আপনার হাতের সেই চকচকে আইফোনটি কি শুধুই ফোনকল, মেসেজ আর ইনস্টাগ্রাম স্ক্রোল করার যন্ত্র? ভাবছেন, বছরের পর বছর ব্যবহার করেও হয়তো এর সবকিছু জানা হয়ে গেছে? ভুল ভাবছেন। ভেতরে লুকিয়ে আছে একঝাঁক অদেখা, অচেনা, অবিশ্বাস্য সুবিধা – যেগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনের ঝামেলা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে, সময় বাঁচাতে পারে, নিরাপত্তা বাড়াতে পারে, এমনকি নতুন করে ডিভাইসটিকে ভালোবাসাতেও শেখাতে পারে! এগুলো কোন জাদু নয়, বরং অ্যাপলের নিখুঁত ডিজাইনে গেঁথে দেওয়া সেই সব “গোপন” ফিচার, যেগুলোর কথা হয়তো কখনো মনেও করেননি, অথচ এগুলোই পারে আপনার ডিজিটাল অভিজ্ঞতাকে সম্পূর্ণ নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে। আজ আমরা খুঁজে বের করব সেই আইফোনের অজানা ফিচার, যেগুলো জানা থাকলে জীবন সহজ করার গোপন টিপস হয়ে উঠবে আপনার প্রতিদিনের সঙ্গী। চা নিয়ে বসুন, সময় নিন, এবং প্রস্তুত হোন আপনার আইফোনকে নতুন করে আবিষ্কার করতে!
আইফোনের অজানা ফিচার: আপনার ডিভাইসের লুকানো সুপারপাওয়ার আনলক করুন! (H2)
আইফোন শুধু একটি স্মার্টফোন নয়; এটি একটি ক্ষুদ্র শক্তিশালী কম্পিউটার, যার প্রতিটি স্তরে লুকিয়ে আছে সুচিন্তিত ইঞ্জিনিয়ারিং আর ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য নিরন্তর গবেষণার ফসল। কিন্তু এই সমস্ত ফিচারের মধ্যে অনেকগুলোই হয়তো মেন্যুর গভীরে, সেটিংসের জটিল পথে, অথবা নির্দিষ্ট জেস্চার বা শর্টকাটের মাধ্যমে লুকিয়ে থাকে। সেগুলো খুঁজে বের করা এবং কাজে লাগানোটাই পারে আপনার অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে।
- কিভাবে খুঁজে পাবেন এই ‘গোপন’ ফিচারগুলো? (H3)
অ্যাপল সরাসরি সবকিছু সামনে নিয়ে আসে না। এর পেছনে আছে ‘ডিসকভারেবিলিটি’-র ধারণা – ফিচারগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যেন ব্যবহারকারীরা স্বাভাবিক ব্যবহারের মধ্য দিয়েই সেগুলো আবিষ্কার করতে পারেন। কিন্তু আমাদের ব্যস্ত জীবনে সেই ‘স্বাভাবিক’ এক্সপ্লোরেশনের সময় প্রায়ই থাকে না। সেটিংস অ্যাপটি এক বিশাল ভাণ্ডার। ‘অ্যাক্সেসিবিলিটি’, ‘কন্ট্রোল সেন্টার’, ‘শর্টকাটস’, ‘ব্যাটারি’ বা এমনকি ‘সাউন্ড অ্যান্ড হ্যাপটিক্স’-এর মতো বিভাগগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করলেই চোখে পড়বে অজানা অনেক অপশন। অ্যাপল সাপোর্ট ওয়েবসাইটের গাইডেন্স (https://support.apple.com/guide/iphone/welcome/ios) বা নির্দিষ্ট ফিচারের জন্য সরাসরি সার্চ করাও উত্তম উৎস। আমার নিজের অভিজ্ঞতায়, iOS এর নতুন ভার্সন আপডেটের পর সেটিংস ঘুরে দেখা এবং অ্যাপল সাপোর্টের ‘টিপস অ্যান্ড ট্রিকস’ সেকশন ব্রাউজ করা অনেক অমূল্য জিনিস শেখায়। - ‘গোপন’ বলতে আসলে কী বোঝায়? (H3)
এখানে ‘গোপন’ বলতে এমন ফিচারগুলোকে বোঝানো হচ্ছে যেগুলো:- প্রচারিত হয় না বা অ্যাপল বিশেষভাবে হাইলাইট করে না (যেমন নতুন ক্যামেরা মোড)।
- সেটিংসের গভীরে লুকানো থাকে, সহজে চোখে পড়ে না।
- ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট জেস্চার বা শর্টকাট জানা দরকার, যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বোঝা যায় না।
- একাধিক ফিচার বা অ্যাপের সমন্বয়ে তৈরি হয়, যা ব্যবহারকারীকে নিজেই আবিষ্কার করতে হয়।
