কথা বলছি সাবরিনা আক্তারের। ঢাকার একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করেন তিনি। গত ঈদে তার চাচাতো বোন ফারজানা, যিনি সম্প্রতি পর্দা শুরু করেছেন, তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপু, তুমি তো এত আধুনিক, শিক্ষিতা, তবুও পর্দা করো কেন? এটা কি শুধুই একটা বাধ্যবাধকতা?” সাবরিনার চোখেমুখে এক অদ্ভুত আভা ফুটে উঠল। তিনি হাসলেন, “ফারু, এটা আমার জন্য বাধ্যবাধকতা নয়, বরং আল্লাহর দেওয়া এক অনন্য উপহার, আত্মসম্মানের বর্ম।” তার এই কথার গভীরে লুকিয়ে আছে ইসলামে পর্দা পালনের (ইসলামে পর্দা পালন) প্রকৃত দর্শন – যা শুধু পোশাকের আড়াল নয়, বরং চরিত্র, দৃষ্টি ও আচরণের এক পবিত্র বলয় তৈরি করে। আজকে আমরা এই পবিত্র বিধানের হিকমত, কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক নির্দেশনা, বাস্তব জীবনে প্রয়োগের কৌশল এবং সমাজে এর রূপান্তরমূলক ভূমিকা নিয়ে গভীরভাবে আলোকপাত করব।
ইসলামে পর্দা পালনের মৌলিক তাৎপর্য ও ঐশী হিকমত
ইসলামে পর্দা পালন কেবলমাত্র নারীর জন্য একটি নির্দেশনা নয়; এটি একটি সামগ্রিক জীবনব্যবস্থার অংশ, যা নারী ও পুরুষ উভয়কেই সমানভাবে আবদ্ধ করে। এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তাকওয়া (আল্লাহভীতি), ইহতিশাম (লজ্জা-শরম) এবং আত্মমর্যাদাবোধ। পর্দার মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজে শালীনতা রক্ষা করা, অবৈধ দৃষ্টি ও অবাঞ্ছিত সম্পর্কের দ্বার রোধ করা এবং ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নয়ন সাধন করা।
পবিত্র কুরআন ও হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে সরাসরি ইরশাদ করেন:
“মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা… আর মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে…” (সূরা আন-নূর: ৩০-৩১)
এই আয়াতে স্পষ্টতই দৃষ্টি সংযত করা এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত-কে পর্দার অপরিহার্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন:
“নারী যখন বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে, তার জন্য শুধু মুখ ও হাতের কব্জি ছাড়া শরীরের অন্য অংশ দেখানো জায়েজ নয়।” (আবু দাউদ)
আত্মিক শুদ্ধি ও সামাজিক সংহতির ভিত্তি
ইসলামী স্কলার ড. ফরিদ আহমেদ (অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) তার গবেষণায় উল্লেখ করেন, “পর্দা মুমিনের হৃদয়ে আল্লাহর উপস্থিতির অনুভূতি জাগ্রত করে। এটি একদিকে যেমন ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ পবিত্রতা বাড়ায়, অন্যদিকে সমাজে নৈতিক অবক্ষয় রোধ করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে। [তথ্যসূত্র: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জার্নাল অব রিলিজিয়ন অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার, ২০২৩]
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, গ্রামীণ নারীদের একটি বড় অংশ স্বাচ্ছন্দ্যে ও সম্মানের সাথে পর্দা পালন করলেও শহুরে জীবনে এর চর্চায় কিছুটা জটিলতা দেখা যায়। সাবরিনার মতো অনেকেই আধুনিকতার সাথে ইসলামী পরিচ্ছদকে (যেমন: আবায়া, জিলবাব, হিজাব) স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন যে পর্দা কখনোই পিছিয়ে পড়ার প্রতীক নয়।
পর্দা পালনের বিস্তারিত নিয়মাবলী: একটি ব্যবহারিক গাইড
পর্দা শুধু পোশাকের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি বহুমাত্রিক আমল, যার অন্তর্ভুক্ত:
