আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর মিয়ানমারের একটি বিদ্রোহী জোট চীনের মধ্যস্থতায় ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কিছু পক্ষের মতে, মাসব্যাপী সমন্বিত আক্রমণে হুমকির মুখে পড়েছিল জান্তার ক্ষমতা দখল।
২০২১ সালে মিয়ানমারের সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসে সামরিক সরকার। গত বছরের অক্টোবরের শেষ থেকে সেনা সরকারের সঙ্গে নিজেদের অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীরা। বিশেষ করে উত্তর মিয়ানমারের চীন সীমান্তে তীব্র সহিংসতার খবর পাওয়া গিয়েছে।
সমান্তরাল গণতন্ত্রপন্থী বেসামরিক নেতৃত্বাধীন সরকার সমর্থিত যৌথ আক্রমণের কারণে অভ্যুত্থানের পর থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জান্তা সরকার। পাশাপাশি সীমান্ত বাণিজ্যে বাধা এবং শরণার্থী আগমনের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে চীনের।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী টিএনএলএর একজন নেতা শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন, ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ ও সামরিক বাহিনী ‘আরও অগ্রসর না হয়ে যুদ্ধবিরতি’তে যেতে সম্মত হয়েছে। বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে তিনি নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘(জোট) পক্ষ থেকে চুক্তিটি হলো শত্রু শিবির বা শহরে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ থেকে বিরত থাকা। সামরিক দিক থেকে চুক্তিটি হলো বিমান হামলা, বোমাবর্ষণ বা ভারী অস্ত্রের মাধ্যমে আক্রমণে জড়িত না হওয়া।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, ১০-১১ জানুয়ারি চীনের কুনমিং শহরে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে দুই পক্ষ অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে ও যুদ্ধ বিরতিতে যেতে সম্মত হয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, উভয় পক্ষই চীনা সীমান্তে বাসিন্দাদের ক্ষতি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘চীন আশা করে, মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ আন্তরিকভাবে ইতিমধ্যে সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করবে।’
বেইজিং গত মাসেও বলেছিল, পক্ষগুলো একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও আলোচনা চালু রাখতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু বিদ্রোহীরা গত সপ্তাহে চীনা সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর লাউকাইয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্য ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে লড়াই অব্যাহত রেখেছে।
সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে দেশটির ৩ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের মতে অভ্যুত্থানের পর থেকে সামগ্রিকভাবে ২০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংঘর্ষের কারণে মিয়ানমারের পুলিশ ও সামরিক কর্মীদের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ বা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিয়ানমারের জান্তার একজন মুখপাত্র মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি। বিদ্রোহী জোটের অন্য দুটি গ্রুপ, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং আরাকান আর্মিও (এএ) আলোচনার বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।