- অ্যাক্সেসিবিলিটি বিভাগে থাকে, কিন্তু সবার জন্য অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে।
এখন দেখা যাক, সেই জীবন-পরিবর্তনকারী কিছু অজানা ফিচার ও গোপন টিপস, যেগুলো আপনার আইফোন ব্যবহারকে করে তুলবে আরও মসৃণ, দক্ষ এবং আনন্দদায়ক।
ব্যাটারি লাইফ বাড়ানোর গোপন কৌশল: শুধু লো পাওয়ার মোড নয়! (H2)
ব্যাটারির চিন্তা সবার মাথায়। লো পাওয়ার মোড তো সবার জানা, কিন্তু এর বাইরেও আছে জাদুকরী কিছু অপশন:
- ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ: শক্তির লুকোচুরি ধরা (H3)
অনেক অ্যাপ পর্দা বন্ধ থাকলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা টেনে ব্যাটারি খায়। নিয়ন্ত্রণ করুন:সেটিংস > সাধারণ > ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ
-এ যান।- এখানে তিনটি অপশন: ‘অফ’, ‘Wi-Fi’, ‘Wi-Fi ও সেলুলার ডেটা’। ‘অফ’ করলে সর্বোচ্চ ব্যাটারি সেভিং, কিন্তু কিছু নোটিফিকেশন বা রিয়েল-টাইম আপডেট বিলম্বিত হতে পারে। সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ উপায় হলো ‘Wi-Fi’ সিলেক্ট করা। এতে শুধুমাত্র Wi-Fi নেটওয়ার্কে থাকাকালীন ব্যাকগ্রাউন্ড রিফ্রেশ হবে, দামি সেলুলার ডেটাও বাঁচবে, ব্যাটারিও। অথবা, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো আলাদাভাবে বন্ধ করে দিন। ঢাকার ব্যস্ত মেট্রো বা চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় দুর্বল নেটওয়ার্কে এটি বিশেষ কার্যকরী (আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা!)।
- লোকেশন সার্ভিসের সূক্ষ্ম নিয়ন্ত্রণ: অদরকারী ট্র্যাকিং বন্ধ করুন (H3)
অনেক অ্যাপ আপনার অবস্থান সবসময় ট্র্যাক করে, যা ব্যাটারির ওপর চাপ ফেলে।সেটিংস > গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা > লোকেশন সার্ভিস
-এ যান।- প্রতিটি অ্যাপের জন্য লোকেশন অ্যাক্সেস সেট করুন। ‘কখনও নয়’, ‘অ্যাপ ব্যবহারের সময়’ বা ‘সর্বদা’। ম্যাপ ছাড়া অধিকাংশ অ্যাপের জন্য ‘অ্যাপ ব্যবহারের সময়’ই যথেষ্ট। ‘সিস্টেম সার্ভিসেস’-এর ভেতরে গিয়ে ‘সেলুলার নেটওয়ার্ক সার্চ’, ‘আইফোন অ্যানালিটিক্স’ ইত্যাদির লোকেশন অ্যাক্সেস বন্ধ করেও কিছুটা ব্যাটারি বাঁচানো যায়। অ্যাপল নিজেই স্বীকার করে যে অতিরিক্ত লোকেশন সার্ভিস ব্যাটারি ড্রেনের একটি কারণ (Apple Battery Health Guide – ব্যাটারি সম্পর্কিত সাধারণ তথ্য)।
- অটো-ব্রাইটনেস ও ট্রু টোন: ডিসপ্লের গোপন শক্তি (H3)
মনে হচ্ছে সহজ, কিন্তু এর সঠিক ব্যবহারে ব্যাটারি বাঁচে।সেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > ডিসপ্লে ও টেক্সট সাইজ
-এ গিয়ে ‘অটো-ব্রাইটনেস’ চালু রাখুন। এটি পরিবেশের আলো অনুযায়ী স্ক্রিন ব্রাইটনেস অটো অ্যাডজাস্ট করে, অতিরিক্ত উজ্জ্বলতা (বড় ব্যাটারি খোরাক) এড়ায়।সেটিংস > ডিসপ্লে ও ব্রাইটনেস
-এ ‘ট্রু টোন’ চালু করুন। এটি পরিবেশের আলোর সাথে স্ক্রিনের রং মেলায়, ফলে চোখের কম চাপ পড়ে এবং কিছু ক্ষেত্রে কম উজ্জ্বলতায় আরামদায়ক দেখায়, যা পরোক্ষভাবে ব্যাটারি সংরক্ষণে সাহায্য করে। সন্ধ্যার পর কম আলোয় এটি বিশেষভাবে কার্যকর।
- ওয়াইফাই অ্যাসিস্ট্যান্ট: ডেটা ও ব্যাটারি দুটোই বাঁচান (H3)
দুর্বল Wi-Fi সিগন্যালে আইফোন প্রচুর শক্তি খরচ করে সংযোগ ধরে রাখতে। এই ফিচারটি সেই সমস্যা কমায়।সেটিংস > সেলুলার
