর কাছে সহজেই পৌঁছে যেতে পারে। অর্থাৎ ফ্ল্যাশেস ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি ব্লুস্কাই-এর ৩২ মিলিয়ন ব্যবহারকারীও ফ্ল্যাশেস পোস্টের সম্ভাব্য পাঠক বা দর্শক।
৩। ইন্সটাগ্রামের মতো দেখতে হলেও, ফ্ল্যাশেস অ্যাপটিতে কাস্টমাইজ করার সুযোগ রয়েছে অনেক বেশি। ৫০ হাজারেরও বেশি কাস্টম ফিড অ্যাক্সেস করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। অর্থাৎ, নিজেদের ফিডে ব্যবহারকারীরা কেমন কনটেন্ট দেখতে চান সেটা নিজেরাই ঠিক করে দিতে পারেন। উল্লেখ্য, ইন্সটাগ্রামে এমনটা করা যায় না, অর্থাৎ নিজেদের মতো করে ফিড কাস্টমাইজ করার সুযোগ নেই মেটার মালিকানাধীন এই অ্যাপে। ফলে অ্যাপটির তৈরি করা অ্যালগরিদম অনুযায়ী ব্যবহারকারীদের ফিড তৈরি হয়।
৪। সেরা পোস্ট (টপ পোস্ট) ও সাম্প্রতিক পোস্ট (লেটেস্ট পোস্ট) দেখানোর বিল্ট-ইন ফিডও রয়েছে ফ্ল্যাশেস অ্যাপে, যেটা ব্লুস্কাই নেটওয়ার্কের প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেই দেখা যাবে।
৫। ইন্সটাগ্রামের মতোই বিল্ট-ইন ফটো ফিল্টার রয়েছে ফ্ল্যাশেস অ্যাপটিতে। ফলে ব্যবহারকারীরা সহজেই তাঁদের পোস্ট এডিট করতে পারবেন।
৬। ‘পোর্টফোলিও মোড’-এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাঁদের ফ্ল্যাশেস প্রোফাইল কিউরেট করতে পারবেন, অর্থাৎ ইচ্ছেমতো সাজাতে পারবেন। ভিজিটররা প্রোফাইলে এসে কোন ছবিগুলো দেখতে পাবেন সেটা আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিতে পারেন ব্যবহারকারী। এর ফলে ভিজিটররা ব্যবহারকারীর প্রোফাইলে সেরা ছবিগুলোই দেখতে পাবেন।
৭। ফ্ল্যাশেস অ্যাপটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য ফিচার হচ্ছে আর্টিস্টদের ফিড কিউরেট করার সুবিধা। অর্থাৎ, ব্যবহারকারী কোন কোন আর্টিস্টদের ফিড পেতে চান সেটা আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিতে পারেন।
৮। এছাড়া ব্লুস্কাই প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন টেকনিক্যাল ফিচারও ব্যবহার করতে পারবেন ফ্ল্যাশেস ব্যবহারকারীরা।
ফ্ল্যাশেস-এর নির্মাতা সেবাস্টিয়ান ভোগলসাং সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, ইতোমধ্যেই ফ্ল্যাশেস স্টার্টআপে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অনেক বিনিয়োগকারী। বিনিয়োগের বিষয়ে তাঁদের কয়েকজনের সাথে ভোগলসাং কথাও বলেছেন। অ্যাপটির ডাউনলোড সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
তথ্যসূত্র: টেকক্রাঞ্চ, এনগ্যাজেট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।