ধর্ম ডেস্ক : ইসলাম যৌথ ব্যবসাকে অনুমোদন করে। শরিয়তে যৌথ ব্যবসার যেসব পদ্ধতি অনুমোদিত তার একটি হলো মুদারাবা। মুদারাবার মূল কথা হলো একজন পুঁজি দেবে, অন্যজন শ্রম দেবে। অতঃপর অর্জিত মুনাফা চুক্তি অনুসারে উভয়ে ভাগ করে নেবে।
মুদারাবা চুক্তি বৈধ হওয়ার নীতিমালা ও শর্ত
মুদরাবা চুক্তি বৈধ হওয়ার জন্য শরিয়তের মৌলিক কয়েকটি শর্ত হলো—
১. মুদারাবার পুঁজি নগদ অর্থ হওয়া আবশ্যক। পুঁজি পণ্য, ঋণ, স্থাবর সম্পত্তি ও আসবাব হলে মুদারাবা চুক্তি শুদ্ধ হবে না।
২. চুক্তির সময় পুঁজি এমনভাবে নির্ধারণ ও নির্দিষ্ট করা আবশ্যক, যেন পরবর্তী সময়ে ঝগড়া-বিবাদ তৈরি না হয়। সুতরাং পুঁজিদাতা হয়তো পুঁজি শ্রমদাতার হাতে অর্পণ করবে অথবা ইঙ্গিত প্রদানের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করে দেবে।
৩. মুদারাবা চুক্তির সময় পুঁজি পুরোপুরিভাবে শ্রমদাতার হাতে ন্যস্ত করা আবশ্যক। পুঁজির ওপর পুঁজিদাতাদের কোনো প্রকার কর্তৃত্ব ও হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না।
৪. পুঁজিদাতা কোনো প্রকার শ্রম দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। যদি পুঁজিদাতার শ্রমদানের শর্ত করা হয়, তবে মুদারাবা চুক্তি ফাসিদ হয়ে যাবে।
৫. মুদারাবা ব্যবসায় মুনাফা বণ্টন বাস্তবনির্ভর হতে হবে। কোনো এক পক্ষের জন্য সুনির্দিষ্ট অংশ নির্ধারণ করলে জায়েজ হবে না। যেমন— মূলধনের ১০ শতাংশ। শ্রমদাতা কেবল অর্জিত মুনাফার অংশ পাবে। মূলধনে তার কোনো অংশ থাকবে না।
৬. মূলধনে শ্রমদাতার অংশ শর্ত করলে চুক্তি ফাসিদ হয়ে যাবে।
৭. যদি মুদারাবা ব্যবসায় লোকসান হয়, তবে প্রথমে লভ্যাংশ থেকে কর্তন করা হবে। লভ্যাংশ থেকে লোকসান পূরণ না হলে পুঁজি থেকে তা কর্তন করা হবে। পুঁজিদাতা এই দায় বহন করবে।
৮. শ্রদদাতার ওপর লোকসানের দায় চাপানো জায়েজ নেই। লভ্যাংশে ক্ষতিপূরণ না হলে পুঁজি থেকে তা পূরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শ্রমদাতার শ্রম মূল্যহীন বিবেচিত হবে।
ভারতে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণার দাবি, ৩৩ দিনে না মেনে নিলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
৯. তবে যদি এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে লোকসানের জন্য শ্রমদাতা দায়ী, তবে লোকসানের দায় তাকেও বহন করতে হবে।
১০. মুদাবারা চুক্তিতে মূলধন ও ব্যবসা হালাল হওয়া আবশ্যক। ব্যবসা পরিচালনায় শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয়— এমন কোনো শর্ত আরোপ করা যাবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ৪/২৮৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবি : ৩/৩৬৭; ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/৬৪৮)
মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।