(বামোবাইল ডেটা
) – নিচে স্ক্রল করুন।- ‘Wi-Fi অ্যাসিস্ট্যান্ট’ খুঁজুন। এটি চালু থাকলে, Wi-Fi সংযোগ খুব দুর্বল হলে আইফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেলুলার ডেটায় চলে যায়। এটি বন্ধ করে দিন। এতে হয় Wi-Fi ঠিকঠাক কাজ করবে, নতুবা আপনি নিজেই সেলুলারে সুইচ করবেন। দুর্বল Wi-Fi-তে লেগে থাকার কারণে যে অতিরিক্ত ব্যাটারি ড্রেন হয়, এটি তা রোধ করে। খুলনা বা বরিশালের মতো যেসব এলাকায় Wi-Fi কভারেজে ঘাটতি আছে, সেখানে এটি দারুণ সাহায্য করে।
নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার লুকানো দুর্গ: শুধু পাসকোড নয়! (H2)
আপনার তথ্য ও ডিভাইসের সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইফোনে এজন্য শুধু ফেস আইডি বা পাসকোডের বাইরেও শক্তিশালী স্তর আছে।
- লকড নোটস: আপনার সবচেয়ে গোপন কথাগুলো সুরক্ষিত রাখুন (H3)
নোটস অ্যাপ শুধু শপিং লিস্ট বা মিটিং নোটের জন্য নয়। এটি আপনার পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত আইডিয়া, গোপন নথি রাখার দুর্দান্ত জায়গা – যদি তালা লাগানো থাকে!- একটি নোট খুলুন বা তৈরি করুন।
- শেয়ার বাটনে (উপরের ডান কোণায়) ট্যাপ করুন > ‘লক নোট’ চয়েস করুন।
- একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করুন (অথবা ফেস/টাচ আইডি ব্যবহার করতে অনুমতি দিন)। মনে রাখবেন, এই পাসওয়ার্ড পাসকোড বা Apple ID থেকে আলাদা! এটি শুধুমাত্র এই বিশেষ নোট বা লক করা সব নোটের জন্য।
- এবার সেই নোটে ঢুকতেই পাসওয়ার্ড বা বায়োমেট্রিক্স লাগবে। এটি অ্যাপলের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের মাধ্যমে সুরক্ষিত। আপনার ডিভাইস হারিয়ে গেলেও বা কেউ হাতে পেলেও এই নোট পড়তে পারবে না। আমার ব্যাংকিং ডিটেইলস বা পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমি এভাবেই সুরক্ষিত রাখি।
- হিড মাই ইমেইল: স্প্যাম ও ট্র্যাকিং থেকে মুক্তি (H3)
অনলাইন ফর্ম পূরণের সময় ইমেইল দিতে ভয় পান? অ্যাপলের ‘হিড মাই ইমেইল’ আপনাকে একটি র্যান্ডম, ছদ্ম ইমেইল অ্যাড্রেস দেবে যা আপনার আসল ইনবক্সে ফরোয়ার্ড হবে!সেটিংস > আপনার নাম > iCloud > হিড মাই ইমেইল
-এ গিয়ে এটি চালু করুন।- যে কোনো অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ইমেইল চাইলে, কীবোর্ডের উপরে ‘হিড মাই ইমেইল’ অপশনটি দেখবেন। ট্যাপ করুন।
- একটি অনন্য ইমেইল অ্যাড্রেস জেনারেট হবে (যেমন:
[email protected]
)। এটি ব্যবহার করুন। - সেই অ্যাড্রেসে আসা সব মেইল আপনার আসল ইমেইলে চলে আসবে। কোনো সাইট স্প্যাম শুরু করলে বা ডেটা লিক করলে, আপনি সহজেই সেই নির্দিষ্ট রিলে ইমেইল বন্ধ করে দিতে পারবেন, আপনার আসল ইমেইল অ্যাড্রেস অক্ষত থাকবে! এটি বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান অনলাইন ফিশিং ও স্প্যাম থেকে রক্ষা পাওয়ার অসাধারণ একটি টুল। অ্যাপলের গোপনীয়তা নীতির একটি মূর্ত প্রতীক (Apple Privacy Features)।
- সেফটি চেক: সম্পর্কের জটিলতায় দ্রুত নিরাপত্তা (H3)
এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কম আলোচিত ফিচার, বিশেষ করে যারা পারিবারিক সহিংসতা বা নিগ্রহের ঝুঁকিতে আছেন তাদের জন্য।সেটিংস > গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা
