জুমবাংলা ডেস্ক : ফেসবুকে নিত্যপণ্যের ‘সেনাবাহিনীর নির্ধারিত দর’ বলে একটি তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে। সেই তালিকায় বিশ্বাস করে বাজারে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরেছেন তেঁজকুনিপাড়ার বাসিন্দা অমিত পাল ও অপরাজিতা পাল দম্পতি।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) তারা জানান, এই তালিকার দামের সঙ্গে বাজারদরের কোনো মিল নেই। এ নিয়ে বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে তর্কাতর্কিও হচ্ছে।
এর আগে ফেসবুকে দাবি করা হয়েছে, আলুর দর ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির দর ঠিক করা হয়েছে ১৪০ টাকা কেজি।
বাস্তবে কারওয়ান বাজার ও তেঁজকুনিপাড়া ঘুরে দেখা যায়, সবজি, ডিম ও মুরগির দাম কমেছে। তবে আলু, গরুর মাংস ও চালের দাম আগের জায়গায় রয়েছে। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। কারওয়ানবাজারে কাঁকরোল ও বেগুন ৬০ টাকা, টমেটো ১৩০ টাকা, বরবটি ও করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল, ঢ্যাঁড়স ও চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা কেজি এবং লাউ আকারভেদে একেকটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা প্রতি হালি ডিম, সাদা ৪৪ টাকা ও হাঁসের ডিম ৬৫ টাকা হালি। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে, খাসির মাংস ১১০০ টাকায়।
ফেসবুকের তালিকা দেখে এক কেজি খাসির মাংস কিনতে তেঁজকুনিপাড়া বাজারে গিয়েছিলেন অর্ণব। কিন্তু গিয়ে দেখেন দাম ১১০০ টাকা, পরে আধা কেজি কিনেই ফিরতে হয়েছে। অমিত পাল-অপরাজিতা দম্পতিও কারওয়ান বাজারে গিয়ে এভাবেই ধোঁকা খেয়েছেন।
তিনি বলেন, ফেইসবুকে দাম কমার তথ্য কারা ছড়ায় বা কেন ছড়ায় সেটা বুঝলাম না। এখন বুঝলাম দাম কমার প্রচারণা গুজব। পাইকারি দরেই পাঁচ কেজি আলু কিনতে হয়েছে ২৮০ টাকায়, যা কেজিতে পড়েছে ৫৬ টাকা।
অপরাজিতা বলেন, অনেকের পোস্ট দেখছিলাম দাম কমেছে। আলুর দাম ৪০ এ নেমেছে। কিন্তু বাজার সেই আগের মতই আছে। মনে হচ্ছে ছাত্রদের আন্দোলন করে এবার বাজার নিয়ন্ত্রণ করা লাগবে। না হয় ব্যবসায়ীরা দাম কমাবে না। সেই চেষ্টাও চলছে। সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এবার বাজারে বাজারে গিয়ে ছাত্রদের প্রতিনিধি দল পণ্যমূল্য যাচাই করছেন।
অন্যদিকে, তেঁজগাওয়ের তেজকুনিপাড়া এলাকায় মুদি দোকানি শরীফ মাহমুদ বলেন, পণ্যের দাম কমেছে এসব কথাবার্তা ফেসবুক নাকি উড়তেছে। কাস্টমাররা আইসা তর্ক করে। কয় আমিই নাকি দাম বেশি চাই। আসলে দাম তো কমেই নাই।
ফেসবুকে যেসব পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে, তার একটিতে বরিশালে সেনাবাহিনীর মোবাইল নম্বরও দেয়া আছে। সেই নম্বরে কল করা হলে নিজেকে ক্যাম্প কমান্ডার মেজর রাশেদ পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, বাজারের মূল্য তালিকা নিয়ে যে পোস্টার হয়েছে তা আমরাও শুনেছি। তবে দ্রব্যমূল্যের তালিকা এটা আমাদের দেয়া না।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানও এদিন শান্তিনগর বাজারে যান। তিনি পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মূল্য ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেউ চাঁদাবাজিসহ হিডেন চার্জ নিতে না পারে, সেই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।