জুমবাংলা ডেস্ক : চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের প্রথম পাতাল রেলের কাজ শুরু হবে। গত বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক।
তিনি বলেন, পাতাল রেলের জন্য বেশ কয়েকটি প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়া অনেক এগিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে মাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-১ বা এমআরটি লাইন-১ নামে পরিচিত হবে। যদিও চলতি বছরের জুলাইয়ে এই মেট্রো রেলের (এমআরটি) মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
মেট্রো রেল লাইন-১-এ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রেললাইন যাবে মাটির নিচ দিয়ে এবং নতুনবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত হবে উড়ালপথ।
এই ৩১.২৪ কিলোমিটার উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে নির্মিত হতে যাওয়া এমআরটি-১ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। ২০২৬ সালের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক আরও বলেন, আগামী অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মধ্যে এমআরটি-১-এর মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু করা হবে। পাতাল রেলের ডিপোর মূল নির্মাণকাজ শুরুর জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী এই নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন। প্রথম প্যাকেজে ডিপোর ভূমি উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। পুরো প্রকল্প ১২টি প্যাকেজে শেষ হবে।
এই পাতাল রেলের কাজ ডিএমটিসিএল করলেও সেতু বিভাগের অধীনে আরেকটি পাতাল রেল নেটওয়ার্ক তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
একই ধরনের কাজ দুই প্রতিষ্ঠান করছে। এতে সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে, নাকি ডিএমটিসিএলের যোগ্যতার অভাব রয়েছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের যোগ্যতার কোনো কমতি নেই। এমনকি আমাদের প্রতিষ্ঠানের লোকেরা বিদেশে গিয়েও মেট্রো রেল তৈরিতে কাজ করবে। সেতু বিভাগ চাইলে নিশ্চয়ই আলোচনা করে সমন্বয় করা হবে।’
এদিকে আগামী ডিসেম্বরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে দেশের প্রথম মেট্রো রেল। এই মেট্রো রেল লাইন-৬-এর নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি হয়েছে ৮০.১০ শতাংশ।
এমআরটি লাইন-৬-এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সেমিনারে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি এমআরটি লাইনের কাজ শেষ হবে। এই ছয়টি লাইনের কাজ শেষ হলে মেট্রো রেলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। এই রুটে চলাচল করবে মোট ২৫টি ট্রেন, যার প্রতিটি একবারে তিন হাজারের বেশি যাত্রী বহন করবে।
পাতালপথে যেসব স্টেশন থাকবে তার মধ্যে রয়েছে কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, পূর্ব হাতিরঝিল, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, বিমানবন্দর। প্ল্যাটফর্মে ওঠানামার জন্য উভয় পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর।
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘ঢাকাবাসীর জন্য এমআরটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার। এই এমআরটি চালু হলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে, তবে পুরোপুরি কমবে না। ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট করেই আমদের এই যানজট নিরসন করতে হবে। পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়েই অংশীজনদের সমন্বয় হলে আরও বেশি সুফল পাওয়া যাবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে আর মাত্র ১০ দিন পরেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হবে, মাত্র ১৮০ দিন পরেই চালু হবে মেট্রো রেল এবং ছয় হাজার ৯৩৫ দিন পরে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। মেট্রো রেল চালু হলে ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, মেট্রো রেলকেন্দ্রিক যে জীবনব্যবস্থা গড়ে উঠবে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।