-এ যান।- নিচের দিকে স্ক্রল করে ‘সেফটি চেক’ খুঁজুন।
- এটি আপনাকে দ্রুত:
- আপনার লোকেশন শেয়ারিং বন্ধ করতে পারবে (ফাইন্ড মাই থেকে)।
- আপনার অ্যাপল আইডিতে অ্যাক্সেস আছে এমন লোকদের অ্যাক্সেস রিভোক করতে পারবে (যেমন ফটো অ্যালবাম শেয়ার, ফাইন্ড মাই লোকেশন ইত্যাদি)।
- আপনার ডিভাইসের পাসকোড দ্রুত রিসেট করতে সাহায্য করবে।
- একটি জরুরি রিসেট বাটন আছে যা উপরের সবগুলো একসাথে করে দেয়। এটি ব্যবহার করলে কোনো নোটিফিকেশন যাবে না। এটি জীবন রক্ষাকারী হতে পারে। বাংলাদেশের নারী ও শিশু সহায়তা সংস্থাগুলোও ডিজিটাল নিরাপত্তার অংশ হিসেবে এ ধরনের ফিচারের পরামর্শ দিচ্ছে।
- ক্যামেরার লুকানো সুরক্ষা: ফটোতে লোকেশন লুকান (H3)
আপনি কি জানেন, আপনি তোলা প্রতিটি ছবির মেটাডেটায় (EXIF ডেটা) আপনার অবস্থান, তারিখ, সময় ইত্যাদি গোপনে সংরক্ষিত থাকে? এই ডেটা শেয়ার করলে আপনার গোপনীয়তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।সেটিংস > গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা > লোকেশন সার্ভিস
-এ যান।- নিচে স্ক্রল করে ‘ক্যামেরা’ অ্যাপটি খুঁজুন।
- এটির লোকেশন অ্যাক্সেস সেট করুন ‘অ্যাপ ব্যবহারের সময়’। এরপরও লোকেশন ডেটা ছবির সাথে সেভ হয়।
- লোকেশন ডেটা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে:
সেটিংস > গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা > লোকেশন সার্ভিস > ক্যামেরা > 'প্রিসাইজ লোকেশন'
বন্ধ করে দিন। এখনও ছবির মেটাডেটায় আনুমানিক লোকেশন থাকতে পারে। - ছবি শেয়ার করার সময় লোকেশন ডেটা সরাতে: ছবি শেয়ার করার অপশনে গিয়ে (এয়ারড্রপ, মেসেজ, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি), ‘অপশন’ বা ‘সেটিংস আইকনে’ ট্যাপ করে দেখুন ‘মেটাডেটা’ অপশন আছে কিনা। সেখানে সাধারণত ‘লোকেশন’ বন্ধ করার অপশন থাকে। অথবা, শেয়ার করার আগে স্ক্রিনশট নিয়ে নিন (স্ক্রিনশটে লোকেশন ডেটা থাকে না)। সিলেটের পাহাড় বা কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের ছবি শেয়ার করতে চাইলে এই টিপসটি জরুরি।
উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বাড়ানোর ম্যাজিক ট্রিকস: সময় বাঁচান সহজে! (H2)
আইফোনকে কাজের হাতিয়ার বানাতে এগুলো জানা জরুরি:
- ব্যাক ট্যাপ: পিছনে ট্যাপ করে জাদু দেখান! (H3)
এটি হয়তো সবচেয়ে গোপন এবং শক্তিশালী ফিচারগুলোর একটি! আইফোনের পিছনের কভারে ট্যাপ করে আপনি বিভিন্ন কাজ ট্রিগার করতে পারেন।সেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > টাচ > নিচে স্ক্রল করে 'ব্যাক ট্যাপ'
খুঁজুন।- ‘ডাবল ট্যাপ’ বা ‘ট্রিপল ট্যাপ’-এর জন্য একটি অ্যাকশন সিলেক্ট করুন। অপশনগুলোর মধ্যে আছে:
- স্ক্রিনশট নেওয়া: দ্রুততম স্ক্রিনশট পদ্ধতি! (আমার সর্বপ্রিয়!)
- অ্যাপ স্যুইচার দেখা
- নোটিফিকেশন সেন্টার খোলা
- কন্ট্রোল সেন্টার খোলা
- ভয়েস কন্ট্রোল (শর্টকাট) চালু করা
- অ্যাসিস্টিভটাচ চালু করা
- ম্যাগনিফায়ার চালু করা
- শর্টকাট রান করা (যেকোনো অটোমেশন!)
- এবং আরও অনেক কিছু!
- ডাবল বা ট্রিপল ট্যাপের জন্য একটি অ্যাকশন সিলেক্ট করুন। চেষ্টা করে দেখুন – এটি অভ্যাসের ব্যাপার, কিন্তু একবার রপ্ত করলে অসম্ভব সুবিধাজনক। কলের সময়, পকেটে থাকা অবস্থায়, বা এক হাত ব্যস্ত থাকলে স্ক্রিনশট নেওয়া বা লাইট অন করা যায় মুহূর্তে!
