বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার প্রয়াণ ঘটে।

আপসহীন এই নেত্রীর বিদায়ে সারাদেশে যেমন শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিকমাধ্যমে আবেগঘন বার্তা দিয়ে এই নেত্রীকে স্মরণ করছেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া মোটা দাগে পড়েছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে। শিল্পীদের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ভারি হয়েছে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসনকে হারানোর বেদনায়।
সংগীতশিল্পী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেত্রীর শূন্যতা বাংলাদেশের মানুষ সব সময় অনুভব করবে।
বেগম জিয়াকে নিয়ে শোক প্রকাশ করে বেবী নাজনীন জানান, উনার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল উনি জেলের যাওয়ার আগে। আমি সেই মুহূর্তে বেগম জিয়ার সঙ্গে ছিলাম। আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন, আমি যাচ্ছি তুমি ভালো থেকো।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও জানান, তিনি বলেছিলেন তোমরা দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও। তার মধ্যে দেখেছিলাম ধীর-স্থিরতা কিন্তু বলিষ্ঠ। উনি হাঁটতে হাঁটতে জেলে চলে গেলেন। এই দৃশ্য আমি কখনও ভুলবো না।
এছাড়া খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকাহত বেবী নাজনীন লিখিত বার্তায় জানিয়েছেন, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে যে কষ্ট দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে, এর বিচার মহান আল্লাহ অবশ্যই করবেন। তিনি দেশ এবং মানুষের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করছেন, রাজনীতির ইতিহাসে সেটা নজিরবিহীন। তার মৃত্যুর খবরে আজ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে মানুষ, বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে সারা দেশ। মহান আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করবেন ইনশাআল্লাহ।
বেবী নাজনীন লিখেছেন, মহান আল্লাহ জিয়া পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দান করুন, এই মুহূর্তে আমি এই দোয়াই করি।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষে ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। সে সময় স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতিও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনের শারীরিক জটিলতা এবং মানসিক ধকলের কারণে তিনি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।
গত ২৩ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে এক মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোরে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন এবং চিরবিদায় নেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নেতৃত্ব দেওয়া খালেদা জিয়া ‘দেশনেত্রী’ হিসেবে জনগণের কাছে সমাদৃত ছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তার অটল ভূমিকার কারণে তাকে ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
এদিকে, খালেদা জিয়ার মরদেহ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি গাড়িতে করে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) গুলশান থেকে জানাজার জন্য জাতীয় সংসদ ভবনে নেওয়া হয়েছে। গাড়িবহরে লাল সবুজ রঙের বাসটিও রয়েছে। তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান, ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা বাসে রয়েছেন।
এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার স্বজনেরাও গাড়িবহরে রয়েছেন।
লোক প্রশাসন অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনে পক্ষপাতের অভিযোগ, গঠনতন্ত্র জানেন না কমিশনার
সেখানে জানাজা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বেগম খালেদা জিয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


