লাইফস্টাইল ডেস্ক : ফ্রান্সে বর্তমানে ৬০% শিশুই জন্ম নিচ্ছে অবিবাহিত দম্পতিদের ঘরে। ইউরোপের মধ্যে এটি সবচেয়ে উচ্চ হার। এই পরিসংখ্যানটি শুধু একটি সংখ্যা নয়—এটি ফ্রান্সের সমাজে গভীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রতিফলন।
Table of Contents
ইউরোপজুড়ে কী বলছে পরিসংখ্যান?
Eurostat-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইউরোপের অনেক দেশেই বিয়ে ছাড়াই সন্তান জন্মের হার বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ:
- বেলজিয়াম – ৫৮.৫%
- স্লোভেনিয়া – ৫৭.৭%
- পর্তুগাল – ৫৫.৯%
- ডেনমার্ক ও সুইডেন – ৫০% এর উপরে
- গ্রিস – মাত্র ১১.১%
এই সংখ্যাগুলোই বলে দেয়, ইউরোপের পারিবারিক কাঠামো বদলে যাচ্ছে দ্রুত।
ফ্রান্সে কেন বাড়ছে এই প্রবণতা?
১. আইনি সুরক্ষা ও সহবাস চুক্তি (PACS)
ফ্রান্সে “Pacte civil de solidarité” বা PACS নামের আইনি চুক্তি বিয়ে ছাড়াও একত্রে বসবাস ও সন্তান পালনের বৈধতা দেয়। ফলে অনেক দম্পতি বিয়ের জটিলতা এড়িয়ে PACS-এর মাধ্যমে একত্রে থাকছেন।
২. সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা
ফ্রান্সের সমাজে এখন সহবাস, একক পিতামাতা বা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক মোটেও নিষিদ্ধ বা কলঙ্কজনক নয়। সামাজিক স্টিগমা নেই বললেই চলে।
৩. সন্তান লালনের সুবিধা ও সরকারি সহায়তা
ফ্রান্সে সরকার অবিবাহিত মা-বাবাকেও সন্তান লালনে আর্থিক সহায়তা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়। ফলে বিয়ে করার আর্থিক বা সামাজিক চাপে মানুষ নেই।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, ফ্রান্সের এই পরিবর্তন পারিবারিক বন্ধনের অর্থ ও কাঠামোকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। বিয়ে এখন আর পরিবার গঠনের একমাত্র পথ নয়—মানসিক সংযোগ, অভিভাবকত্বের দায়িত্ব, এবং আইনি সুরক্ষা অনেকের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এই পরিবর্তনের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
✅ ইতিবাচক:
- দাম্পত্যের ওপর কম সামাজিক চাপ
- সন্তান লালনে সরকারী সহায়তা
- সম্পর্কের ভিত্তিতে বেশি স্বাধীনতা
❌ নেতিবাচক:
- পরিবারে স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন
- সন্তানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অনিশ্চয়তা
- সম্পর্ক ভেঙে গেলে আইনি জটিলতা
সমাজ বদলাচ্ছে, ধারণাও বদলাচ্ছে
ফ্রান্সে বিয়ে ছাড়াই সন্তান জন্মদানের উচ্চ হার এই বার্তাই দেয়—সমাজ আর আগের মতো নেই। পরিবার গঠনের নতুন সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছে, যেখানে ভালোবাসা, দায়িত্ব ও আইনি কাঠামো বিয়ের থেকেও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
আপনার কী মত?
এই সামাজিক পরিবর্তন কি ভালো নাকি উদ্বেগজনক? নিচে কমেন্ট করে জানান!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।