- টেক্সট রিপ্লেসমেন্ট: বারবার টাইপ করা বন্ধ করুন (H3)
আপনি কি নির্দিষ্ট কিছু বাক্যাংশ বা শব্দ (যেমন আপনার ইমেইল, ফোন নম্বর, ঠিকানা) বারবার টাইপ করেন? এটি স্বয়ংক্রিয় করুন!সেটিংস > সাধারণ > কীবোর্ড > টেক্সট রিপ্লেসমেন্ট
-এ যান।- উপরের ‘+’ বাটনে ট্যাপ করুন।
- ‘ফ্রেজ’ ফিল্ডে লিখুন পুরো টেক্সটটি (যেমন:
[email protected]
)। - ‘শর্টকাট’ ফিল্ডে লিখুন একটি সহজ, ইউনিক কোড (যেমন:
@@email
)। - ‘সেভ’ করুন।
- এখন যেকোনো জায়গায় (মেসেজ, নোটস, মেইল) শুধু
@@email
টাইপ করুন এবং স্পেস দিলেই তা পুরো ইমেইল অ্যাড্রেসে রূপান্তরিত হবে! ভুক্তভোগীর নাম, বিলের তথ্য, স্ট্যান্ডার্ড জবাব – সবকিছুর জন্য এটি ব্যবহার করুন। সপ্তাহে কত ঘন্টা বাঁচবে ভাবুন!
- স্পটলাইট সার্চ: আপনার আইফোনের সুপার-সার্চ (H3)
হোম স্ক্রিন নিচে নামিয়ে (বা মিডিলে সোয়াইপ করে) যে সার্চ বার আসে, তা শুধু অ্যাপ খোঁজার জন্য নয়! এটি আপনার আইফোনের গুগল!- অভ্যন্তরীণ সার্চ: মেসেজ, মেইল, নোটস, কন্টাক্ট, ক্যালেন্ডার ইভেন্ট, ফাইলস অ্যাপের ডকুমেন্ট – সবকিছু খুঁজে পাবেন এখানে টাইপ করেই। ‘জুলাই মাসের বিদ্যুৎ বিল’ লিখলেই রিলেটেড মেসেজ বা মেইল চলে আসবে।
- ক্যালকুলেটর ও ইউনিট কনভার্টার: সরাসরি
456 * 78
বা100 USD to BDT
লিখে সার্চ দিলেই ফলাফল চলে আসবে, ক্যালকুলেটর অ্যাপ খুলতে হবে না! ঢাকার বাজারে ডলারের দর দ্রুত জানতে এটি দারুণ। - ওয়েব সার্চ: সরাসরি গুগলে সার্চ দিতে পারেন।
- অ্যাপের ভিতরে খোঁজা: অনেক অ্যাপের ভিতরের কন্টেন্টও (সেটিংসে পারমিশন দিয়ে রাখলে) স্পটলাইটে সার্চ করা যায়। যেমন: হোয়াটসঅ্যাপের পুরোনো চ্যাট।
- ভয়েস কন্ট্রোল (শর্টকাট): কথা বলেই কাজ হাসিল করুন! (H3)
শর্টকাট অ্যাপের সাথে মিলিয়ে এটি আরও শক্তিশালী। হাতে ব্যস্ত থাকলে, গাড়ি চালালে বা রান্না করলে আদর্শ।সেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > ভয়েস কন্ট্রোল
-এ গিয়ে এটি চালু করুন।- ‘কাস্টমাইজ কমান্ডস…’ তে গিয়ে আপনি নিজের কমান্ড তৈরি করতে পারেন। যেমন:
- “হে সিরি, লাইট অন করো” (শর্টকাট ব্যবহার না করে সরাসরি)।
- “ঘরে ফোন করো” (একটি শর্টকাট চালু করবে যা ‘ঘর’ কন্টাক্টে কল করে)।
- “শ্রাবণকে ৫০০ টাকা পাঠাও” (বিকাশ বা নগদের শর্টকাট চালু করতে পারে, যদি বানানো থাকে)।
- আপনি বললেই আইফোন সেই কমান্ড শুনে কাজটি করে দেবে! এটি বাংলা কমান্ডও সাপোর্ট করে (যদিও ইংরেজিতে সাধারণত বেশি নির্ভুল)। “হে সিরি, টর্চ অন করো” বললেই ফ্লাশলাইট জ্বলে উঠবে!
ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফির লুকোনো জাদু: শুধু শাটার বাটন নয়! (H2)
আইফোনের ক্যামেরা শুধু পয়েন্ট-এন্ড-শুট নয়, এর গভীরে আছে প্রো লেভেলের কন্ট্রোল।
- এক্সপোজার লক: আলো ঠিক রেখে শট নিন (H3)
অটো এক্সপোজারে অনেক সময় ছবি অতিরিক্ত উজ্জ্বল বা অন্ধকার হয়ে যায়, বিশেষ করে ব্যাকলিট বা কন্ট্রাস্টি দৃশ্যে। এক্সপোজার লক দিয়ে আলোকে ‘ফ্রিজ’ করুন।- ক্যামেরা অ্যাপ খুলুন।
- স্ক্রিনে যেখানে এক্সপোজার ঠিক করতে চান (মূল সাবজেক্ট), সেখানে ট্যাপ করে ধরে রাখুন কয়েক সেকেন্ড।
- উপরে/নিচে হলুদ ‘AE/AF লক’ বার্তা দেখাবে (অটো এক্সপোজার/অটো ফোকাস লক)।
- এবার ফ্রেম সামান্য নড়ালেও এক্সপোজার (উজ্জ্বলতা) একই থাকবে। পারফেক্ট শট নিন! সূর্যাস্ত বা জানালার পাশের পোর্ট্রেটে এটি অসাধারণ কাজ করে। আমার কক্সবাজারের সূর্যাস্তের ছবিগুলোতে এটি গেম-চেঞ্জার ছিল।
- বুরস্ট মোড: নিখুঁত মুহূর্ত ধরা (H3)
চলন্ত বস্তু (খেলতে থাকা শিশু, রেসিং কার) বা এক্সপ্রেশন ক্যাপচারের জন্য এটি জরুরি।- ক্যামেরা অ্যাপ খুলুন।
- শাটার বাটনটিকে বাম দিকে সোয়াইপ করে ধরে রাখুন। এটি দ্রুতগতিতে একের পর এক ছবি তুলতে থাকবে (সেকেন্ডে ১০টারও বেশি!)।
- ছবি তোলা শেষ হলে, ছবিগুলো ফটো অ্যাপে গিয়ে ‘বুরস্ট’ অ্যালবামে পাওয়া যাবে। সেখান থেকে সেরা ফ্রেমটি বা ফ্রেমগুলো সিলেক্ট করে বাকিগুলো ডিলিট করে দিতে পারেন। ঈদুল ফিতরে শিশুদের নতুন জামাকাপড়ের ছবি তোলার সময় এটি অপরিহার্য!
- কুইকটেক ভিডিও: সেকেন্ডে ভিডিও রেকর্ড শুরু (H3)
দ্রুত কোন মুহূর্ত ধারণ করতে চান? ক্যামেরা আনলক করতে বা ভিডিও মোডে সুইচ করার সময় নষ্ট করবেন না।- লক স্ক্রিন বা যেকোনো স্ক্রিন থেকে: ক্যামেরা আইকনের উপর ট্যাপ করে ডানে সোয়াইপ করুন (বা লক স্ক্রিনে ক্যামেরা আইকনে ট্যাপ চেপে ধরে উপরে সোয়াইপ করুন)।
- ক্যামেরা খুলতেই সাথে সাথে ভিডিও রেকর্ডিং শুরু হয়ে যাবে! রেকর্ড বাটনে লাল বিন্দু জ্বলতে দেখবেন।
- রেকর্ডিং বন্ধ করতে শাটার বাটনে ট্যাপ করুন।
- এটি ফটো মোডে খুললে শাটার বাটন চেপে ধরে রাখলেও ভিডিও রেকর্ড শুরু হয়, কিন্তু কুইকটেক আরও দ্রুত। আকস্মিক কোন দৃশ্য (যেমন রাস্তার পারফরম্যান্স, প্রাকৃতিক দৃশ্য) ক্যাপচারের জন্য আদর্শ।
- ফটো লাইব্রেরির লুকানো এডিটিং: শুধু ক্রপ নয়! (H3)
ফটো অ্যাপেই আছে শক্তিশালী এডিটিং টুলস।- একটি ফটো খুলুন > ‘এডিট’ চাপুন।
- উপরে তিনটি ডট (…) ট্যাপ করুন। এখানে লুকানো:
- ‘মার্কআপ’: ছবির উপর হাতে লিখুন, আন্ডারলাইন করুন, শেপ যোগ করুন।
- ‘ক্যাপশন’: ছবির জন্য একটি ক্যাপশন যোগ করুন (ফটো ডিটেইলে দেখা যাবে)।
- ‘অ্যাডজাস্ট’: এখানে গিয়ে ‘শ্যাডোস’, ‘ব্ল্যাক পয়েন্ট’, ‘ভাইব্র্যান্সি’, ‘স্যাচুরেশন’, ‘কন্ট্রাস্ট’ আলাদাভাবে ঠিক করতে পারেন – যা লাইটরুমের মতো! সূর্যাস্তের রং আরও গাঢ় করুন, ছায়ার ডিটেইল ফিরিয়ে আনুন।
- ‘রিটাচ’ টুল (প্লাস (+) আইকন): ছোটখাটো দাগ, তিল, বিদ্যুতের তার সরানোর জন্য জাদুর মতো কাজ করে! পর্যটন স্পটের ছবি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষ সরাতেও ব্যবহার করা যায় (যদি তারা প্রান্তে থাকে)।
অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচার: শুধু বিশেষ চাহিদার জন্য নয়, সবার জন্য সুবিধা! (H2)
অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচারগুলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ডিজাইন করা হলেও এর অনেকগুলোই সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
- ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ডস: ফোকাস বাড়াতে শব্দের কার্পেট (H3)
কাজে মনোযোগ দিতে চান? আশেপাশের বিরক্তিকর শব্দ ড্রাউন আউট করতে প্রাকৃতিক শব্দ শুনুন।সেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > অডিও/ভিজ্যুয়াল > ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ডস
-এ যান।- এটি চালু করুন।
- ‘সাউন্ড’ সিলেক্ট করুন: বৃষ্টি, সমুদ্র, সাদা শব্দ, উজ্জ্বল শব্দ, গাঢ় শব্দ।
- ভলিউম ঠিক করুন। এই শব্দগুলো অন্য মিডিয়া (গান, ভিডিও) বা কলের সময়ও চলতে থাকবে। এটি স্টাডি সেশনে, অফিসের ওপেন স্পেসে বা রাতে ঘুমানোর আগে দারুণ কাজ করে। ঢাকার যানজট বা নির্মাণশব্দ ভুলে যাওয়ার সহজ উপায়!
