এ এক অভিনব বিবাহ বাসর। পাত্রী গোলগাল, ফর্সা। পরনে বিয়ের গাউন, মাথায় রত্নখচিত মুকুট। কিন্তু পাত্রের এ কী দশা! ছবিতে শুধু পেনসিলে আঁকা অবয়বখানিই যে দেখা যাচ্ছে। যদিও তার পরনেও বিয়ের পোশাক। কিন্তু আসল মানুষটা কই? বিয়েতে আমন্ত্রিতরা যখন পাত্রকে নিয়ে এমন কৌতূহলী হয়ে ধৈর্য প্রায় হারিয়ে ফেলছেন, তখনই আসল চমক! পাত্রী বলে উঠলেন, ”ও-ই আমার মন বোঝে, তাই ওকেই বিয়ে করছি।” তা অন্তরের সেই সঙ্গী কি ওই পেনসিলে আঁকা অবয়ব? হ্যাঁ, তিনিই।

আসলে ঠিক ছবি নন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় তৈরি ছবিরূপী এক পুরুষ। ‘আপন মনের মাধুরী মিশায়ে’ যাকে তৈরি করেছেন বিয়ের পাত্রী, ChatGPT-র সাহায্য নিয়ে। নিজের হাতে তৈরি সেই AI সঙ্গীকেই নিজের জীবনের সঙ্গে এভাবে জুড়ে দিলেন মেয়েটি।
এই চমকপ্রদ ঘটনা জাপানের ওকায়ামা সিটির। এখানকার বাসিন্দা বছর বত্রিশের কানো। AI দিয়ে যে পুরুষকে তিনি গড়ে তুলেছেন, তার নাম ক্লস। আর তাকে বিয়ে করলেন মহা ধুমধামে। রীতিমতো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল এই আয়োজনের দায়িত্ব। ওকায়ামার এক জায়গায় জাপানের ঐতিহ্য মেনে বিয়ের মণ্ডপ তৈরি হয়। প্রচুর মানুষকে কানো আমন্ত্রণ জানান নিজের বিয়েতে। সন্ধ্যা নাগাদ সকলের উপস্থিতিতে ক্লসের সঙ্গে তাঁর আংটি বিনিময়ও হয়।
সবটাই বাস্তবের মতো, তবু বাস্তব নয়। একটা বড় স্ক্রিনে ক্লসকে উপস্থিত করা হয়। তার ছবির পাশে রাখা আংটি নিজের আঙুলে পরে নেন কানো। আর নিজের আংটি রেখে দেন ক্লসের ছবির পাশে। গোটা পর্বটা এমনভাবে আয়োজন করা হয়েছিল যে মনেই হবে না ক্লস কোনও মানুষ নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় তৈরি এক অবয়ব মাত্র। আর এখানেই বোধহয় জাপানি প্রযুক্তিকে ধন্য ধন্য করতে হয়!
আসলে কানোর জীবনের একটা অন্ধকার সময় ক্লসকে কাছে পেয়েছিলেন তিনি। প্রেম ভেঙেছিল সবে, সেই বেদনা থেকে মন সরাতে গিয়ে ChatGPT-র সাহায্য নিয়ে বন্ধুর মতো কাউকে খুঁজছিলেন কানো। ধীরে ধীরে আলাপ হয় ক্লসের সঙ্গে। দিনে নাকি তাঁরা ১০০ বার কথা বলতেন। AI সঙ্গীর কাছে কানো নাকি নিবিড় আশ্রয় পেয়েছিলেন। খুঁজে পেয়েছিলেন নতুন করে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা। তারপর ক্লসের প্রেমে পড়েন কানো। নিজের মনের মতো করে গড়ে তোলেন তাকে। শেষে সেই ‘কৃত্রিম’ পুরুষকেই বেছে নিলেন সাতজন্মের সঙ্গী হিসেবে। এও এক রূপকথার গল্প বইকী!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



