আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর কাশীতে সুড়ঙ্গে আটকা পড়েছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। তাদের উদ্ধারে আনা হয়েছিল আধুনিক সব প্রযুক্তিও। তবে সেসবে শেষ পর্যন্ত কাজ হয়নি। জীবন বাঁচাতে ভারত সরকারে শেষ পর্যন্ত সেই সনাতন ‘ইঁদুরের গর্তের’ই দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
এই র্যাট হোল মাইনিং প্রক্রিয়াকে নয় বছর আগে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছিল ভারতের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি)। ১৭তম দিনে ইঁদুরের গর্ত খোড়ার কারিগররাই বের করে আনলেন এই শ্রমিকদের।
র্যাট-হোল মাইনিংয়ের জন্য দিল্লি থেকে দু’টি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হয়েছিল। যাতে ছিলেন মোট ১২ জন। তাদের সঙ্গে ছিল বেলচা, কুঠার ও অন্যান্য যন্ত্র। অক্সিজেন সরবরাহ বজায় রাখতে ব্লোয়ারও রাখা হয়। বিশেষজ্ঞ দলে থাকা রাজপুত রাই জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজের জন্য এক জন খননকাজ চালান, আর এক জন ধ্বংসস্তূপ সংগ্রহ করেন এবং তৃতীয় জন সেই সমস্ত পদার্থ ট্রলিতে তুলে সুড়ঙ্গের বাইরে বার করতে সাহায্য করেছেন।
মূলত মাটির নীচে সরু জায়গায় কয়লা সংগ্রহের জন্য ‘র্যাট হোল মাইনিং’ করা হয়। এক বার গর্ত খোঁড়ার পরে দড়ি কিংবা বাঁশের সিড়ি বেয়ে সেখানে প্রবেশ করেন খননকারীরা। র্যাট-হোল মাইনিংয়ে গর্তগুলি চওড়ায় চার ফুটেরও কম। খননকারীরা কয়লাস্তরে পৌঁছনোর পরে সুড়ঙ্গের পাশ থেকে খুঁড়তে শুরু করা হয়। উত্তোলন করা হয় কয়লা। বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে গোটাটাই হাতে করা হয়। মেঘালয়ে অপরিসর কয়লাক্ষেত্রে এ ভাবে খননকাজ চালানো হয়। যার পোশাকি নাম ‘সাইড কাটিং’। এক বার কয়লার সন্ধান পেলে ইঁদুরের মতো গর্ত খুঁড়ে প্রবেশ করেন খননকারীরা। এ ছাড়া ‘বক্স কাটিং’-এর মাধ্যমেও কয়লা সংগ্রহ করা হয়।
বিপদসঙ্কুল ও অবৈজ্ঞানিক বলে ২০১৪ সালে এই প্রক্রিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এনজিটি। কিন্তু তার পরেও নানা জায়গায় বিশেষত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে র্যাট-হোল মাইনিং চালু রয়েছে। ২০১৮ সালে অবৈধ খাদানে বন্যার জেরে আটকে পড়েন ১৫ জন। শুধুমাত্র দু’জনের দেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল। ২০২১ সালেও একই রকম পরিস্থিতিতে পাঁচ জন আটকে পড়েন। এ ক্ষেত্রে মিলেছিল তিন জনের দেহ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।