- লাইভ ক্যাপশন (iOS 16+): কলের সময় কথোপকথন লেখা দেখুন (H3)
শোরগোল পরিবেশে, শ্রবণ সমস্যায়, বা শুধু কথোপকথন নথিভুক্ত করতে চাইলে এটি অসাধারণ।সেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > লাইভ ক্যাপশন (iOS 16+)
বাসেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > শোনা > লাইভ ক্যাপশন (iOS 17+)
-এ যান (ভার্সন ভেদে)।- ‘লাইভ ক্যাপশন’ চালু করুন।
- এখন ফোন কল, ফেসটাইম কল, এমনকি ভয়েস কল বা ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপে (যেমন মেসেঞ্জার, জুম – কিছু সাপোর্ট করে) কথা বলার সময়, স্ক্রিনে কথাগুলো রিয়েল-টাইমে ক্যাপশন হিসেবে দেখাবে! কথা শুনতে সমস্যা হলে বা স্পষ্ট বুঝতে না পারলে এটি দারুণ সহায়ক। কল রেকর্ডিংয়ের বিকল্প হিসেবেও ভাবা যেতে পারে (যদিও আইনি দিক বিবেচনা করুন)। অ্যাপলের মেশিন লার্নিংয়ের শক্তির প্রদর্শনী (Apple Machine Learning).
- ম্যাগনিফায়ার: আপনার পকেটে বর্ধিতকরণ কাচ (H3)
ক্যামেরা অ্যাপ নয়, এটি আলাদা একটি শক্তিশালী টুল।সেটিংস > অ্যাক্সেসিবিলিটি > ম্যাগনিফায়ার
-এ গিয়ে এটি চালু করুন। এটি একটি ‘অ্যাপ’-এর মতো কাজ করবে।- চালু করার শর্টকাট সেট করতে পারেন (অ্যাক্সেসিবিলিটি শর্টকাট, বা ব্যাক ট্যাপ দিয়ে!)।
- ম্যাগনিফায়ার চালু করলে এটি আপনার ক্যামেরাকে একটি শক্তিশালী ম্যাগনিফাইং গ্লাসে পরিণত করে। জুম করতে পারেন, কন্ট্রাস্ট ও কালার ফিল্টার যোগ করতে পারেন (রেস্টুরেন্টের মেন্যু, ওষুধের লেবেল, ইলেকট্রনিক্সের ছোট প্রিন্ট পড়ার জন্য আদর্শ), এমনকি ছবিও তুলতে পারেন। এটি সত্যিই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য তৈরি, কিন্তু রেস্টুরেন্টের ডিম লাইট মেন্যু পড়তে গিয়ে সকলেরই কাজে লাগে!
জেনে রাখুন (FAQs) (H2)
- প্রশ্ন: এই “গোপন” ফিচারগুলো কি সব আইফোন মডেল ও iOS ভার্সনে কাজ করে?
উত্তর: বেশিরভাগ ফিচারই আধুনিক আইফোন মডেল (আইফোন ৮/এক্স এবং পরেরগুলো) এবং সাম্প্রতিক iOS ভার্সনে (iOS 15, 16, 17) কাজ করবে। কিছু ফিচার (যেমন লাইভ ক্যাপশন – iOS 16+, ব্যাক ট্যাপ – iPhone 8/X পরবর্তী মডেল) নির্দিষ্ট ভার্সন বা হার্ডওয়্যার চাহিদা রাখে। সর্বদা আপনার ডিভাইসটি সর্বশেষ iOS ভার্সনে আপডেট রাখার চেষ্টা করুন (সেটিংস > সাধারণ > সফটওয়্যার আপডেট
)। পুরনো মডেল বা ভার্সনে কিছু অপশন অনুপস্থিত থাকতে পারে। - প্রশ্ন: ব্যাক ট্যাপ ব্যবহার করলে কি পকেটে থাকা অবস্থায় ভুলবশত কোনো কাজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, সম্ভাবনা আছে, বিশেষ করে যদি খুব সংবেদনশীল সেটিং থাকে বা পকেটে অন্য জিনিসের ঘর্ষণ লাগে। এটি কমাতে, আপনি শুধু ‘ডাবল ট্যাপ’ বা ‘ট্রিপল ট্যাপ’-এর মধ্যে একটি সেট করুন, দুটোই নয়। অথবা, এমন অ্যাকশন বরাদ্দ করুন যা বিপজ্জনক বা বিরক্তিকর নয় (যেমন অ্যাপ স্যুইচার দেখা বা টর্চ অন/অফ)। পকেটে রাখার আগে ডিভাইস লক করাও সাহায্য করে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায়, ‘ট্রিপল ট্যাপ’ (যা করা তুলনামূলকভাবে কঠিন) স্ক্রিনশটের জন্য এবং ‘ডাবল ট্যাপ’ ফাঁকা রাখা নিরাপদ। - প্রশ্ন: “হিড মাই ইমেইল” ব্যবহার করলে কি সব ওয়েবসাইট বা অ্যাপে কাজ করে?
