জুমবাংলা ডেস্ক : ই-পাসপোর্ট, ই-গেট, ই-টিপি ও ই-ভিসা সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রম দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের বাইরে অবস্থানরত প্রবাসীদের জন্য ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে গত ২৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সুইডেনের স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন।
পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ই-পাসপোর্ট, ই-ভিসা, ই-টিপি (ট্রাভেল পারমিট) এবং স্থল ও বিমানবন্দরগুলোয় ই-গেট স্থাপনসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল। ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ওই দিন তিনি বলেছিলেন, ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের জনগণের জন্য মুজিববর্ষের উপহার। তিনি এ ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের জন্য আরও কিছু নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন উপলক্ষে সর্বশেষ গত ২০ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। ওই সভায় পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার জানান, প্রধানমন্ত্রীর সাতটি নির্দেশনার মধ্যে পাঁচটি বাস্তবায়িত হয়েছে। একটি আংশিক হয়েছে। আরেকটি বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রথম নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে ৮০টি বাংলাদেশ মিশনের মধ্যে ৩২টি বাংলাদেশ মিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সুইডেনের স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাসপোর্ট অধিদফতরের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, ই-ট্রাভেল পারমিট (ই-টিপি) রাজস্ব খাত থেকে বাস্তবায়নের জন্য ইনফো টেক লিমিটেডের ডিজির সঙ্গে ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চুক্তি সই করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ই-টিপি ডিজাইন গত ১৩ এপ্রিল সুরক্ষা সেবা বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে। পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত ডিজাইন অনুযায়ী চূড়ান্ত নমুনা কপি সরবরাহের জন্য ইনফো টেককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ই-ভিসা বাস্তবায়নে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। পরে এ বিষয়ে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। ই-ভিসা বাস্তবায়নে এ কমিটি ইতোমধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এ ছাড়া ই-ভিসা কার্যক্রম বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় নির্মাণের জন্য শেরেবাংলা নগরে সরকার জমি বরাদ্দ দিয়েছে। সেখানে ১০ কাঠা জমির ওপর ভবন নির্মাণ শেষে সেখানে ডেলিভারি সেন্টার স্থানান্তর করা হবে। সেখানেই ই-ভিসার কার্যক্রম ও ভিসা শাখা চালু করা হবে বলে জানা গেছে।
বতর্মানে দেশের ৬৪টি জেলার ৭২টি অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। বিদেশের ৮০টি মিশনের ৩২টিতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চলছে। শিগগির সব মিশনে এর কার্যক্রম চালু করা হবে। এ পর্যন্ত ৯৮ লাখ ৩২ হাজার ই-পাসপোর্ট জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ই-পাসপোর্টসহ অন্যান্য বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ফসল। চাহিদা ও উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতীয় অবস্থান, মর্যাদা সুসংহত করার লক্ষ্যে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও চালুর উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে দেশের সব পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরে ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। এমনকি উন্নত দেশগুলোরও স্বল্পসংখ্যক দেশে এই ই-গেট স্থাপিত হয়েছে। শিগগির ই-ভিসা কার্যক্রমও শুরু করা যাবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিদেশে অবস্থান করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন এবং বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রবাসীরা যাতে যথাসময়ে সময়োপযোগী সেবা পান, সে জন্য সরকার সচেষ্ট রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বৈদেশিক মিশনগুলোয় ই-পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।