১. দৃষ্টির পর্দা (গাজে-ই বাসার)
- নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অবশ্য পালনীয়।
- ইচ্ছাকৃতভাবে অপর লিঙ্গের দিকে তাকানো নিষিদ্ধ।
- প্রয়োজনবোধে দৃষ্টি প্রথমেই নিচু করে ফেলা উত্তম (সূরা নূরের নির্দেশনা অনুযায়ী)।
২. পোশাকের পর্দা (হিজাব/জিলবাব)
নারীর জন্য:
- শরীরের আকৃতি প্রকাশ না করে ঢিলেঢালা পোশাক পরা।
- শরীরের সমস্ত অংশ ঢেকে রাখা (মুখ ও হাতের কব্জি নিয়ে ফিকহী দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন; অধিকাংশ বিদ্বান পুরো শরীর ঢাকাকে ওয়াজিব মনে করেন)।
- পাতলা বা শরীর আঁটসাঁট পোশাক পরিহার।
- মাথা ও বক্ষ যথাযথভাবে আবৃত করা (সূরা আন-নূর: ৩১)।
পুরুষের জন্য:
- নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ অবশ্যই ঢেকে রাখা।
- মহিলাদের সামনে শরীরের এই অংশ খোলা হারাম।
- পোশাক যেন অহংকার বা প্রদর্শনেচ্ছা প্রকাশ না করে।
৩. আচরণ ও কথার পর্দা
- অপর লিঙ্গের সাথে অপ্রয়োজনীয় ও কোমল স্বরে কথা বলা নিষিদ্ধ (সূরা আল-আহযাব: ৩২)।
- হাঁটাচলা, চলাফেরায় শালীনতা বজায় রাখা।
- নামাজের সময় যেমন ভদ্রতা ও পবিত্রতা রক্ষা করা হয়, সামাজিক আচরণেও তা অনুসরণ করা।
৪. চলাফেরা ও সমাবেশে পর্দা
- প্রয়োজন ছাড়া একাকী ভ্রমণ এড়িয়ে চলা।
- মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ হারাম) ছাড়া সফর না করা।
- নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, শারীরিক স্পর্শ (হ্যান্ডশেক ইত্যাদি) থেকে বিরত থাকা।
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পর্দার প্রয়োগ (প্র্যাকটিক্যাল টিপস):
পরিস্থিতি | পর্দার নির্দেশনা |
---|---|
কর্মক্ষেত্রে | শালীন ও ঢিলেঢালা পোশাক (সালোয়ার কামিজ, আবায়া), পর্দাদার কেবিন ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় কথোপকথন এড়ানো |
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে | ইসলামিক ড্রেস কোড মেনে চলা, ল্যাবে/ক্লাসে শালীন আচরণ, গ্রুপ স্টাডিতে সীমা রক্ষা |
বাজারে/সরকারি কাজে | নিকাব/বুরকা ব্যবহার (ঐচ্ছিক তবে সতর্কতামূলক), মাহরাম সঙ্গী, দ্রুত কাজ শেষ করা |
সামাজিক অনুষ্ঠানে | আলাদা বসার ব্যবস্থা (পুরুষ-মহিলা বিভক্তি), শালীন পোশাক ও আচরণ বজায় রাখা |
পর্দা পালনে সাধারণ ভুল ধারণা ও তার জবাব
ভুল ধারণা ১: “পর্দা শুধু নারীর জন্য, পুরুষের বেলায় শিথিলতা”
বাস্তবতা: কুরআনের আয়াত (সূরা নূর: ৩০-৩১) স্পষ্টভাবে পুরুষদেরকে প্রথমে দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হিফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। রাসূল (ﷺ) পুরুষদেরও শালীন পোশাক পরতে উৎসাহিত করেছেন। পুরুষের পর্দা তার দৃষ্টি, আচরণ ও পোশাকের শালীনতায় নিহিত।
ভুল ধারণা ২: “পর্দা নারীকে গৃহবন্দী করে”
বাস্তবতা: ইসলাম নারীর শিক্ষা, কাজ ও সামাজিক অবদানকে কখনোই নিষিদ্ধ করেনি। সাহাবিয়াতগণ ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাদান, চিকিৎসা সেবা ও যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পর্দা রক্ষা করে। পর্দা বাধা নয়, বরং সম্মানের সাথে বাইরের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুরক্ষা কবচ। বাংলাদেশের অনেক ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষিকা পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে সফলতার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন।