উত্তর: প্রায় সব জায়গাতেই কাজ করে, যেখানে আপনি সাধারণত আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস ইনপুট দেন (সাইন আপ, লগইন, নিউজলেটার সাবস্ক্রিপশন ইত্যাদি)। তবে কিছু অ্যাপ বা ওয়েবসাইট, বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সরকারি পোর্টাল, “প্রাইভেট ইমেইল রিলে” সার্ভিস ডিটেক্ট করে ব্লক করতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার মূল ইমেইল ব্যবহার করতে হতে পারে। এটি সাধারণত ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের বেশিরভাগ জনপ্রিয় সাইট ও অ্যাপে এটি সুষ্ঠুভাবে কাজ করে। - প্রশ্ন: লাইভ ক্যাপশন (কলের সময় লেখা দেখা) ফিচারটি কি বাংলা ভাষায় কাজ করে?
উত্তর: iOS 17 পর্যন্ত, লাইভ ক্যাপশন প্রাথমিকভাবে ইংরেজি ভাষার জন্যই অপ্টিমাইজড। এটি ইংরেজি কথোপকথনকে সবচেয়ে ভালোভাবে ক্যাপশন করতে পারে। বাংলা বা অন্যান্য ভাষায় এর কার্যকারিতা এখনও সীমিত বা অনুপস্থিত হতে পারে। অ্যাপল ভবিষ্যতের আপডেটে আরও ভাষার সমর্থন যোগ করতে পারে। বাংলা কথোপকথনের জন্য এটি এখনও নির্ভরযোগ্য নয়। - প্রশ্ন: “সেফটি চেক” ব্যবহার করলে কি অপরপক্ষকে কোনো নোটিফিকেশন যায়?
উত্তর: না, এটিই এই ফিচারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। যখন আপনি সেফটি চেক ব্যবহার করে কারো সাথে লোকেশন শেয়ারিং বন্ধ করেন বা ফটো শেয়ারিং বন্ধ করেন, কোনো নোটিফিকেশন বা অ্যালার্ট সেই ব্যক্তির কাছে যায় না। এটি নীরবে এবং গোপনে কাজ করে। শুধুমাত্র ‘জরুরি রিসেট’ অপশনটি ব্যবহার করলে (যা একসাথে অনেক কিছু বন্ধ করে দেয়), যদি লোকেশন শেয়ারিং বন্ধ হয়, তাহলে ফাইন্ড মাই অ্যাপে সেই ব্যক্তি দেখতে পাবেন যে আপনি আর লোকেশন শেয়ার করছেন না, কিন্তু কেন বা কখন তা বন্ধ করলেন তার কোনো নোটিফিকেশন পাবেন না। এটি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডিজাইন।
আপনার আইফোনটি কেবল একটি ডিভাইস নয়, এটি সম্ভাবনার একটি সুনির্দিষ্ট ভাণ্ডার। আজ আমরা যে আইফোনের অজানা ফিচার ও জীবন সহজ করার গোপন টিপস গুলো জানলাম, সেগুলো এই ভাণ্ডারের দরজা খুলে দিতে পারে। ব্যাটারিকে দীর্ঘস্থায়ী করুন নিরাপদে, আপনার গোপনীয়তাকে সুদৃঢ় প্রাচীরে ঘিরে রাখুন, কাজের গতি বাড়িয়ে সময় বাঁচান, আরও সুন্দর ছবি তুলুন, এমনকি আপনার দৈনন্দিন অভিজ্ঞতাকে নতুন মাত্রা দিন – শুধু এই লুকানো সরঞ্জামগুলোর সঠিক ব্যবহার জানার মধ্য দিয়েই। প্রতিটি টিপসই যেন আপনার ডিভাইসের ভেতর লুকিয়ে থাকা একটি ছোট্ট সুপারপাওয়ার। এগুলোকে আয়ত্ত করুন, পরীক্ষা করুন, এবং আপনার রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করুন। দেখবেন, কতটা সহজ হতে পারে আপনার ডিজিটাল জীবন। আজই আপনার সেটিংস অ্যাপটি খুলুন, একটু ঘুরে দেখুন, আর শুরু করুন আপনার আইফোনকে তার পূর্ণ ক্ষমতায় ব্যবহার করার যাত্রা!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।