ধর্ম ডেস্ক : চিংড়িকে যেহেতু আমরা মাছই মনে করি, তা খাওয়া হারাম হবে না। অনেকে বলেন, চিংড়ি খাওয়া মাকরুহ, কেউ বলেন, হারাম। এ বিভেদ কেনো? এক্ষেত্রে মূলনীতি হল, জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী খাওয়া জায়েয নেই। কেননা জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছই একমাত্র উৎকৃষ্ট হালাল বস্তু, আর বাকিগুলো নিকৃষ্ট ও হীন বস্তু। (তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৩/৫১১)
চিংড়ি পুকুরের হোক বা সমুদ্রের তা মাছ কিনা–এ নিয়ে ফকিহদের মাঝে ব্যাপক মতপার্থক্য আছে। তাই অনেকে এটিকে হালাল বলেন, আবার অনেকে এটিকে মাকরূহে তাহরিমি বলেন। আবার অনেকে এটাকে মাকরূহে তানযিহি তথা না খাওয়া উত্তম বলেছেন। (কিতাবুন নাওয়াযিল ১৪/৪১৩)
বস্তুত প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে চিংড়ি হলো আর্থোপোডা পর্বের অন্তর্ভুক্ত কিন্তু মাছ কর্ডাটা পর্বের অন্তর্ভুক্ত। চিংড়ির দেহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত ও সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ বিদ্যমান, যা কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের মধ্যে দেখা যায় না। এ কারণে তাদের মতে চিংড়িকে মাছ বলা হলেও মাছ নয়।
তবে চিংড়ি কোনো মাছ না হলেও যারা এটা খায় তারা একে কোনো পোকা হিসেবে খায় না; বরং মাছ হিসেবেই খায়, তাই ফকিহদের এক বিশাল অংশ একে মাছ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, এটা হারাম হতে পারে না; বরং এটি হালাল।
চিংড়ির শরীরে কাঁটা না থাকা সত্ত্বেও তা খাওয়া কীভাবে বৈধ হয়?
কাঁটা থাকা না থাকা মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হল, মাছ হওয়া। হানাফী মাযহাব মতে নদ নদী এবং সমুদ্রের শুধু মাছ খাওয়া জায়েজ। অন্য প্রাণী খাওয়া জায়েজ নয়। এখন প্রশ্ন হল, কোনটা মাছ আর কোনটা মাছ না এটি কীভাবে নির্ণীত হবে?
এর মূল বিষয় হল, জেলে এবং নদীর প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে যেগুলো মাছের মাঝে গণ্য। সেগুলো মাছ হিসেবে স্বীকৃত হবে। আর যে-সব তাদের মতে মাছ নয়, বরং সামুদ্রিক প্রাণী সেসব খাওয়া যাবে না।
সেই হিসেবে জেলে ও সমুদ্র প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে চিংড়ি মাছের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু স্কুইড, অক্টোপাশ বা কাঁকড়াকে কেউ মাছ বলে না। বরং এসব সামুদ্রিক প্রাণী। এ কারণে চিংড়ি খাওয়াতে বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু কাঁকড়া, স্কুইড, অক্টোপাশ ইত্যাদি মাছ না হওয়ায় তা ভক্ষণ করার অনুমতি দেয়া হয় না। (হেদায়া ৪-৪৪২, তাবয়িনুল হাকায়েক ৬-৪৬৯, রদ্দুল মুহতার ৯-৪৪১)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।