আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অনিয়মিত অভিবাসীপ্রবাহ মোকাবেলার মধ্য দিয়ে জাতীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রী পর্যায়ের একটি প্যানেল গঠন করেছেন ইতালির ডানপন্থী প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি। সোমবার দেশটির মন্ত্রিসভা বৈঠক থেকে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের সুরক্ষায় আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটি (সিআইএসআর) গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি অনিয়মিত অভিবাসন ও অভিবাসীপ্রবাহ মোকাবেলায় স্থায়ীভাবে কাজ করবে।
উত্তর আফ্রিকা থেকে সমুদ্রপথে এবং বলকান রুট হয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ইতালি।
সোমবার অভিবাসনে ‘বিশৃঙ্খলার’ বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরো জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে ইতালির রেড ক্রস।
অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকা মেলোনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো দ্রুত ও সমন্বিত সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাস্তবসম্মতভাবে সমস্যাটি মোকাবেলা করা।’
এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ভূমধ্যসাগর হয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ভিড় সামাল দিতে জরুরি অবস্থা জারি করে ইতালি। ওই দিন এক বৈঠকের পর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে দেশটির মন্ত্রিসভা।
জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় পাঁচ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। দেশটির নাগরিক সুরক্ষা ও সমুদ্র নীতি বিষয়ক মন্ত্রী নেলো মুসুমেসি জানিয়েছিলেন, এই জরুরি অবস্থা অন্তত ছয় মাস দীর্ঘ হবে।
ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ল্যাম্পেদুসার একমাত্র অভিবাসী অভ্যর্থনাকেন্দ্রটিতেও উপচে পড়া ভিড়। স্থানীয় পুলিশপ্রধান ইমানুয়েল রিসিফারি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রবিবার ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ছোট্ট ল্যাম্পেদুসায় সপ্তাহান্তে ১১০টি নৌকা আসার পর অভ্যর্থনাকেন্দ্রটিতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা চার হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে, যেখানে অভ্যর্থনা কেন্দ্রটির ধারণক্ষমতা মাত্র ৪০০ মানুষের।
আশ্রয়কেন্দ্রটিতে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসীর অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করার পর পুলিশপ্রধান দাবি করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
এদিকে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে এক লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি অভিবাসী সমুদ্র পেরিয়ে ইতালি এসেছেন। গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল ৫৫ হাজার ৮০০। গত শুক্রবার দুই হাজার ৩০০, শনিবারে তিন হাজারেরও বেশি এবং রবিবার প্রায় এক হাজার অভিবাসী পৌঁছন ইতালিতে।
চলতি অভিবাসনপ্রবাহের মধ্যে সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে।
এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আসা অভিবাসীদের মধ্যে অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।
অন্যদিকে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী উদ্ধারে কাজ করা দাতব্য সংস্থাগুলোর পরিচালিত উদ্ধার জাহাজগুলোর ওপর চড়াও হয়েছে ইতালি সরকার। ২১ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনে তিনটি অভিবাসী উদ্ধারকারী জাহাজকে আটক করেছে ইতালি। এগুলোর মধ্যে আছে জার্মান পতাকাবাহী জাহাজ সিআই ফোর ও অরোরা এবং স্প্যানিশ উদ্ধারকারী জাহাজ ওপেন আর্মস।
সোমবার সমুদ্রে বিপদাপন্ন মানুষকে উদ্ধারে ইতালি বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ এনে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ৫৬টি এনজিও। এতে বলা হয়েছে, উদ্ধারকারী জাহাজগুলোর কার্যক্রম সীমিত করার মধ্য দিয়ে অসংখ্য মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।