বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা কোনো অ্যাপ ডাউনলোড বা আনইনস্টল করার ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে মধ্যবর্তী সময়টার ওপরই নির্ভর করে অ্যাপটির জনপ্রিয়তা। সম্প্রতি টিআরজি ডেটা সেন্টার কোনো অ্যাপ আনইনস্টল করার ক্ষেত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অভ্যাসের ওপর একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বজুড়ে ৪৮০ কোটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী রয়েছে, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৫৯ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯২ দশমিক ৭ শতাংশ। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা প্রতি মাসে গড়ে ৬ দশমিক ৭টি ভিন্ন ভিন্ন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকেন এবং এসব নেটওয়ার্কে দৈনিক ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিট ব্য়য় করে থাকেন।
এ সমীক্ষা অনুসারে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহারকারীরা চলতি বছর সবচেয়ে বেশি আনইনস্টল করেছেন মেটার ইনস্টাগ্রাম অ্যাপটি। ডেটা বলছে, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে প্রতি মাসে ১০ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারী ইন্টারনেটে খোঁজ করে দেখেছেন কীভাবে তাঁদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা যায়। অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ব্যবহারকারী প্রতি মাসে তাঁদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন।
মজার বিষয় হলো, শুধু ছবি শেয়ার করার মাধ্যম হিসেবে এর জন্ম হলেও, ইনস্টাগ্রাম বরাবরই শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রথম সারির অবস্থান দখল করে রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রাম আনইনস্টল করে ফেলার প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বজুড়ে অ্যাপটির প্রায় ২৪০ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী আছে। তবে প্রতি মাসে ১০ লাখ ব্যবহারকারী যদি তাঁদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা শুরু করেন, তাহলে এক বছরের মধ্যেই ইনস্টাগ্রামের এ রাজত্ব ধুলায় মিশে যেতে পারে!
এ ছাড়া চলতি বছর গড়ে প্রতি মাসে ১ লাখ ৩০ হাজার স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন। ইনস্টাগ্রামের তুলনায় এ সংখ্যা বেশ কম হলেও, ৭৫ কোটি ব্যবহারকারীর কথা ভাবলে বেশ বড় একটি অংশই অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলছেন।
মানুষ কেন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলছে?
এত বেশি মানুষ কেন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে চান সেটি পরিষ্কার নয়। তবে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী হিসেবে এই প্ল্যাটফর্মটিকে ঘৃণা করার বিষয়টি এখানে ছবি পোস্ট করা ও সাড়া পাওয়ার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ফাঁস হওয়া ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের ইনস্টাগ্রাম প্রতিবেদন অনুসারে, ইনস্টাগ্রামে এনগেজমেন্ট কমে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে সর্বাধিক জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মাত্র ১০ শতাংশ তাঁদের প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেছেন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) সংস্থা হায়ার ভিজিবিলিটির ডেটা এমন চিত্রই দেখাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইনস্টাগ্রাম মানুষকে খারাপ অনুভূতি দেয়। ফেসবুকের নিজস্ব গবেষণায় দেখা গেছে, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের বড় অংশ কিশোর–কিশোরী, আর এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে কিশোরীদের জন্য।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণায় দেখা গেছে, ইনস্টাগ্রাম বিষণ্নতা, শরীর বা শারীরিক গঠন নিয়ে উদ্বেগ, আত্মসম্মান সংক্রান্ত সংকট, সামাজিক উদ্বেগ এবং বয়স নির্বিশেষে নানা সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।