আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড সমর্থিত ৮৫টির বেশি স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। সিরিয়া সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নিতে গতকাল শুক্রবার এই অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাইডেন বলেন, ‘আমরা আজ থেকে জবাব দেওয়া শুরু করেছি। আমাদের নির্ধারণ করা সময় অনুযায়ী নির্ধারিত জায়গাগুলোতে হামলা চলবে।’
এ সময় মধ্যপ্রাচ্য কিংবা বিশ্বের কোথাও যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত চায় না বলেও দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে যারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতে চায়, তাদের সতর্ক করে বাইডেন বলেন, ‘কোনো মার্কিন নাগরিকের ক্ষতি করলে আমরা তার জবাব দেব।’
রয়টার্স, এনডিটিভিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত রবিবার সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে তিন মার্কিন সেনা নিহত হন। ওই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করে আসছে ওয়াশিংটন।
হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউজ। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ চায় না। কিন্তু কোনো মার্কিন নাগরিকের ক্ষতি করলে তার জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে।
বিবৃতিতে বাইডেন আরও বলেন, ‘গত রোববার জর্ডানে ইরানের অভিজাত বাহিনী আইআরজিসির ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সৈন্য প্রাণ হারান। আজ সকালে আমি ডোভার এয়ারফোর্স বেসে সেসব সাহসী সৈন্যের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনে অংশ নিয়েছিলাম। তাদের প্রত্যেকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘বিকেলে আমার নির্দেশনায় ইরাক ও সিরিয়ায় একাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। স্থাপনাগুলো আইআরজিসি ও তাদের সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে ব্যবহার করতো।’
এদিকে ইরাক-সিরিয়ায় ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া বা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি তেহরান। ধারণা করা হচ্ছে, এসব হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে তারা।
তবে যেকোনো হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার জন্য ইরান প্রস্তুত বলে গত বুধবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আইআরজিসির প্রধান হুসাইন সালামি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ইরাকের রাজাধানী বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ইরান। গত রবিবার জর্ডানে ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিন সৈন্য নিহত এবং আরও ৪০ জনের বেশি আহত হন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর ওপর এটিই প্রথম প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা।
রবিবারের ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যানস’ নামে ইরাকের একটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এর পেছনে ইরানের হাত ছিল। যদিও হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, এই মুহূর্তে ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.