আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েল, একটি সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশ, বর্তমানে একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। মধ্যাঞ্চলে শুরু হওয়া দাবানল নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেড় শতাধিক ফায়ারফাইটিং টিম মোতায়েন করা হয়েছে, কিন্তু প্রকৃতির এই ক্রোধ যেন সব প্রস্তুতিকে তুচ্ছ করে দিয়েছে। ইসরাইলের দাবানল বর্তমানে এতটাই তীব্র যে, রাজধানী জেরুজালেম পর্যন্ত হুমকির মুখে পড়ে গেছে।
Table of Contents
ইসরাইলের দাবানল: আগুনের তাণ্ডব থামছে না
ইসরাইলের দাবানল শুরু হয়েছে দেশের মধ্যাঞ্চলে, যেখানে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জ্বলছে আগুন। মাইলের পর মাইল এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আগুনের লেলিহান শিখা। ইতিমধ্যেই ২৮৯১ একর পাহাড়ি অঞ্চল ভস্মীভূত হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, তেল আবিব-জেরুজালেম প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
শুষ্ক আবহাওয়া ও ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিমি বেগে বইছে প্রবল বাতাস। যার ফলে আগুনের গতি ক্রমাগত বাড়ছে। এই তীব্র বাতাস ও গরমে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আরও নতুন এলাকায়। এই অবস্থায় মানুষজন আতঙ্কিত, এবং বহু বাসিন্দা তাদের বসতি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
অন্যদিকে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া তিনটি করে অগ্নিনির্বাপণ বিমান পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া, ইউক্রেন থেকেও সহায়তার আশ্বাস এসেছে। তিনি আরও বলেন, সুপার হারকিউলিস বিমান ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যা যেকোনো আবহাওয়ায় কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম।
ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা ও অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি
এই বিপর্যয় মোকাবেলায় ইসরায়েল কেবল নিজেদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করছে না। বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা আহ্বান করা হয়েছে। ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া ছাড়াও ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্র দেশ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে, পরিস্থিতির যে গতিপ্রকৃতি, তাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা পেলেও তা যথেষ্ট হবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
ইসরায়েলি সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তেল আবিব ও জেরুজালেম সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্তত ১০টি জনবসতি খালি করে দেওয়া হয়েছে। জনগণকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে, যে কোনো সময় তাঁদের সরে যেতে হতে পারে।
এছাড়া, বিশ্ববাজারের প্রভাব পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে, কারণ দাহ্য পদার্থ ও রফতানিযোগ্য পণ্যের চাহিদা এখন ক্রমাগত বাড়ছে।
দাবানলের প্রভাব শুধু প্রকৃতি নয়, অর্থনীতিতেও পড়তে শুরু করেছে। কৃষি ও পশুপালন খাতে বড় ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইতিহাসে এমন দাবানল ইসরায়েলে নতুন নয়
আগের দাবানল ও বর্তমান ঘটনার পার্থক্য
ইসরায়েল অতীতে কয়েকবার দাবানলের শিকার হয়েছে, তবে এবারের ইসরাইলের দাবানল অনেক বেশি ব্যাপক ও দীর্ঘস্থায়ী। অতীতে প্রায়ই গ্রীষ্মকালে দাবানল দেখা দিলেও, এবারের আগুনের ব্যাপ্তি এবং এর বিস্তার অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি।
গাজার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দাবি ও বিতর্ক
গাজার উপর দীর্ঘদিনের সামরিক আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে অনেকে ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ হিসেবেও উল্লেখ করছেন। যদিও এটি একটি আবেগপ্রবণ দৃষ্টিভঙ্গি, তবুও রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনায় এই বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে।
দাবানল মোকাবেলায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ
ইসরায়েল আগামী দিনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও উন্নত প্রযুক্তি ও প্রস্তুতির কথা ভাবছে। এই ধরনের দুর্যোগের জন্য আলাদা ফান্ড ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে তা কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
FAQs
- ইসরাইলের দাবানল কখন শুরু হয়?
এই দাবানল শুরু হয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ আগে দেশটির মধ্যাঞ্চলে। - এই দাবানলে কত একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?
ইতিমধ্যে ২৮৯১ একর পাহাড়ি অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। - ইসরায়েল কীভাবে দাবানল মোকাবেলা করছে?
১৫০টিরও বেশি ফায়ার টিম মোতায়েন করা হয়েছে এবং বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। - দাবানলের প্রভাব কী শুধু প্রাকৃতিক?
না, অর্থনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে বিশেষ করে কৃষি ও পশুপালন খাতে। - এই দাবানলের মূল কারণ কী?
শুষ্ক আবহাওয়া ও প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
বকেয়া বিল পরিশোধে সাফল্য, পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আদানির
এই মুহূর্তে ইসরাইলের দাবানল পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময়। দেশটি তার সামরিক দক্ষতা ছাড়াও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার দিকে তাকিয়ে আছে, কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই সব সময়ই কঠিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।