বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : নিরাপদ ও বাণিজ্যিকভাবে ফল পাকানোর জন্য আধুনিক রাইপিং চেম্বার উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)। পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি ডিভিশন বা ফলনোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করেন। এতে ফল পাকানোর জন্য এতদিন যেসব ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হতো, তার ব্যবহার কমে যাবে। অন্যদিকে চাষীরা লাভবান হবেন।
বারি সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতি বছর প্রচুর ফল উৎপাদন হয়। কিন্তু একসঙ্গে অধিকাংশ গাছ থেকে পাকা ফল পাওয়া সম্ভব হয় না। পর্যায়ক্রমে গাছে এসব ফল পাকার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অধিকসংখ্যক মানুষকে একসঙ্গে পাকা ফল খাওয়ানো সম্ভব হয় না। তাই অনেকে এগুলো কাঁচা সংগ্রহ করে বিকল্প পদ্ধতিতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল প্রয়োগ করে পাকানোর চেষ্টা করে। আবার মৌসুমের প্রথমে কোনো কোনো ফলের ব্যাপক চাহিদার কারণে অপরিপক্ব ফলে কেমিক্যাল ব্যবহার করে ভোক্তার কাছে বিক্রি করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মানবদেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণে যেসব ফল খাওয়া হয়, এসব ফলে ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকায় উল্টো বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যার কথা চিন্তা করেই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবন করেছে লো কস্ট রাইপিং চেম্বার বা কম দামে ফল পাকানোর কক্ষ পদ্ধতি।
এ পদ্ধতির উদ্ভাবক ড. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী জানান, এটি একটি নিরাপদ ও আধুনিক পদ্ধতি। এর মাধ্যমে পরিপুষ্ট ফল গাছ থেকে পেড়ে প্রয়োজন বা চাহিদা অনুযায়ী পাকানো যাবে। এতে ফলের মধ্যে সরাসরি কোনো কেমিক্যাল স্প্রে করা হয় না বলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। এ পদ্ধতিতে ফল পাকানোর কারণে পুষ্টিমান ও স্বাদে কোনো তারতম্য হয় না।
পদ্ধতিটি সম্পর্কে তিনি জানান, সব ফলেই প্রাকৃতিকভাবে ইথিলিন উৎপন্ন হয়। এ ইথিলিন যখন একটি নির্দিষ্ট অপটিমাম বা পরিমিত অবস্থায় পৌঁছে, তখন ফলের পরিপুষ্টতা চলে আসে এবং ফল ধীরে ধীরে পাকতে শুরু করে। আমরা অনেক সময় গাছ থেকে পরিপুষ্ট অবস্থায় ফল পেড়ে রেখে দিই এবং পরে ধীরে ধীরে এতে ইথিলিন উৎপন্ন হয়। তিন-পাঁচদিনের মধ্যে পেকে যায়। চাহিদা অনুযায়ী ইচ্ছা করলেই আমরা আম, কলা, আনারস বা পেঁপে গাছ থেকে পাকা পেতে পারি না। এক্ষেত্রে আমরা রাইপিং চেম্বারের মাধ্যমে একদিনেই ফল পাকাতে পারব এবং চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।