জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের একেবারে প্রাচীন সময়ের গ্যালাক্সিগুলোর জন্মযাত্রা সম্পর্কে নতুন তথ্য দিয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, বিগ ব্যাংয়ের (মহাবিস্ফোরণ) প্রায় দেড়শ কোটি বছরের মধ্যেই যে গ্যালাক্সিগুলো তৈরি হয়েছিল, সেগুলো ছিল অত্যন্ত অস্থির ও বিশৃঙ্খল।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা প্রায় ২৫০টি নবীন গ্যালাক্সি বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, প্রায় সবগুলোতেই গ্যাসের তীব্র ঘূর্ণন, বিশৃঙ্খল প্রবাহ এবং একের পর এক নক্ষত্র জন্ম (স্টারবার্স্ট নামে পরিচিত) ঘটছিল। এসব কারণেই তারা স্থিতিশীল ঘূর্ণনধারী গ্যালাক্সিতে পরিণত হতে পারেনি।
প্রধান গবেষক ড. লোলা ডানহাইভ বলেন, টেলিস্কোপের ইনফ্রারেড ক্যামেরায় দেখা গেছে, প্রায় সব প্রাচীন গ্যালাক্সিতেই আয়নিত হাইড্রোজেন গ্যাস চারদিকে ছড়িয়ে চলেছে—কোনো নির্দিষ্ট দিক বা ঘূর্ণন নেই। খুব অল্প কয়েকটি গ্যালাক্সিতেই সামান্য স্থিতির লক্ষণ পাওয়া গেছে।
আগের কিছু পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা কয়েকটি সুশৃঙ্খল গ্যালাক্সি শনাক্ত করেছিলেন। কিন্তু এবার শত শত ছোট গ্যালাক্সি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অধিকাংশই ঘন ঘন গ্যালাক্সি মিশ্রণ ও তারকা জন্মপ্রবাহের কারণে অস্থির ছিল।
গবেষণায় দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নক্ষত্র জন্মের গতি কমে আসে এবং গ্যাসের মজুদও শেষ হতে থাকে। তখন গ্যালাক্সিগুলো ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে স্থিতিশীল রূপ নেয়। এই পরিবর্তনের সময়কালকে বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা থেকে স্থিরতায় রূপান্ত ‘।
ড. ডানহাইভের ভাষায়, শুরুতে নক্ষত্র বিস্ফোরণ গ্যালাক্সির গ্যাসের স্বাভাবিক গতি নষ্ট করে দিত। কিন্তু পরে গ্যালাক্সি নিজেদের ভর বাড়িয়ে ধীরে ধীরে স্থিরতা অর্জন করে।
অর্থাৎ, মহাবিশ্বের প্রথম দিকের অগোছালো গ্যালাক্সিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়ে আজকের পরিচিত সুন্দর সর্পিল গ্যালাক্সিতে রূপ নেয়। যেমন- আমাদের নিজস্ব মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



