আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ইরানের উপর আমেরিকা ও ইসরায়েলের যৌথ হামলার পর, বিশ্বজুড়ে আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। বিশেষজ্ঞদের মতে, চলমান এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমেরিকা ও ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে এআই-নির্ভর প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে। এই এআই চালিত কৌশলের মধ্যে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় লক্ষ্য নির্ধারণ, উন্নত সেন্সর নেটওয়ার্ক এবং অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি—যার ফলে সংকটকালীন সময়ে দ্রুত ও সঠিক প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হচ্ছে।
‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই সামরিক অভিযানে একটি নির্ভুল, এআই-নির্ভর হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা এবং পারমাণবিক গবেষণা ও কার্যক্রম কেন্দ্রসমূহ। এই প্রক্রিয়ায় গুপ্তচর কার্যক্রম, যুদ্ধ পরিকল্পনা ও ভিডিও বিশ্লেষণের মতো ক্ষেত্রে আমেরিকার তৈরি এআই ইঞ্জিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, “আমরা দ্বিতীয় কোনও হলোকাস্ট হতে দেব না”—এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ইরানকে পারমাণবিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে না দিতেই তারা এমন প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও বলেন, “ইরান ইউরেনিয়াম বোমা তৈরির একদম শেষ ধাপে রয়েছে, তাই এই হামলা ছিল অত্যাবশ্যক।”
বিশ্লেষকদের মতে, এআই-নির্ভর যুদ্ধ কৌশল এক ধরনের দ্বিমুখী বিপদ তৈরি করছে। বিশেষ করে ‘স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ’ পদ্ধতি ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ এআই-নির্ভর সিস্টেম যদি সুসংহত নীতিমালার বাইরে চলে যায়, তবে তা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশ্বনেতারা ইতিমধ্যেই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছেন এবং নতুন কৌশল ও নীতিমালা তৈরির চিন্তাভাবনায় ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতে, আংশিকভাবে বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
অন্যদিকে, ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে—যদি তাদের বিরুদ্ধে চালানো এআই-নির্ভর হামলা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়, তবে তারাও উপযুক্ত জবাব দেবে। তাদের বক্তব্য, যদি আমেরিকা বা ইসরায়েলের কোনও এআই-চালিত সিদ্ধান্ত যুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়, তবে ইরান এমন প্রতিক্রিয়া জানাবে, যা বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি করে দিতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।