জুমবাংলা ডেস্ক : মাতৃভূমির জন্য নিজেদের কাজের যে দায়িত্ব, তা থেকে আলাদা হতে পারে না কোনও সংগঠন। দেশের প্রান্ত থেকে প্রান্তে ফোন কনফারেন্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প কার্যক্রমে, সেই বাংলাদেশি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান রবি এরই মধ্যে নতুন একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয় সঙ্কুচিত হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জনগণের জীবনযাত্রায় প্রভাবও ফেলছে।
রবির আয় ও অর্থনৈতিক প্রভাব
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে, রবির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ২,৩৪১.১ কোটি টাকা, যা বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। এমনটি হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, মোবাইল ডাটার মূল্য ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা রবির রাজস্ব বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করছে। এক্ষেত্রে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সরকারের অর্থনৈতিক নীতি ইত্যাদিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রবির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, তারা তাদের পরিষেবা উন্নয়নে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছে না। তবে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে তারা এখন কিছুটা পেছনে পড়েছে। কর্মকর্তাদের মতে, এই সংকট মোকাবেলায় নতুন কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হচ্ছে।
সরকারী কোষাগারে অর্থ জমা
এই কারণে রবির নজর রয়েছে সরকারী কোষাগারে অর্থ জমা দেওয়ার দিকে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে, রবির মোট আয়ের ৭০ শতাংশ সরকারকে জমা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ১,৬২৭.৯ কোটি টাকা। এটি প্রমাণ করে যে, রবি সরকারী নীতি ও নিয়মের প্রতি কতটা গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছে। ওই সময়ে রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৬৪ লাখ, যা আগের বছরের তুলনায় কমেছে।
বিশ্ববাজারের প্রভাব এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ধাক্কার কারণে রবির গ্রাহক হারানোর ঘটনা অনেকটা অব避্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, প্রতিষ্ঠানটি উন্মুক্ত বাজারে অবস্থান ধরে রাখতে এবং নতুন গ্রাহক আকর্ষণে সচেষ্ট রয়েছে।
মূল্যস্ফীতি এবং পরিচালনা ব্যয়
মোবাইল ডাটা ব্যবহারকারী গ্রাহকরা এখন অতিরিক্ত বোঝা অনুভব করছেন। লগ্নি, চলমান ব্যয়, এবং সর্বশেষ বাজেটের পরিবর্তনের ফলে গ্রাহক সংখ্যা প্রত্যাশিতের চেয়ে দ্রুত হারে কমছে। এর ফলে, ডাটা মূল্য কমানোর পাশাপাশি, পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কোম্পানিভিত্তিক সমাপ্তি মার্জিন কমে গেছে। এক্ষেত্রে, আগের বছরগুলোর তুলনায় প্রতিটি জানুয়ারী-মার্চ প্রান্তিকের ফলাফল আরও মারাত্মক।
এই অবস্থায় রবির ভারপ্রাপ্ত সিইও এম রিয়াজ রশিদ বলেছেন, “আমরা বুঝতে পারছি যে, পরিস্থিতি আমাদের জন্য অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়ছে। কিন্তু ডাটা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।” তবে, এই পরিস্থিতি মূল্যস্ফীতির জন্য উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন গ্রাহক আকর্ষণ
শুধু তাই নয়, নতুন গ্রাহক সংগ্রহেও রবি এখন কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কোম্পানিটি জানাচ্ছে যে, সিমের ওপর কর বৃদ্ধির ফলে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে তাই এখন সঠিক আহ্বান প্রয়োজন। এই সময়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করে নতুন গ্রাহক সংগ্রহের জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রবি।
সাধারণ গ্রাহকরা এই খাতে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা রাখছেন। তবে, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে নতুন উদ্যোগগুলি সফল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রবির ভবিষ্যৎ
বর্তমানে দেশের ৯৮.৯৭ শতাংশ জনগণের জন্য ফোর-জি কভারেজ নিশ্চিত করেছে রবি। এই সফরটি আরও বেশি সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনার দাবীদার। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “যদি রবির কার্যক্রমগুলোর কার্যকারিতা বাড়ে, তাহলে তারা আবার বাজারে একটি সাফল্য পাবে।”
রবির সাম্প্রতিক পরিবর্তন ও তাদের আর্থিক ফলাফল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। জনকল্যাণে প্রতিষ্ঠানটি কি নতুন পদক্ষেপ নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
প্রধান বিকল্প আয়োজনের সঙ্গে, সামনের দিনগুলোতে রবির ব্যবসায়িক কৌশলগুলোকে নজরদারী করতে হবে।
FAQs
১. রবি কি কারণে আয় কমেছে?
রবির আয় কমানোর প্রধান কারণ হলো মোবাইল ডাটার মূল্য হ্রাস, মূল্যস্ফীতি এবং পরিচালনার বাড়তি ব্যয়।
২. রবির গ্রাহক সংখ্যা কতো?
আজকের জন্য রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৬৪ লাখ।
৩. রবির রাজস্ব সরকারের কাছে কিভাবে জমা হয়?
রবি তাদের মোট আয়ের ৭০ শতাংশ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়।
৪. রবির ভবিষ্যৎ নিয়ে কি আশা করা হচ্ছে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন কৌশল গ্রহণ করলে রবি সাফল্য অর্জন করতে পারে।
৫. মোবাইল ডাটা মার্কেটে কি পরিবর্তন হচ্ছে?
মোবাইল ডাটার দাম ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে, যা গ্রাহকদের জন্য সুবিধা হলেও কোম্পানিগুলোর রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।