জুমবাংলা ডেস্ক : মাদরাসা শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। সারা দেশের ফাজিল (স্নাতক) ও কামিল (স্নাতকোত্তর) পর্যায়ের মাদরাসা শিক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এ আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, মাদরাসার উচ্চশিক্ষা স্তরে চলছে নানা অব্যবস্থাপনা। কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ও অধ্যক্ষদের অভিযোগ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে কামিল (স্নাতকোত্তর) প্রথম পর্বে মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিন পড়িয়ে শেষ করে দেওয়া হয়েছে এক বছরের কোর্স। শ্রেণিকক্ষে প্রয়োজনীয় ক্লাস না নিয়ে, কোর্স শেষ না করে নেওয়া হয়েছে চূড়ান্ত পরীক্ষাও।
কোনো কোনো কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ অভিযোগ করে বলেছেন, আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা না করিয়ে শুধু সার্টিফিকেট দিচ্ছে। এভাবে মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা হচ্ছে। রোববার (২৬ মে) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকতারুজ্জামান।
প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, কামিল প্রথম পর্বে বিলম্ব ফি ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে এ বছর গত ২ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিলম্ব ফিসহ ভর্তি করা হয়েছে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর মাদরাসা প্রধানরা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে ফাইনাল সাবমিট দিয়েছেন ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অর্থাৎ কোনো কোনো মাদরাসায় কামিলে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে ২০ ফেব্রুয়ারির পূর্ব পর্যন্ত।
আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, কামিল প্রথম বর্ষে ক্লাস উদ্বোধন করা হয় ২৪ জানুয়ারি। তবে বিভিন্ন মাদরাসায় এই ক্লাস শুরু হয় ফেব্রুয়ারিতে। মাদরাসাগুলোতে সপ্তাহে ছুটি রয়েছে দুই দিন (শুক্র ও শনিবার)। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে ছুটি ছিল ১০ দিন। মার্চ মাসে ছুটি ছিল ১২ দিন। এ ছাড়াও ছুটি ছিল জুমআতুল বিদা, শবেকদর, ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের। সবমিলিয়ে অল্প কয়েকদিন ক্লাস করার পরেই ৩ মার্চ থেকে শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এই ফরম পূরণ চলে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। আর কামিল প্রথম পর্বের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু করা হয় ৫ মে থেকে।
খুলনার কয়রা উত্তরচক আমিনিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান এ বিষয় বলেন, মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। সেশনজট কমানোর কথা বলে ক্লাস না নিয়ে, পড়াশোনা না করিয়ে শুধু সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তিনি দাবি করেন ১৫ দিনও কামিল প্রথম পর্বের ক্লাস নেওয়া হয়নি। ফরম পূরণের পর পরীক্ষার্থীদের অন্তত দুই মাস সময় দিতে হয়। কিন্তু এই সময়ও দেওয়া হয়নি।
সরকারি মাদরাসাই আলিয়া, ঢাকার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবদুর রশীদ এ বিষয় বলেন, কামিলের শিক্ষার্থীরা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্রাশ প্রোগ্রাম নিয়ে দ্রুত ক্লাস শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছিল। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্লাস না হওয়ার কথা স্বীকার করে এ অধ্যক্ষ বলেন, ক্লাস যেভাবে হওয়া দরকার সেভাবে হয়নি আর এর প্রভাব পড়তে পারে ফলাফলে।
ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, কামিল প্রথম পর্ব পরীক্ষা দেওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা ফাজিলে সেশনজটে পড়েছিল। সেশনজট কমাতে এই দ্রুততম সময়ে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। উপাচার্যের দাবি, ফাজিল পরীক্ষা দিয়ে এই শিক্ষার্থীরা ফাজিলের ফল পাওয়ার আগেই, কামিলে ভর্তি হওয়ার আগেই কামিল প্রথম পর্বের ক্লাস করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।