ভুল ধারণা ৩: “পর্দা আধুনিকতা ও উন্নতির বিরোধী”
বাস্তবতা: পর্দা একটি আধ্যাত্মিক ও নৈতিক মূল্যবোধ। আধুনিকতার অর্থ শালীনতা ও নৈতিকতাকে বিসর্জন দেওয়া নয়। মালয়েশিয়া, তুরস্ক, মিশরের মতো অনেক দেশে শিক্ষিত নারীরা হিজাব পরিধান করে সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত আছেন। পর্দা ব্যক্তিত্বের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে না, বরং আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মানবোধ জাগ্রত করে।
পর্দার আত্মিক ও সামাজিক সুফল: একটি গভীর বিশ্লেষণ
আত্মিক উন্নয়ন:
- আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ: পর্দা পালন সরাসরি আল্লাহর আদেশ, তাই এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে।
- আত্মসংযম বৃদ্ধি: দৃষ্টি ও আচরণ সংযত করার মাধ্যমে নফস (কুপ্রবৃত্তি) দমন শক্তি বাড়ে।
- আত্মমর্যাদাবোধ: পর্দা নারী-পুরুষ উভয়কে বস্তুবাদী মূল্যায়নের ঊর্ধ্বে তুলে ধরে।
সামাজিক সুস্থতা:
- পরিবার কাঠামো মজবুত হয়: পর্দা অবৈধ সম্পর্ক রোধ করে দাম্পত্য জীবনে বিশ্বস্ততা ও সৌহার্দ্য বাড়ায়।
- যৌন হয়রানি রোধ: সমাজে শালীন পোশাক ও আচরণ যৌন অপরাধের হার কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ইসলামী পোশাক সংস্কৃতি যুক্ত সমাজে রাস্তাঘাটে নারীদের হয়রানির ঘটনা তুলনামূলক কম।
- সামাজিক শান্তি: নারী-পুরুষের মেলামেশায় সীমারেখা থাকায় সামাজিক অস্থিরতা হ্রাস পায়।
বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশনা “ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার” বইটিতে (পৃষ্ঠা ৮৭-১০৫) পর্দার সামাজিক প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পর্দা শুরু করার জন্য কার্যকরী পরামর্শ
১. নিয়ত শুদ্ধ করুন: একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পর্দা শুরু করুন, লোক দেখানো বা সামাজিক চাপে নয়।
২. ধীরে ধীরে শুরু করুন: হঠাৎ করে সবকিছু পালন কষ্টকর হতে পারে। প্রথমে পূর্ণ হিজাব, তারপর আচরণে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন।
৩. জ্ঞান অর্জন: পর্দার হুকুম, ফজিলত ও প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে জানুন। “ফিকহুস সুন্নাহ” (সাইয়েদ সাবিক রহ.) বা “হিজাব ইন ইসলাম” (ড. বিলাল ফিলিপস) এর বাংলা অনুবাদ অধ্যয়ন করুন।
৪. সহায়ক পরিবেশ: পরিবার ও বন্ধুদের বুঝিয়ে সহযোগিতা নিন। পর্দানশীন বান্ধবী বা গ্রুপের সাথে সংযুক্ত হোন।
৫. দোয়া ও ধৈর্য: আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। ভুল হলে হতাশ না হয়ে আবার চেষ্টা করুন।
ইমাম গাজ্জালী (রহ.) বলেছেন, “পর্দা কেবল দেহের আবরণ নয়; এটি হৃদয়ের পর্দা, যা অহংকার, হিংসা ও কুচিন্তা থেকে অন্তরকে রক্ষা করে।”
জেনে রাখুন: পর্দা সংক্রান্ত প্রায়শ জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
প্রশ্ন: পর্দা কি শুধু মুসলিম নারীদের জন্য? পুরুষদের কি কোন দায়িত্ব নেই?
উত্তর: না, একেবারেই না। পর্দার নির্দেশনা কুরআনে প্রথমে পুরুষদের দিয়েই শুরু হয়েছে (সূরা নূর: ৩০)। পুরুষের জন্য দৃষ্টি সংযত করা, শালীন পোশাক পরা এবং নারীর সাথে শালীন আচরণ করা ফরজ। নারীর পর্দা পুরুষের পর্দার পরিপূরক। উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই পর্দার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়।
প্রশ্ন: বাধ্য হয়ে বা পরিবারের চাপে পর্দা করলে কি সওয়াব হবে?
