সুয়েব রানা, সিলেট : জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রধান চলাচলের রাস্তা এখনো পাকাকরণ হয়নি, যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ। স্থানীয়দের দাবি, গত ৩০ বছরে অসংখ্যবার দাবির পরও দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই কাঁচা রাস্তার উন্নয়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
গত ২০ জুন (শুক্রবার) বিকেল আড়াইটায় এলাকার সাধারণ মানুষের উদ্যোগে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, বর্ষাকালে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে, হাঁটু পর্যন্ত কাদা জমে যায়। ফলে মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারীদের প্রতিদিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সামাজিক কর্মী জিতু মিয়া ও সানু মিয়াসহ অনেকেই বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনীর প্যারা জাম্পিং প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া সদস্যরা যাতায়াত করেন। অথচ একটু বৃষ্টি হলেই এখানে গাড়ি তো দূরের কথা, মানুষ হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। মৃত্যুবরণ করলে দাফন বা সৎকারেও প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হয়।”
এটি শুধুমাত্র একটি চলাচলের রাস্তা নয়, বরং এলাকার কৃষি, শিক্ষা ও নিরাপত্তার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় হাওর এলাকার মাঠের ফসল ও কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে এই রাস্তাটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া দুটি হাউজিং, একটি মসজিদ, মাদ্রাসা এবং এলাকার একমাত্র আইসক্রিম ফ্যাক্টরির জন্যও এই রাস্তাটি ব্যবহার করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম জানান, অতীতে প্রায় সাড়ে তিনশ’ ফুট রাস্তা ইটসলিং ও পাকাকরণ করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি ডিও লেটার পাঠান এবং টেন্ডার প্রক্রিয়াও শুরু হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পট পরিবর্তনের কারণে ওই টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়।
পরবর্তীতে, ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নতুন করে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর নিকট আবারও আবেদন করা হয় “ঘাটের চটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরি রাস্তা (আইডি: ৬৯১৫৩৪০৯৫)” পাকাকরণ প্রসঙ্গে। মেম্বার শরিফুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়, তাহলে রাস্তাটির পাকাকরণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরও রাস্তাটি এখনো কাঁচা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একটি মাত্র রাস্তা যা একটি অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তা অবহেলার কারণে আজও উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। এলাকার মানুষ এখন আশায় বুক বেঁধে আছেন, যেন শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে তাদের দুর্ভোগের অবসান ঘটান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।