আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ইরানের ড্রোন উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পশ্চিমা বিশ্ব। কিন্তু তাতে দমে যাওয়ার পাত্র নয় ইসলামিক দেশটি। পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবার নাকি আরও ভয়ংকর হাতিয়ার বানিয়েছে তেহরান। জানা গিয়েছে, কামিকাজে ড্রোনটিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে। যা শত্রুপক্ষের উপর আরও শক্তিশালী আঘাত হানতে সক্ষম।
দিন চারেক আগেই আমেরিকা-সহ পশ্চিমের একাধিক দেশ ইরানের ড্রোন উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওয়াশিংটনের অভিযোগ ছিল, রুশ ফৌজকে কামিকাজে ড্রোন দিচ্ছে তেহরান। যা দিয়ে ইউক্রেনের বুকে হামলা চালাচ্ছে মস্কো। এমনকি একাধিক জঙ্গি সংগঠনের হাতেও নাকি এই যুদ্ধাস্ত্র তুলে দিচ্ছে ইরান। তাই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও পরোয়া না করে কামিকাজে ড্রোনটিকে আরও অত্যাধুনিক করে তুলেছে ইসলামিক রেভেলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। যা সেদেশের সামরিক বাহিনীর একটি শাখা।
ইরানের সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ সূত্রে খবর, এই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে কোম্পানির বদলে আইআরজিসির ইঞ্জিনিয়াররা ‘আত্মঘাতী’ কামিকাজে ড্রোন তৈরি করছেন। যা নির্ধারিত নিশানায় আঘাত হেনে ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। কয়েকশো কিলোমিটার দূরে হামলা চালাতে পারে এগুলো। সুদূর ঘাঁটি থেকে বসে এই ড্রোনের মাধ্যমে শত্রুর উপর নজর রাখা যায়। তার পর নিশানার দেখা মিললেই আকাশ থেকে বজ্রের মতো আছড়ে পরে খেল খতম করে দেয় এই অস্ত্র। এই হাতিয়ার রাশিয়ার ল্যানসেট ড্রোনের সমকক্ষ।
কিন্তু কী এই কামিকাজে ড্রোন? কেনই বা এটি এত ভয়ংকর? ‘কামিকাজে’ শব্দটি জাপানি। এর অর্থ হচ্ছে ‘আত্মঘাতী’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি ফৌজের বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ শাখাকে বলা হতো ‘কামিকাজে স্পেশ্যাল অ্যাটাক ইউনিট’। এদের কাজ ছিল শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজে আত্মঘাতী হামলা চালানো। ‘কামিকাজে’ পাইলটরা বারুদ ঠাসা প্লেন নিয়ে মার্কিন রণতরীগুলির উপর আছড়ে পড়ার চেষ্টা করতেন। এভাবে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার প্রয়াস করতেন তারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরে আমেরিকা ও জাপানের নৌবাহিনীর লড়াইয়ের সময় কামিকাজে হামলা করতে দেখা যেত জাপানি পাইলটদের।
এবার ইউক্রেনে চালকবিহীন বারুদ ঠাসা কামিকাজে বা আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। গত দুবছরে বহুবার এই হাতিয়ার ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে মস্কোর বিরুদ্ধে। কিয়েভের অভিযোগ, রাশিয়াকে এই কামিকাজে ড্রোন দিচ্ছে ইরান। যার নাম ‘শাহেদ-১৩৬’। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি, এমন প্রায় ২ হাজার ৪০০টি ড্রোন কিনেছে মস্কো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।