উত্তর: ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। শুরুতে যদি নিয়ত খাঁটি না-ও থাকে, তবুও পর্দা পালন করা অব্যাহত রাখুন। ইন শা আল্লাহ, একসময় অন্তরে এই ইবাদতের প্রতি ভালোবাসা ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হবে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও সম্পদের দিকে দেখেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে দেখেন।” (সহীহ মুসলিম)। নিয়তের উন্নতির জন্য দোয়া করুন।
প্রশ্ন: কর্মক্ষেত্রে পর্দা রক্ষা করা কঠিন, বিশেষ করে কর্পোরেট কালচারে। কী করণীয়?
উত্তর: এটি একটি বাস্তব চ্যালেঞ্জ। তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে:
- শালীন ও পেশাদার ইসলামিক ড্রেস (যেমন: লং টিউনিক/অ্যাবায়া ব্লাউজের সাথে) পরুন।
- কর্মক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে প্রমাণ করুন যে পর্দা আপনার কাজে বাধা নয়।
- প্রয়োজনে মানবসম্পদ বিভাগের সাথে শালীন পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কথা বলুন।
- অপ্রয়োজনীয় মেলামেশা বা প্রাইভেট মিটিং এড়িয়ে চলুন।
প্রশ্ন: পর্দা পালনকারী নারী কি চিকিৎসা সেবা দিতে বা নিতে পারবে?
উত্তর: অবশ্যই পারবে। জীবন-মরণের প্রয়োজনে পর্দার কিছু শর্ত শিথিলযোগ্য। মহিলা রোগীর চিকিৎসা মহিলা ডাক্তার করাই উত্তম। তবে প্রয়োজনে পুরুষ ডাক্তার শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় অংশের চিকিৎসা করতে পারবেন, এবং সেক্ষেত্রেও তৃতীয় ব্যক্তি (মাহরাম বা নার্স) উপস্থিত থাকা জরুরি। বিপরীতক্রমে, পুরুষ রোগীর চিকিৎসায় পুরুষ ডাক্তার উত্তম।
প্রশ্ন: মুখমণ্ডল (নিকাব) ঢাকাকে অনেকেই ফরজ বলে থাকেন, আবার কেউ কেউ বলেন মুস্তাহাব। সঠিক মত কোনটি?
উত্তর: এই বিষয়ে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।
- হানাফি, মালিকি, শাফিঈ মাজহাব: মুখ ও হাতের কব্জি ঢাকাকে ওয়াজিব মনে করেন না (যদিও ঢেকে রাখা উত্তম)।
- হাম্বলি মাজহাব: মুখ ও হাতের কব্জি ঢাকাকে ওয়াজিব মনে করেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, অধিকাংশ আলেম মুখ ঢাকাকে (নিকাব) মুস্তাহাব বা অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করেন, ফরজ হিসেবে নয়। তবে প্রত্যেকের উচিত নিজের অনুসৃত মাজহাবের ভিত্তিতে আমল করা এবং অহেতুক বিতর্কে না জড়ানো।
ইসলামে পর্দা পালন শুধু একটি বিধি-বিধান নয়; এটি ঈমানের জ্যোতি, আত্মসম্মানের প্রতীক এবং সমাজের নৈতিক ভিত্তিকে সুদৃঢ় করার এক শক্তিশালী হাতিয়ার। এটি আমাদেরকে শেখায় কীভাবে আল্লাহর ভয় ও নিজের মর্যাদাবোধকে সমুন্নত রেখে জীবনযাপন করতে হয়। সাবরিনা আক্তার, ফারজানা বা আপনিও – প্রতিটি মুমিন নারী-পুরুষের জন্য পর্দা হলো আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উৎকর্ষের পথে এক অবিচ্ছেদ্য সোপান। এটি আপনার ব্যক্তিত্বকে খর্ব করে না, বরং মহিমান্বিত করে। তাই অনিশ্চয়তা বা সমাজের চাপে পিছিয়ে না গিয়ে, জ্ঞানের আলোকে, আন্তরিকতায় এবং ধীরস্থিরভাবে ইসলামে পর্দা পালনের এই মহৎ আমলটিকে আপনার জীবনের অঙ্গীকারে পরিণত করুন। আপনার এই সিদ্ধান্তই পারে আপনার ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার এবং বৃহত্তর সমাজে ইতিবাচক বিপ্লব বয়ে আনতে। শুরু করুন আজই – আল্লাহর সাহায্য আপনার সাথে আছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।