বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ভারতের ডেটা সেন্টারের ক্ষমতা তিন গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। এ জন্য গুজরাটের জামনগরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডেটা সেন্টার তৈরি করতে চান তিনি। এই সেন্টারের ক্ষমতা হবে তিন গিগাওয়াট। ভারতের প্রযুক্তি খাতে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হতে চলছে, যা সহজেই বর্তমান বৈশ্বিক মানদণ্ডগুলোকে বড় ব্যবধানে অতিক্রম করবে।
বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম কার্যক্রমরত ডেটা সেন্টারগুলো যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। আর এগুলোর ক্ষমতা মূলত এক গিগাওয়াটের নিচে।
এই বৃহৎ প্রকল্পের জন্য এনভিডিয়া করপোরেশন থেকে উন্নত এআই সেমিকন্ডাক্টর সংগ্রহ করছে রিলায়েন্স। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন চিপগুলে এআইভিত্তিক টুলস, যেমন চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্মের জন্য অত্যাবশ্যক।
এআই সেবার চাহিদা মেটাতে ডেটা সেন্টারগুলোতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, গুগলসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি জায়ান্ট। গত সপ্তাহে, ওপেনএআই, সফটব্যাংক এবং ওরাকলসহ একটি কনসোর্টিয়াম ‘স্টারগেট’ প্রকল্পের অধীনে এআই অবকাঠামোতে ৫০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
আম্বানির ডেটা সেন্টারটি শুধু বর্তমানে থাকা ডেটা সেন্টারের ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাবে না, বরং ভারতের জন্য এআই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা সৃষ্টি করবে। এখন ভারতের সবগুলো ডেটা সেন্টারের ক্ষমতা এক গিগাওয়াটের নিচে। তবে এই প্রকল্পের ক্ষমতা তিন গুণ বাড়ানো গেলে তা ভারতের জন্য বড় সাফল্য হবে এবং এর মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির উন্নতি দ্রুত হবে।
এই প্রকল্পের খরচও অনেক বেশি হবে। শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একটি বৃহৎ ডেটা সেন্টার তৈরি করতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার নগদ রিজার্ভ থাকলেও এই প্রকল্পের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তবে কোম্পানি এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
আম্বানির কৌশলটি তার টেলিকম খাতে ব্যবহৃত কৌশলের সঙ্গে মিল রয়েছে, যেখানে রিলায়েন্স জিও সস্তা সেবা প্রদান করে বাজারে বিপ্লব ঘটিয়েছিল। এবার কোম্পানিটির লক্ষ্য হলো—এআই ইনফেরেন্সিংয়ের (এআই মডেল চালানোর পেছনের গণনামূলক প্রক্রিয়া) খরচ কমানো, যা স্টার্টআপ এবং প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর জন্যই অত্যন্ত ব্যয়বহুল হতে পারে।
জামনগরে ইতিমধ্যে রিলায়েন্সের তেল পরিশোধন ও পেট্রোকেমিক্যাল কার্যক্রম চলছে। নতুন ডেটা সেন্টারটি মূলত সবুজ শক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এর পাশেই সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ও গ্রিন হাইড্রোজেন প্রকল্প তৈরি করবে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন বিশাল একটি সুবিধার জন্য নিরবচ্ছিন্ন শক্তি সরবরাহ নিশ্চিত করতে জীবাশ্ম জ্বালানি অথবা বৃহৎ ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেমের প্রয়োজন হতে পারে।
আম্বানি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, তার লক্ষ্য হল ভারতের সব মানুষের জন্য এআই সহজলভ্য করা। তিনি গত বছর বলেছিলেন, ‘আমরা বিশ্বের সর্বনিম্ন এআই খরচ দিতে চাই, যাতে সবাই সহজেই এআই ব্যবহার করতে পারে।’
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।