জুমবাংলা ডেস্ক : জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দুই লাখ ৭২ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। শীত মৌসুমে খেজুরের গাছ প্রস্তুতে কর্মসংস্থান হয় ৩০ হাজার কৃষকের। চলতি মৌসুমে তিন হাজার টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।’
শীতকালীন পিঠা তৈরির অন্যতম উপাদান হলো খেজুরের গুড়। চুয়াডাঙ্গার খেজুরের গুড়ের খ্যাতি রয়েছে সারা দেশে। প্রতি বছরের মতো এবারও বেচা-বিক্রিতে জমে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এ হাট।
স্থানীয় ও ব্যবসায়ীরা জানান, গুড় বেচাকেনার জন্য এ হাটের ঐতিহ্য ৩০০ বছরের। তাদের মতে, এটিই দেশের সর্ববৃহৎ খেজুরের গুড়ের হাট।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সপ্তাহে শুক্রবার ও সোমবার বসে এ হাট। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গুড় কিনতে আসেন ব্যাপারীরা।
সোমবার সকালে হাট ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সারি সারি সাজানো রয়েছে নানা আকারের গুড়ের ভাঁড়। চলছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক।
সরোজগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ গুড়ের হাটে বেচাকেনা হয়। প্রতি হাটে গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ টন গুড় বিক্রি হয়। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও এই হাটের গুড়ের সুখ্যাতি রয়েছে। অনেকে বিদেশে আত্মীয়ের কাছে এখানকার গুড় পাঠায়।’
বিক্রেতারা জানান, মাটির হাঁড়ি বা ভাঁড়ের আকার ও ওজন ভেদে ওঠানামা করে গুড়ের দাম। এ হাটে প্রতি কেজি খেজুর গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। আর মানভেদে এক ভাঁড় গুড় বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায়। পুরো শীত মৌসুমজুড়ে এই হাটে চলে গুড় বেচা-বিক্রি।
সরোজগঞ্জের হাটে গুড় বিক্রি করতে যাওয়া কৃষক জামিল উদ্দিন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন থেকে এ হাটে গুড় বিক্রি করতে আসছি। বাড়িতে খুব যত্নের সঙ্গে গুড় তৈরি করি। গুড়ে আমরা চিনি মেশাই না, তাই আমাদের গুড়ের সুনাম আছে, তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর গুড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। এ বছর ১২ থেকে ১৪ কেজি ওজনের এক ভাঁড় গুড় বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায়।
ঢাকা থেকে গুড় কিনতে যাওয়া ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরোজগঞ্জ হাটে খাটি গুড় পাওয়া যায়। দাম বেশি হলেও এখানকার গুড়ের গুণগত মান ভালো। তাই চাহিদাও বেশি। এখান থেকে গুড় নিয়ে আমরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাই।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দুই লাখ ৭২ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। শীত মৌসুমে খেজুরের গাছ প্রস্তুতে কর্মসংস্থান হয় ৩০ হাজার কৃষকের। চলতি মৌসুমে তিন হাজার টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশুদ্ধ গুড় উৎপাদন করে বাজারজাত করতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে ৪০ কোটি টাকার গুড় বেচা-বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।