আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে দুদিন আগেই জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতু। প্যাটাপসকো নদীর বুকে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখনও নিখোঁজ আছেন চারজন। সেতু ভেঙে ঘটনাস্থলে প্রচুর কংক্রিট এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকার কারণে বর্তমানে আর নিরাপদে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। খবর রয়টার্সের।
স্থানীয় সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেরিল্যান্ড স্টেট পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো মেক্সিকোর আলেহান্দ্রো হার্নান্দেজ ফুয়েন্তে ও এবং গুয়েতেমালার ডর্লিয়ান রনিয়েল ক্যাস্টিলো ক্যাব্রেরা নামে দুই ব্যক্তির। মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় ডুবে থাকা একটি ট্রাকের ভেতর থেকে।
এদিকে সেতু ধসের এ ঘটনায় বাকি চার নিখোঁজ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। এরই মধ্যে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটিকে ধাক্কা দেয় শ্রীলংকাগামী সিঙ্গাপুরের একটি কার্গো জাহাজ। এতে সেতুটির বড় একটি অংশ ধসে পড়লে তাতে থাকা কয়েকটি যানবাহনও নদীতে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটির নাম দালি। স্থানীয় সময় রাত ১টায় যুক্তরাষ্ট্রের পাটাপসকো নদী থেকে শ্রীলংকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে সেটি। জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় নাবিকরা। ১টা ২৪ মিনিটে জাহাজটির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেয়। এর পরপরই সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে জাহাজটি।
এর ঠিক তিন মিনিট পর ১টা ২৭ মিনিটে সেতুর একটি পিলারে আঘাত করে ১৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে চলা জাহাজটি। আর সঙ্গে সঙ্গেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
এদিকে সেতুটিতে কোনো কাঠামোগত সমস্যা ছিল না বলে জানিয়েছেন মেরিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুর। এরপরও কীভাবে জাহাজের ধাক্কায় এমন বড় একটা সেতু হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রকৌশলীরা জানান, সেতুটি ধাতু দ্বারা নির্মিত ট্রাস পিলারগুলোকে সংযুক্ত করেছে। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পিলারে আঘাত হানে জাহাজটি। মূলত সেতুটির নির্মাণশৈলীর কারণেই সেতুটি এমনভাবে ভেঙে পড়ে।
দুর্ঘটনা কবলিত ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সেতুটির নামকরণের পেছনে আছে একটি ইতিহাস।
১৮১৪ সালের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যায় যুক্তরাজ্য। সে সময় এই যুদ্ধের সাক্ষী হয়েছিলেন আমেরিকার জাতীয় সংগীত ‘স্টার স্প্যাংগল্ড ব্যানার’ এর রচয়িতা ফ্রান্সিস স্কট কি। এরপর তার নামে ১৯৭৭ সালে প্যাটাপসকো নদীর ওপর নির্মিত হয় সেতুটি।
আমেরিকার বাল্টিমোর হারবার অতিক্রম করার তিনটি রাস্তার মধ্যে ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুটি অন্যতম। বাল্টিমোর বন্দরের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রতিদিন গড়ে ৩১০০০ যানবাহন চলাচল করত সেতুটি দিয়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।