জুমবাংলা ডেস্ক : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জনতা ব্যাংক শাখার ফয়েজ আহাম্মদ নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা ৫ দিনের ছুটি নিয়ে কানাডা চলে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সেই সঙ্গে ব্যাংকের ৫ লাখ ও গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ায় তোলপাড় চলছে। তবে গ্রাহকরা এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ না দিলেও প্রতিদিনই ব্যাংক ম্যানেজার ও ফয়েজের বাড়িতে ধরনা দিচ্ছেন।
এদিকে, ৫ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ না করা ও পাঁচ দিনের ছুটি শেষ হওয়ার পরও ব্যাংকে উপস্থিত না হওয়ায় ফয়েজের মালিকানাধীন বাড়ির সামনে মার্কেটে নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার। তবে দুই মাসেও তাকে বরখাস্ত করেননি তারা। ফয়েজ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামে মৃত জয়নাল জমাদারের একমাত্র ছেলে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন গ্রাহক জানান, ফয়েজ আহাম্মদ গত ৬ বছর ধরে জনতা ব্যাংক রায়পুর শাখার সেকেন্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত।
ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের লোন দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয় ফয়েজকে (৬০টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান)। গ্রাহকদের অগোচরে তাদের একাউন্ট থেকে ২ থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ করে ব্যাংকের সিল-স্বাক্ষর মেরে গ্রাহকদের চেক বই দিতেন। এছাড়াও একইভাবে নিজ এলাকার মানুষ, আত্মীয়-স্বজন, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীর লাখ লাখ টাকা ব্যাংকে তাদের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।
ভুক্তভোগী রায়পুর ইউপির দেবিপুর গ্রামের সায়েস্তানগর দাখিল মাদরাসা শিক্ষক রেজোয়ান বলেন, ‘ব্যাংক থেকে একজন অফিসার ফোন দিয়ে বলেন ১০ লাখ টাকার কিস্তি পরিশোধ করছেন না কেন? এতে আমি হতভাগ হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করি কীসের ১০ লাখ টাকা, কীসের কিস্তি? তখন অফিসার ফোন কেটে দেন। তখনই বুঝলাম আমার একাউন্ট দিয়ে ওই টাকা উত্তোলন করেছেন ফয়েজ।
শুধু রেজোয়ানই নন, শায়েস্তানগর গ্রামের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন, মো. নাসির, ব্যবসায়ী ইব্রাহিম, আলাউদ্দিনসহ শতাধিক গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাত করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কানাডা পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।
অনেকে বলছেন, ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়েজ সব সময় অনলাইনে জমজমাট ডলার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
পলাতক ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়েজের নানা নজরুল জমাদার বলেন, ‘ফয়েজের স্ত্রী অন্তু ও এক শিশু ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গেছে। পরে ভারত না কানাডা গেছে তা আমি জানি না। আমাদের কাছেও বলে যায়নি। ঈদের আগে কথা হয়, আর যোগাযোগ নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার ১৫-২০ জনসহ অনেক মানুষ আমার কাছে এসে অভিযোগ করেছেন। তবে ফয়েজ ব্যাংক থেকে ৮০ লাখ টাকা লোন নিয়ে বাড়ির সামনে মার্কেট করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাংক থেকে লোক এসে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।’
জনতা ব্যাংক রায়পুর শাখার ব্যবস্থাপক তারেক মোহাম্মদ মুছা জানান, ‘লোন অফিসার ফয়েজ আহাম্মদ তার স্ত্রীকে ভারতে চিকিৎসা করাবেন বলে গত (২৬ মে) ৫ দিনের ছুটি নেন। গত এক মাস সে ব্যাংকে আসছেন না। তার কাছে ব্যক্তিগত ৫ লাখ টাকা লোন পাবে ব্যাংক। এ জন্য তাকে নোটিশ পাঠানো হয় এবং তার বাড়ির সামনে মালিকানাধীন পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট মার্কেটের সামনে নোটিশবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা শারমিন ভাটের সময়ে এ কাজ করেন ফয়েজ। আমি দুই মাস হলো যোগদান করেছি।’
তবে ব্যাংকের গ্রাহকদের কোনো টাকা নেননি বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়াও ফয়েজ ব্যাংকের কোনো গ্রাহকের টাকা নেননি বলে দাবি করেছেন ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার শারমিন ভাট।
রায়পুর থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার জানান, জনতা ব্যাংকে লোন অফিসার ফয়েজ আহাম্মদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র : সময় সংবাদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।