ধর্ম ডেস্ক : আনুগত্য দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এর ওপর জগজ্জীবনের শৃঙ্খলা নির্ভরশীল। তবে সব আনুগত্য মানুষকে মুক্তি দেয় না, বরং কিছু কিছু আনুগত্য মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এ জন্য ইসলাম কিছু বিষয়ে যেমন আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছে, তেমনি কিছু বিষয়ে আনুগত্য পরিহার করতে বলেছে।
ইসলামে আনুগত্যের ভিত্তি
মুমিনের জীবনে আনুগত্যের ভিত্তি ঈমান ও ইসলাম। সুতরাং একজন মুমিন আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নিঃশর্ত আনুগত্য করবে এবং তাঁদের বর্ণিত নীতির আলোকে মানুষের আনুগত্য করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসুলের ও তোমাদের নেতাদের।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৯)
ফকিহ আলেমরা বলেন, নেতার আনুগত্য শরিয়তের আনুকূল্যের ওপর নির্ভরশীল।
‘স্রষ্টার অবাধ্যতার প্রশ্নে সৃষ্টির আনুগত্য নয়।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৩৬৯৬)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘পাপ কাজে কোনো আনুগত্য নেই, আনুগত্য কেবল নেক কাজে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭২৫৭)
যে আনুগত্য ঈমান নষ্ট করে
কোরআন ও হাদিসে আনুগত্যের ক্ষেত্রেও শিরক থেকে বেঁচে থাকতে বলা হয়েছে।
—সবাই স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় জাগতিকভাবে মাতা-পিতা, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের আনুগত্য করে। এ ধরনের জাগতিক আনুগত্য ইবাদত নয়। ফলে তা শিরকও নয়।
‘বিশ্বাসজাত’ অলৌকিক বা অপার্থিব আনুগত্য ইবাদত। এই প্রকারের আনুগত্য শিরক এবং তাতে মানুষের ঈমান নষ্ট হয়। এমন আনুগত্যের উদাহরণ পাদ্রি ও ধর্মযাজকদের প্রতি ইহুদি-খ্রিস্টানদের আনুগত্য। ইহুদি ও খ্রিস্টানরা দাবি করত যে তাওরাত ও ইনজিলের বিধি-বিধান বোঝা সাধারণ মানুষদের কাজ নয়। পাদ্রি ও পোপরা যা বলেন সেটিই চূড়ান্ত, তারা ‘অভ্রান্ত’।
পবিত্র আত্মার সহায়তায় তারা সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে ইলম লাদুন্নি (অলৌকিক জ্ঞান) লাভ করে। কাজেই তাদের ভুল হতে পারে না। তারা যা হালাল বলবে তা প্রকৃতই হালাল এবং তারা যা হারাম বলবে তা প্রকৃতই হারাম, যদিও তাওরাত ও ইনজিলের বক্তব্য ভিন্ন হয়। এরূপ আনুগত্যকে আল্লাহ শিরকের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের পণ্ডিতদের এবং সংসার-বিরাগী দরবেশ-বুজুর্গদের প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করেছে এবং মরিয়ম তনয় মাসিহকেও।’(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৩১)
‘মানুষ বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে চাইছে, এ আস্থা যারা নষ্ট করবে তারা ছাড় পাবে না’
ফলে কারো বক্তব্যকে কোরআন ও হাদিসের ঊর্ধ্বে মনে করা, তার কথাকে শরিয়তের দলিলের মতো আবশ্যক মনে করা এবং শরিয়তের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে কারো আনুগত্য করা ঈমানের পরিপন্থী। এমন আনুগত্য মানুষের ঈমন নষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।