জুমবাংলা ডেস্ক : রং ও চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়, যা ছড়িয়ে পড়ছে মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আর এই ভেজাল গুড় কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে ভেজাল বন্ধ এবং জেলার সুনাম ধরে রাখতে গাছি ও ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণ এবং প্রণোদনা দেয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসনের।
সরেজমিন দেখা যায়, মাদারীপুরের জাফরাবাদ এলাকার গুড় বিক্রেতা লোকমান শিকদার। অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে নিজ ঘরেই তৈরি করছেন ভেজাল খেজুর গুড়। একই অবস্থা সদরের তাল্লুক, ঘটমাঝি, ঝিকরহাটি, মোস্তফাপুরসহ জেলার অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি এলাকার।
সামান্য খেজুর রসের সঙ্গে পানি, চিনি আর রঙের মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে গুড়, যা দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটি আসল আর কোনটি নকল। এসব ভেজাল গুড় ছড়িয়ে পড়ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই গুড় কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। এক কেজি খাঁটি গুড়ের দাম যেখানে ৬০০-৮০০ টাকা, সেখানে এসব ভেজাল গুড় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। তবে বিক্রেতাদের দাবি, খাঁটি রস দিয়ে গুড় তৈরি করলেও পাওয়া যায় না ন্যায্যদাম। তাই বাড়তি লাভের আশায় গুড়ে ভেজাল দিচ্ছেন অনেকে।
মোস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ডে গুড় কিনতে আসা ক্রেতা শ্যামল সরকার বলেন, ‘খেজুর গুড়ের সুনাম দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আর খাঁটি গুড় পাওয়া যায় না। চিনি আর রঙের মিশ্রণে তৈরি গুড় কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছি আমরা। এর প্রতিকার হওয়া দরকার।’
মোস্তফাপুরের গুড় প্রস্তুতকারক ও গাছি কুদ্দুস শিকদার বলেন, ‘খাঁটি গুড় তৈরি করলে ক্রেতারা বেশি দাম দিতে চান না। ফলে খাঁটি গুড় অবিক্রীত থাকে, এতে লস হয়। তাই একটু বাড়তি লাভের আশায় খেজুর গুড়ে চিনি মিশিয়ে ভেজাল দিতে হচ্ছে।’
ভেজাল গুড় থেকে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ড. মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, ‘ইটভাটায় খেঁজুর গাছ ব্যবহার করায় কমেছে গাছের সংখ্যা। এতে দেখা দিয়েছে রসের সংকট। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা গুড়ে ভেজাল দিচ্ছে। এর থেকে হতে পারে ক্যানসারসহ ভয়ানক রোগ। তাই এ ভেজাল গুড় তৈরি ও বিক্রি বন্ধ করা অতি জরুরি।’
এদিকে গুড়ে ভেজাল মেশাতে বিক্রেতা ও চাষিদের নিরুৎসাহিত করতে নানান উদ্যোগের কথা জানায় জেলা প্রশাসন।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘এমন অসাধু গুড় বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া কয়েক লাখ খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে গুড় তৈরির জন্য পর্যাপ্ত রস পাওয়া যায়। শিগগিরই এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি গুড় প্রস্তুতকারকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।