লাইফস্টাইল ডেস্ক : রবিবার মানেই খাদ্যরসিক বাঙালির মুখে হাসি। তীব্র গরমেও ব্যাগ হাতে সকাল সকাল পাঁঠার দোকানে লাইন। তারপর যুদ্ধজয়ী সৈনিকের মতো কদম কদম বাড়িয়ে বাড়ি ফেরা। এরপর কষিয়ে রান্নার পালা। আর রান্না শেষে দুপুর দুপুর গরম ভাতের সঙ্গে ধোঁয়া ওঠা পাঁঠার মাংসের সুস্বাদু ঝোল… উফ ভাবা যায় না! লিখতে লিখতেই যেন জিভে জল চলে আসে।
তবে বাঙালিদের অনেকেই কিন্তু নিরামিশাষী। তাঁরা নিরামিষ খাবার খেতেই পছন্দ করেন। তবে এনারাও কিন্তু রসনাতৃপ্তির খেলায় পিছিয়ে নেই। তাঁদের জন্য রয়েছে গাছ পাঁঠা বা এঁচোড়। গাছ পাঁঠা ঠিকমতো রান্না করলে খাসির মাংসকেও হার মানায়। তাই পাঁঠার মাংসের পাশাপাশি গাছ পাঁঠাও হতে পারে রবিবারের স্পেশাল মেনু।
প্রসঙ্গত, এখন অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতন। তাঁদের কাছে খাবারের স্বাদের থেকে তার গুণ প্রাধান্য পায়। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, গাছ পাঁঠা না খাসির মাংস শরীরের পক্ষে উপকারী? কোনটা খেলে রোগ-ব্যাধি দূরে থাকে? সেই জরুরি প্রশ্নের উত্তর রইল প্রতিবেদনে।
১. খাসির মাংস মন্দ নয়
অনেকেই পাঁঠার নাম শুনলেই ভয়ে ভয়ে থাকেন। এই বুঝি জড়িয়ে ধরল একাধিক অসুখ… যদিও বিষয়টি কিন্তু একবারেই তেমন নয়। বরং পাঁঠারও অনেক গুণ রয়েছে। এতে আছে প্রোটিনের ভাণ্ডার। এই প্রোটিন দেহের বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হয়। এছাড়াও আয়রন, জিঙ্ক সহ বিভিন্ন জরুরি খনিজের ঘাটতি মেটে পাঁঠার মাংস খেলে। তাই খাসির মাংসের ঝোলকে একদম ডায়েটের বাইরে বের করে দেওয়া বোকামো ছাড়া আর কিছুই নয়।
২. পুষ্টির ভাণ্ডার কাঁঠাল
এঁচোড় হল গাছ পাঁঠা। এই খাবার খেতে যেমন সুস্বাদু, ঠিক তেমনই গুণে ঠাসা। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। এঁচোড়ে ক্যালোরির মাত্রা থাকে অনেকটাই কম। তাই ওজন বাড়ায় ভয় নেই।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ফলে উপস্থিত থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। এমনকী শরীরের যে কোনও ধরনের প্রদাহ দূর করার কাজেও এক জুড়ি মেলা ভার। তাই গাছ পাঁঠা অবশ্যই রাখুন পাতে।
৩. কাঁঠাল না খাসির মাংস, কোনটি বেশি উপকারী?
পাঁঠার মাংসের একাধিক সমস্যা রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকলেও তা শরীর গ্রহণ করতে পারে না। এছাড়া এই এই ধরনের রেডমিটে রয়েছে ফ্যাটের প্রাচুর্য। সেই ফ্যাট শরীরে একাধিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, হার্টের অসুখের রোগীরা যতটা সম্ভব পাঁঠার মাংস থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া কাঁঠাল ইউরিক অ্যাসিডিও বাড়াতে পারে।
সেই দিক থেকে দেখতে গেলে এঁচোড় হল গুণের ভাণ্ডার। এই খাবার সকলেই খেতে পারেন। ডায়াবিটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরল থাকলেও অনায়াসে খাওয়া যায়। এতে কারও কোনও বাঁধা নেই। বরং গাছ পাঁঠা খাওয়ার মাধ্যমেই একাধিক অসুখ থাকে দূরে। তাই পাঁঠার মাংসের বদলে গাছ পাঁঠা আপনার প্রথম পছন্দ হতেই পারে।
৪. মাঝে মাঝে খাসির মাংসে ক্ষতি নেই
বাঙালি মাত্রই খাদ্যরসিক জাতি। সেই কারণে পাঁঠার মাংস একবারে ছেড়ে দেওয়া আমাদের রক্তে সইবে না। তাই সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরল কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলে মাঝেসাঝে ১ থেকে ২ পিস পাঁঠার মাংস খেতে অসুবিধা নেই। তবে এই মাংস খুব বেশি তেল, মশলা দিয়ে রান্না করবেন না। বরং হালকা করে রান্না করুন। এতেই কিছুটা হলেও সমস্যার আশঙ্কা কমবে। আর গাছ পাঁঠা কিন্তু যে কোনও সময় চলতে পারে। এই খাবার খাওয়ায় কোনও মানা নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।