আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মা-বাবার বিচ্ছেদের পর সন্তানের হেফাজত সংক্রান্ত আইনে সংশোধন এনেছে জাপান। শুক্রবার (১৭ মে) দেশটির জাতীয় আইনসভা ডায়েটে যুগান্তকারী এই সংশোধন পাস হয়। সংশোধিত আইনটি জারি হওয়ার দুই বছরের মধ্যে কার্যকর হবে। তবে যারা এরই মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে আগের আইনটিই কার্যকর হবে।
৭৭ বছরে মা-বাবার কর্তৃত্ব সম্পর্কিত আইনে এবারই প্রথম পরিবর্তন আনলো জাপান। এতদিন দেশটিতে বিচ্ছেদের পর সন্তানেরা সাধারণত মায়ের হেফাজতেই বেড়ে উঠতো।
সংশোধিত আইন অনুযায়ী, অভিভাবকরা প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সন্তানের একক বা যৌথ হেফাজতের কোনো একটা বেছে নেবেন। যদি কোনো বিরোধ দেখা দেয়, তাহলে একটি পারিবারিক আদালত সন্তানের হেফাজতে হস্তক্ষেপ করবেন ও আদালতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আর যদি মা-বাবার কারও বিরুদ্ধে পারিবারিক সহিংসতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকে, তাহলে সন্তান নিরপরাধ অভিভাবকের হেফাজতে থাকবে।
আবার নতুন আইন অনুযায়ী, শিক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অভিভাবকদের অবশ্যই ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে, কিন্তু জরুরি পরিস্থিতিতে যদি তারা সময়মতো একমত হতে না পারেন, তাহলে অভিভাবকদের মধ্যে একজন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আর দৈনন্দিন বিষয় যেমন- সন্তান কী খাবে বা তাকে টিকা দিতে হবে কি না, তা নিয়ে মা-বাবার মধ্যে ঐকমত্যের প্রয়োজন হবে না।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে যাওয়া ও সন্তান লালন-পালনে উভয় পরিবারের আগ্রহের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাছাড়া জাপানে এতদিন যে আইন প্রচলিত ছিল, তা বিদেশি নাগরিকদের জন্যও চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। বিশেষ করে, যেসব বিদেশি নাগরিক জাপানে বিয়ে করে সন্তানের মা-বাবা হয়েছিলেন তারা সন্তান লালন-পালনের ক্ষেত্রে চরমভাবে বাধার মুখোমুখি হয়ে আসছিলেন।
জাপানি সংবাদমাধ্যম কিয়োডো নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শুধু ২০২২ সালেই দেশটির ১ লাখ ৬০ হাজার শিশু তাদের মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ দেখেছে। এই সংখ্যাটি ১৯৫০ সালের চেয়ে দ্বিগুণ। তাছাড়া গত কয়েক বছরে দেশটিতে জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতেও নতুন এই আইন সহায়তা করবে বলে বিশ্বাস জাপানি আইনপ্রণেতাদের।
সূত্র: কিয়োডো নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।