মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী আশরাফুজ্জামান ফরিদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
মানিকগঞ্জ-১ (শিবালয়-দৌলতপুর-ঘিওর) আসনের সাবেক এমপি সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদের পিএস জুয়েল রানার বোনের জামাই পরিচয়ে এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফজলে বারীর যোগসাজশে দুর্নীতিতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেন ফরিদ। গত মাসের শেষের দিকে বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি নেন ডাঃ ফজলে বারী। তবে অদৃশ্য কারণে এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তার দুর্নীতির সগযোগী আশরাফুজ্জামান ফরিদ। এ নিয়ে সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফজলে বারী যোগদানের পর থেকে নানা অপকর্ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আর এর সাথে যোগ দেন কেরানিক আশরাফুুজ্জামান ফরিদ। তাদের দুই জনের যোগসাজে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের এমএইচভিদের বেতন থেকে আনুমানিক তিন লাখ টাকা, জিপ গাড়ির জ্বালানি বাবদ দুই বছরে লক্ষাধিক টাকা, হাসপাতাল পরিস্কার বাবদ গত দুই বছরে দুই লাখ টাকা, উপজেলায় কমিনিউটি ক্লিনিক গুলো থেকে বিভিন্ন বরাদ্দে তিন লাখ টাকা, এমএসআর টেন্ডার বাবদ বিশ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন বরাদ্দ লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে।
এছাড়া উপজেলার ২২টি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ১২ হাজার টাকা করে বাৎসরিক খরচ বাবদ বাজেট থাকলেও সেখান থেকে তিন হাজার টাকা দিয়ে বাকি নয় হাজার করে প্রায় দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। অনিয়ম-দুর্নীতি করে আত্মসাৎ করা টাকা দিয়ে মানিকগঞ্জ শহরে বিলাসবহুল তিন তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন ফরিদ।
ফরিদের বিষয়ে হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এমন কোন দুর্নীতি নাই যা ফরিদ করেনি। এই ছোট চাকরি করে মানিকগঞ্জ শহরে তিনি বিলাসবহুল তিন তলা বাড়ি বানিয়েছে। হাসপাতালের নার্স, ডাক্তার, কর্মচারীরা ফরিদের কাছে জিম্মি ছিল। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পেত না। কারণ তখনকার এমপির পিএসের আত্মীয় হিসেবে প্রভাব দেখাতো সে। তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে কেরানিক আশরাফুজ্জামন ফরিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নির্দেশ পালন করেছি মাত্র। এগুলোর সাথে আমি জড়িত না । সব করেছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে স্যার। পরে তিনি ডাঃ ফজলে বারীর সাবেক কর্মস্থলে নানা দুর্নীতির বিষয়ে নানা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত নিউজ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে ডাঃ ফজলে বারী বলেন, অব্যাহতির বিষয়টি সঠিক। দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ মোকছেদুল মোমিন বলেন, শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেরানি ফরিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তদন্ত শুরু করা হবে। তদন্ত শেষে রির্পোট অনুযায়ী প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।