‘দাসত্ব’ থেকে ৩৩ ভারতীয় কৃষি শ্রমিককে মুক্ত করেছে ইতালির পুলিশ

কৃষি খামারের দাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইতালির পুলিশ জানিয়েছে, তারা এক কৃষি খামারের দাসের মতো কর্ম পরিবেশ থেকে ৩৩ জন ভারতীয় শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।

কৃষি খামারের দাস

উত্তরাঞ্চলীয় ভেরোনা প্রদেশের ওই খামার থেকে তাদের উদ্ধার করার পর তাদের দুই কথিত অপব্যবহারকারীর কাছ থেকে ৫৪৫৩০০ ইউরো জব্দ করা হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, জুনে ফল তোলার কাজে নিয়োজিত এক ভারতীয় শ্রমিকের হাত দুর্ঘটনাবশত যন্ত্রপাতি দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তার মৃত্যু হলে ইতালিতে শ্রমিক শোষণের বিষয়টি সামনে আসে।

সর্বশেষ ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় এক শ্রমিক সরবরাহকারী তার নিজ দেশের নাগরিকদের মৌসুমি কাজের অনুমতিপত্রের মাধ্যমে ইতালিতে নিয়ে যায়, তাদের প্রত্যেককে ১৭ হাজার ইউরো করে দেওয়ার আর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেয় সে।

পুলিশ জানিয়েছে, ইতালিতে যাওয়া ওই অভিবাসীদের খামারে কাজ দেওয়া হয়। তাদের সপ্তাহে সাতদিন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করতে হতো এবং প্রতি ঘণ্টায় তাদের মাত্র চার ইউরো করে দেওয়া হতো। আবার তাদের ঋণের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই অর্থও প্রায় পুরোটা কেটে রাখা হতো।

অভিবাসীদের সঙ্গে করা এই আচরণকেই পুলিশ ‘দাসত্ব’ বলে বর্ণনা করেছে।

তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আরও ১৩০০ ইউরোর বিনিময়ে স্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিনা মজুরিতে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

“বাস্তবে ওই ওয়ার্ক পারমিট তাদের কখনোই দেওয়া হতো না,” এক বিবৃতিতে বলেছে পুলিশ।

শ্রমিকদের চরমভাবে ঠকানো ওই দুই কথিত অপব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে দাসত্ব ও শ্রম শোষণের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরদিকে ওই কৃষি শ্রমিকদের সুরক্ষা, কাজের সুযোগ ও ইতালিতে বৈধভাবে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ইতালিতেও শ্রমিক ঘাটতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায়ই অভিবাসন প্রত্যাশীদের এনে এই ঘাটতি পূরণ করা হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের নিম্ন মজুরির কাজগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

ইতালিতে ভিসা জালিয়াতি, বাংলাদেশিসহ গ্রেপ্তার ৪৪

ইতালিতে অভিবাসীদের কাজের ভিসা পদ্ধতি রয়েছে, কিন্তু এটিও জালিয়াতি মামলার মুখোমুখি হয়েছে।

দেশটিতে শ্রম আইন লঙ্ঘনের সমস্যাও রয়েছে। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, ইতালির প্রায় ১১ শতাংশ শ্রমিক অবৈধভাবে নিয়োগ পায় আর কৃষিখাতে এটি ২৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।