জুমবাংলা ডেস্ক : বিগত হাসিনা সরকারের সময় বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত থাকা স্বত্বেও ঋণখেলাপী বেক্সিমকো গ্রুপকে আবারও ৫৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মত্তিতে জনতা ব্যাংক ঋণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে।
কারখানা চালু রাখা এবং শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে জনতা ব্যাংকের কাছে ৬৯ কোটি ৫ লাখ টাকার ঋণ সহায়তা চেয়ে আবেদন করে বেক্সিমকো গ্রুপটি। একই সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকেও ঋণ সহায়তার বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, শ্রমিকদের আগস্টের বেতন-ভাতা পরিশোধে ৬৯.০৫ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ১ সেপ্টেম্বর বিআরপিডির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঋণের জন্য জনতা ব্যাংকে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক তহবিল বিতরণ করেনি। যার ফলে শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতে জনতা ব্যাংকে দ্রুত তহবিল ছাড়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনুসর, জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল জব্বার ও বেক্সিমকো গ্রুপের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দেশের সার্বিক দিক বিবেচনা করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ ছাড় করতে জনতা ব্যাংকে নির্দেশ দেন গভর্নর। তার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে জনতা ব্যাংকের এমডিকে বেক্সিমকো লিমিটেডের ঋণ আবেদনের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর প্রেক্ষিতেই জনতা ব্যাংক গ্রুপটির অনুকূলে ইতোমধ্যে ৫৫ কোটি টাকার ঋণ ছাড় করেছে।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আবদুল জব্বার বলেন, ‘নিয়ম করা হয় প্রতিষ্ঠানের জন্যই। বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নিয়ম মানতে গেলে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। কারণ বেক্সিমকোয় ৩০-৪০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে না পারলে গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়বে। তাই দেশের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, গার্মেন্টস শিল্প খাতে বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য জনতা ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত একটি আবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক অনাপত্তি দিয়েছে। যদিও ব্যাংক কোম্পানি আইনের ব্যত্যয় ঘটে এমন বিষয়ে অনাপত্তি না দেয়ার বিষয়ে মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা।
জনতা ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে জনতা ব্যাংক থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের নেয়া মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের প্রায় ৯৫০ শতাংশ। নিয়ম অনুযায়ী, একজন বা একক ঋণগ্রহীতাকে ব্যাংকগুলো তাদের পরিশোধিত মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিতে পারবে না। সেখানে জুন শেষে জনতার পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। অথচ নথিতে দেখা যায়, জনতা থেকে নেয়া বেক্সিমকোর ঋণের ৭২ শতাংশই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।