জুমবাংলা ডেস্ক : আলোচিত ৪০তম বিসিএস শেষ করতে প্রায় ৫ বছর সময় নিচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। একের পর এক জটিলতায় আটকে যাচ্ছে ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম। বিগত দেড় বছরেও ৪০তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। নিদারুণ কষ্টে থাকা নন-ক্যাডার প্রার্থীরা দ্রুত ফলাফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। তবে শিগগিরই নন-ক্যাডার পদে প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন।
চাকরি-প্রার্থীরা জানান, ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। ২০১৯ সালের ৩ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি হয় লিখিত পরীক্ষা। এরপর করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে কার্যক্রম। দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর গত বছরের ৩০ মার্চ এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, স্বল্প সময়ের মধ্যে নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করার কথা থাকলেও ৪০তম বিসিএসে তা হয়নি। প্রায় ৫ বছরের বেশি অতিবাহিত হলেও এই বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ না পাওয়ায় বিপাকে ছিল ৬ হাজারের বেশি প্রার্থী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পিএসসি ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রম শেষ না করেই ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে। যে কারণে ৪০তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ ৮ হাজার নন-ক্যাডার প্রার্থীর দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডারদের ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় ৪১তম বিসিএসের নন- ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্যে পদ বণ্টন নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে। ৪০তম বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করেই ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে পারত পিএসসি।
ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার মূল কারণ নন-ক্যাডার বিধিমালা। ২০২২ সালের ৩০ মার্চ ৪০তম বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশের পর আগের বিসিএসের মতো করেই রেজাল্ট তৈরির কাজ চলছিল। হঠাৎ করে বর্তমান কমিশন উল্লেখ করে যে, আগের প্রক্রিয়ায় ফলাফল প্রদান বিধিসম্মত নয়। তাই নতুন বিধির প্রয়োজন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নন-ক্যাডার প্রার্থীরা আগের নিয়মেই ফলাফল প্রদানের জন্য পিএসসি প্রাঙ্গণে টানা ১৭ দিন আন্দোলন করে। তাদের ছয় দফা দাবি উপেক্ষা করেই পিএসসি নতুন বিধি প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হয়, যা ২০২৩ সালের ১৪ জুন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। নানা দুর্ভোগের শিকার প্রার্থীরা তখন ভাবতে শুরু করেন যে, তাদের দুর্ভোগ এই বুঝি লাঘব হলো। কিন্তু না, বিধি বাম! সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত বিধি পাশ হওয়ার পরেও আবার নতুন করে সংকটে এই বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীরা।
গত ১৪ জুন বিধি গেজেট আকারে প্রকাশের পর ১৯ জুন ২০২৩ পিএসসি ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের কাছ থেকে পছন্দক্রম বাছাইয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যেখানে আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ৫ জুলাই ২০২৩। প্রার্থীরা প্রত্যাশা করছিল তাদের এই দীর্ঘ ভোগান্তির সমাপ্তি বোধহয় আর এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে। কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হয় নতুন জটিলতা। পিএসসি কর্তৃক প্রকাশিত পছন্দক্রম বিজ্ঞপ্তিতে ৪ হাজার ৪৭৮টি পদের মধ্যে এলজিইডির নবম গ্রেডের ১৫৬টি পদও ছিল। এলজিইডি এই ১৫৬টি পদ বাতিল চেয়ে চিঠি ইস্যু করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে রিট করে বসে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অল্প কিছু প্রার্থী।
যে কারণে পিএসসি দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকা এই পুরো বিসিএসের প্রায় ৮ হাজার নন-ক্যাডার প্রার্থীর দ্রুত ফলাফল প্রকাশে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। প্রার্থীদের অভিযোগ, পিএসসি এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিকতার প্রমাণ দিচ্ছে না, দিলে তারা যে কোনো উপায়ে দ্রুত রেজাল্ট দিতে পারে। প্রার্থীদের দাবি, এলজিইডির পদ ছাড়া হলেও ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করা হোক। কিন্তু পিএসসির কার্যক্রমে দ্রুততার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। যার ফলে পুনরায় হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়েছেন দীর্ঘ ভোগান্তির শিকার এই বিসিএসের সব নন-ক্যাডার প্রার্থী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।